সংক্ষিপ্ত
একদিকে রাহুল গান্ধী সাভারকার নিয়ে নিজের মন্তব্য অটুট রয়েছে। অন্যদিকে বিজেপি এই মন্তব্যের জন্য রাহুলের তীব্র সমালোচনা করেছে। এই অবস্থায় শিন্ডে গ্রুপের নেত্রী রাহুলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন।
বীর সভারকার নিয়ে রাহুল গান্ধীর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েক দিন ধরেই উত্তাল ছিল জাতীয় রাজনীতি। এবার রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে তাঁর মন্তব্যের জন্য এফআইআর দায়ের করা হয়। বৃহস্পতিবার থানে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০০, ৫০১ ধার অধীনে মামলা দায়ের হয়েছে কেন্গ্প নেতার বিরুদ্ধে।
বালাসাহেবঞ্চি শিবসেনা নেত্রী বন্দনা ডোংরে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি বলেছেন, ভারত জোড়ো যাত্রার সময় স্বাধীনতা সংগ্রামী ভিডি সাভারকারের বিরুদ্ধে অপমানজনক মন্তব্য করেছিলেন রাহুল গান্ধী। এজাতীয় মন্তব্য মেনে নেওয়া যায় না। আর সেই কারণে তিনি অভিযোগ দায়ের করছেন। একনাথ শিন্ডের দলের এই নেত্রী আরও বলেছেন, 'আমাদের মহান পুরুষের মানহানি কিছুতেই সহ্য করা যাবে না'। তার কথায় রাহুল গান্ধীর এজাতীয় মন্তব্য স্থানীয় নাগরিকদের অনুভূতিতে আঘাত করেছে। আর সেই কারণে তা ক্ষমারও অযোগ্য। তিনি বলেছেন মহারাষ্ট্রের মাটিতে দাঁড়িয়ে রাজ্যের মহান মানুষের অপনাম সহ্য করা হবে না।
অন্যদিকে রাহুল গান্ধীর মন্তব্যের প্রতিবাদে একনাথ শিন্ডের অনুহামী শিবসৈনিকরা থানাকেও বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। রাহুল গান্ধীর গ্রেফতারের দাবিতেও সরব হয়েছিল মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী কথা একনাথ শিন্ডের দলের নেতা নরেশ মাস্কে। তিনি মিছিল থেকেই রাহুল গান্ধীর গ্রেফতারের দাবি করেন। বলেন সাভারকারের মানহানির জন্য রাহুল গান্ধীকে গ্রেৎতার করা জরুরি। তাঁর এই মন্তব্যের পরই সন্ধ্যায় রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। এর আগে বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেছিলেন, বীর সাভারকার সম্পর্কে রাহুল গান্ধীর মন্তব্য অত্যান্ত দুঃখজনক। আর এই মন্তহ্যের জন্য রাহুল গান্ধীর প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ। সাভারকার দেশের গর্ব আর রাহুল গান্ধী তাঁকে প্রকাশ্যে অপমান করেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি আরও বলেন সাভারকারের প্রশংসা করেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। বিজেপি-র প্রশ্ন কে তাথলে ঠিক কথা বলেছেন রাহুল গান্ধী না ইন্দিরা গান্ধী? তিনি রাহুলকে কটাক্ষ করে বলেন গান্ধী পরিবারের সদস্যরা মনে করেন স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস তাদেরই এক চেটিয়া অধিকার বা আধিপত্য থাকবে। আর সেই কারণে রাহুলের এজাতীয় মন্তব্য।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাহুল গান্ধী নিজের বক্তব্যের সমর্থনে যুক্তি পেশ করেন। তাঁর হাতিয়ার একটি পুরনো চিঠি। রাহুল গান্ধীর দাবি চিঠিটি বীরসভাররাকের লেখা। তিনি চিঠিটি হাতে নিয়ে আরও একবার বলেন, 'এই বিষয়ে আমি খুব স্পষ্ট যে বীরসাভারকার ব্রিটিশদের সাহায্য করেছিলেন।' রাহুল গান্ধী সাভারকারের লেখা চিঠি দেখিয়ে সরাসরি আক্রমণ করেন মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবীশ ও মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেকে। দেবেন্দ্র ফড়নবিশের উদ্দেশ্যে রাহুল গান্ধী বলেন, বিজেপি নেতাকে এই চিঠিটি দেখতে তিনি আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। কারণ দেবেন্দ্র ফড়নবিশ রাহুলের উদ্দেশ্যে বলেছিবেন, তিনি জানতে চান কেন কংগ্রেস নেতা ব্রিটিদেশের বিরুদ্ধে আন্দোবন করে জেল খাটা সাভারকারকে অসম্মান করেছেন। তিনি আরও বলেছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামে সাভারাকারের ভূমিকা রীতিমত গুরুত্বপূর্ণ।
এদিন তার পাল্টা হিসেবে রাহুল গান্ধী বলেন, ব্রিটিশের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী সাভারকার নিজেই চিঠিটে সই করেছেন জেলে থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য। কিন্তু মহাত্মা গান্ধী, পণ্ডিত নেহেরু, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে বছের পর বছর জেল খেটেছেন। কিন্তু তাঁরা নিজেদের মুক্তির জন্য কোনও চিঠি লেখেননি। রাহুল গান্ধী আরও বলেন, 'আমি মনে করি সাভারকারজি ভয় পেয়েই এই চিঠিতে সই করেছিলেন।'
আরও পড়ুনঃ
শ্রদ্ধার 'খুনি প্রেমিক' আফতাবের নার্কো টেস্ট হবে, জানুন কী এই কঠিন পরীক্ষা
সাভারকার নিয়ে নিজের মন্তব্যে অটুট রাহুল গান্ধী, চিঠি নিয়ে বসলেন সাংবাদি বৈঠকে- দেখুন সেই ভিডিও