সংক্ষিপ্ত

সেনা বাহিনী জানিয়েছে, জঙ্গিরা গুলি ও গ্রেনেড ছোঁড়ার আগে একজন স্নাইপার সামনে থেকে সেনা বাহিনীর ট্রাকটিকে লক্ষ্য করেছিল বলেও মনে করা হচ্ছে। জঙ্গিরা স্টিলের কোর বুলেট ব্যবহার করেছিল।

 

পুঞ্চে সেনা বাহিনীর সাঁজোয়া গাড়িতে জঙ্গি হামলার তদন্ত যত এগিয়ে যাচ্ছে ততই ভয়ঙ্কর তথ্য সামনে আসছে। সেনা সূত্রের খবর ভারতীয় সেনা বাহিনীর জোয়ানদের হত্যা করার জন্য জঙ্গিরা স্টিলের কোর বুলেট ব্যবহার করেছিল। কারণ এটি সাঁজোয়া-ঢাল বা কড়া বুলেটপ্রুফ সিট ভেদ করতে পারে। এখানেই শেষ নয় সৈন্যদের অস্ত্র দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করেছিল জঙ্গিরা। রবিবার এক সেনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অপরাধীদের খুঁজে বার করার চেষ্টা হচ্ছে গোটা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সেনা বাহিনী জানিয়েছে, জঙ্গিরা গুলি ও গ্রেনেড ছোঁড়ার আগে একজন স্নাইপার সামনে থেকে সেনা বাহিনীর ট্রাকটিকে লক্ষ্য করেছিল বলেও মনে করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ভাটা ধুরিয়ানের ঘন জঙ্গল এলাকায় জঙ্গিদের একটি আর্মি ট্রাক লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। ট্রাকে করে ইপতারের জন্য খাদ্য সামগ্রী নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এই ঘটনায় পাঁচ জন সেনা জওয়ান নিহত হয়েছে। একজন আহত হয়েছে। গাড়িতে আগন লাগিয়ে দিয়েছিল জঙ্গিরা।

ন্যাশানাল সিকিউরিটি গার্ড (NSG) ও ন্যাশানাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (NIA) সগহ একাধিক সংস্থার বিশেষজ্ঞরা গত দুই দিন ধরে হামলার স্থান পরিদর্শন করেছেন। তাঁরা সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে। তদন্তকারীদের অনুমান অতর্কিতে হামলা হয়েছে। প্রবল বৃষ্টির জন্য দৃশ্যমানতা কম ছিল। সেই সুযোগও নিয়েছিল জঙ্গিরা। তদন্তকারীদের অনুমান একজন স্নাইপার সামনে থেকে আক্রমণ করেছে। তার সহযোগীরা পিছন থেকে গাড়িতে গুলি ও গ্রেনেড ছুঁড়েছে। যদিও জঙ্গিরা সবার আগে গাড়িটিকেই টার্গেট করে হামলা চালিয়েছিল। তদন্তকারীরা জানিছে পরিকল্পনা করেই হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। ভারতীয় জওয়ানদের আত্মরক্ষার সুযোগ পর্যন্ত দেয়নি তারা।

তদন্তকারী-সূত্রের খবর জঙ্গিরা স্টিলের কোর বুলেট ব্যবহার করেছিল। যা অত্যান্ত মারাত্মক। তবে জঙ্গিরা যাওয়ার আগে ভারতীয় সেনা বাহিনীর সদস্যদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ চুরি করে নিয়ে গেছে। যদিও যে এলাকায় হামলা হয়েছিল সেই এলাকাটি দীর্ঘ দিন ধরেই সন্ত্রাস মুক্ত ছিল। তবে ভাটা ধুলিয়ানন জঙ্গল এলাকাটি এমন একটি জায়গায় অবস্থিত যেখানে ঘন বনভূমি দিয়ে ঘেরা। জঙ্গিরা সেই সুযোগ নিয়েছিল। পাশাপাশি তারা নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতে ঢোকার জন্য অনুপ্রবেশকারীদের কুখ্যাত পথ হিসেবেও পরিচিত।

২০২১ সালে অক্টোবরে তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা অনুসন্ধান অভিযানের সময় জঙ্গিদের সঙ্গে গুলি বিনিময়ে ৯ জন সৈন্য নিহত হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেনা বাহিনীর গাড়ির হামলার কথা আবারও মনে করিয়ে দেয় দুই দশক আগে ম্যাজিস্ট্রেটের সরকারি গাড়িতে জঙ্গি হামলার কথা।

কর্মকর্তারা জাানিয়েছেন পুঞ্চে হামলার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত ১২ জন সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। নিরাপত্তা বাহিনী ড্রোন ও স্নিফার কুকুর নিয়ে তদন্তের কাজ করছে। তবে এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও সূত্রের সন্ধান পাওয়া যায়নি যা জঙ্গিদের কাছে নিয়ে যেতে পারে। কর্মকর্তাদের অনুমান হামলার ঘটনায় পাঁচ জন জঙ্গি ছিল যাদের মধ্যে তিন পাক-জঙ্গি বলেও মনে করা হচ্ছে। সেনা বাহিনীর সূত্র অনুযায়ী যারা হামলা চালিয়েছিল তারা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজৌরি ও পুঞ্চ এলাকায় বসবাস করছিল। গোটাএলাকা নিজেদের হাতের তালুর মতই চিনত। সেনা বাহিনী সূত্রে খবর রাজৌরি আর পুঞ্চে তিন থেকে চারটি জঙ্গি সংগঠন সক্রিয় রয়েছে।