সংক্ষিপ্ত

মাত্র দুই দিনের মধ্যে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে জাপান-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি দিল উত্তর কোরিয়া। কিম জং উনের এই পদক্ষেপে রীতিমত উদ্বেগ দক্ষিণ কোরিয়ার।

আবারও হুংকার ছাড়লেন কিম জং উন। এবার জাপানের দিকে তাক করে ছুঁড়লেন ব্যালিস্টিক মিসাইল। মাত্র দুই দিনের মধ্যে এটি উত্তর কোরিয়ার দ্বিতীয় ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ। তেমনই জানিয়েছেন উত্তর কোরিয়া। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে জাপান।

সিওলের জায়েন্ট চিফস অব স্টাফ বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংের দিক থেকে পূর্ব-সাগর অর্থাৎ জাপান সাগর লক্ষ্য করে এই মিসাইল তাক করা হয়েছে। স্থানীয় সময় ১০টা ১৫ মিনিটে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ হয়। এটি একটি দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল বলেও জানিয়েছে তারা। মিসাইল সনাক্ত করেছে জাপান। দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তার পরিষদ শুক্রবার এই বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য একটি বৈঠকও করেছে। উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতির দফতরের কর্মকর্তারা।

অন্যদিকে জাপান এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে। প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন, এটি হোক্কাইডোর উত্তারঞ্চ এলাকার মধ্যে পড়েছিল। এই এলাকা দেশের একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল অর্থাৎ EEZ এর মধ্যে পড়ে। আর সেই কারণে জাপানের পক্ষ থেকে রীতিমত উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল। উৎক্ষেপণকে একদম অগ্রহণযোগ্য বলেও অভিহিত করেছে জাপান সরকার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখনও পর্যন্ত জাহাজ বা বিমানের কোনও ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে জাপাদ উত্তর কোরিয়ার এজাতীয় পদক্ষেপ বরদাস্ত করবে না। বলেও জানিয়ে দিয়েছে।

উত্তর কোরিয়া মাত্র একদিন আগেই একটি স্বল্প পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছিল। তারমাত্র একদিন পরেও এজাতীয় ভারী পাল্লার মিসাইল নিক্ষেপ করে। যদিও আগেই উত্তর কোরিয়ার বিদেশমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে তার বন্ধুদের প্রতি যদি কোনও রকম সমর্থন জানায় বা তাদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করে তাহলে পিয়ংইয়ং কঠোর সামরিক পদক্ষেপ নেবে।

মূলত ওয়াশিংটন পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত উত্তর কোরিয়ার চারপাশে নিজের ঘনিষ্ট দেশগুলির সঙ্গে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করতে চাইছে। আর সেই কারণে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া-সহ একাধিক দেশের সঙ্গে ক্রমশই সামরিক মহড়া বাড়াতে চাইছে। ইতিমধ্যেই তিনটি দেশ একসঙ্গে মহড়া দিয়েছে। যা মেনে নিতে চাইছে না উত্তর কোরিয়ার কিম জং উন। আর সেই কারণে একের পর এক মিসাইল উৎক্ষেপণ করে হুংকার ছাড়ছেন স্বৈরাচারী শাসক।

বিশেষজ্ঞদের মতে বৃহস্পতিবার ব্যাংককে এশিয়া-প্যসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন ফোরামের বৈঠক চিন ও জাপানের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিল উত্তর কোরিয়া। এই প্রথম এজাতীয় কোনও বৈঠকে উত্তর কোরিয়া অংশ নিল। কিন্তু এই বৈঠকের আলোচনায় রীতমত অসন্তুষ্ট ছিলেন কিম জং উন। আর সেই কারণে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করার জন্য কিং অত্যান্ত শক্তিশালী এই অস্ত্রের উৎক্ষেপণ করেন।

মিসাইল স্ট্র্যাটেজি ফোরামের ম্যানেজার হ্যান কওন হি বলেছেন, এখনও পর্যন্ত তাদের অনুমান এটি একটি আইসিবিএম। আর যদি তাই হয় তাহলে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর জাপানের কাছে স্পষ্ট বার্তা দেবে। এই মাসের শুরুতেই উত্তর কোরিয়া এজাতীয় মিসাইল উৎক্ষেপণ করেছিল।