সংক্ষিপ্ত

  • মোদী সরকারের সমালোচনায় রঘুরাম রাজন
  • আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার জন্য সরকারেই দায়ী
  • নোটবাতিল, জিএসটি-র মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন রাজনের
     

বিরাট পরিমাণের আর্থিক ঘাটতিই ভারতের বৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার মূল কারণ। মোদী সরকারের আর্থিক নীতির সমালোচনা করে এমনই দাবি করলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। একই সঙ্গে নোটবাতিলের সিদ্ধান্ত এবং জিএসটি নিয়ে তাড়াহুড়ো করার দিকেও আঙুল তুলেছেন এই অর্থনীতিবিদ। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্মারক বক্তৃতায় হাজির হয়ে রাজন বলেন, সরকারের আর্থিক নীতি নিয়ে সামগ্রিকভাবে যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে, সেটিও আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। 

দেশের বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে দেশের অর্থনীতি। বৃদ্ধির হার কমতে কমতে গত ছ' বছরে সর্বনিম্ন পাঁচ শতাংশে নেমে এসেছে এপ্রিল- জুনের ত্রৈমাসিকে। খুব শিগগিরই বৃদ্ধির হারে গতি আসার সম্ভাবনাও কম। শুধু তাই নয়, গত অগস্ট মাসে উৎপাদনের সূচকও গত সাত বছরের মধ্যে সবথেকে কমে গিয়েছে। রঘুরাম রাজনের মতে, বৃদ্ধির নতুন উৎস খুঁজে বের করতে না পারাই ভারতীয় অর্থনীতির মূল সমস্যার কারণ। 

রাজন মনে করছেন, আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে যাওয়াটা ভারতীয় অর্থনীতির হাঁসফাঁস অবস্থার একটি উপসর্গ মাত্র, সেটিই একমাত্র কারণ নয়। বরং আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার জন্য ভুল পরিকল্পনা নিয়ে নোটবাতিলের সিদ্ধান্ত এবং জিএসটি প্রণয়নের ক্ষেত্রে ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর। কোনওরকম রাখঢাক না করেই রাজন বলেছেন, পর পর নোটবাতিল এবং জিএসটি চালু করার সিদ্ধান্ত ভারতীয় অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে। তাঁর মতে, এমন সময়ে এই দুই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, যখন ভারতীয় অর্থনীতি এমনিতেই বেশ দুর্বল অবস্থায় ছিল। 

রাজন মনে করছেন, মোদী সরকার বেশি করে জনমোহিনী প্রকল্পের দিকে জোর দেওয়াতেই আরও সমস্যা বেড়েছে। বরং আর্থিক বৃদ্ধির দিকেই কোনও নজর দেওয়া হয়নি। রাজন প্রশ্ন তুলেছেন, রাজস্ব আদায় যে সময়ে ধাক্কা খেয়েছিল, সেই সময় এমন জনমোহিনী প্রকল্প হাতে নেওয়ার কী প্রয়োজন ছিল? ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ নিয়েও মোদী সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছেন এই অর্থনীতিবিদ। নিজের সাম্প্রতিক ব্লগেও রাজন মোদী সরকারকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, 'কোনওরকম আত্মসমালোচনার পথে না হেঁটে সরকার একটি সাজানো সুখকর পরিবেশ দেখানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু সত্য়িটাকে  বেশি দিন চেপে রাখা যাবে না।'