সংক্ষিপ্ত
আবারও ব্রিটেনের মাটিতে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চড়া সুরে আক্রমণ করলেন রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন তিনি দেশকে অপমান করেননি। কিন্তু মোদী দেশের প্রতিটি মানুষকে অপমান করেছেন।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালের মন্তব্যের বিতর্কের পরেও নিজের অবস্থান অনড় থাকলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ব্রিটেনে সাংবাদিদের একটি অনুষ্ঠানে রাহুল গান্ধী আরও বলেছেন, ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামোগুলি নৃশংসভাবে আক্রমণের মধ্যে রয়েছে। বিরোধীরা দেশের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর বিরুদ্ধে লড়াই রয়েছে। প্রথমেই তিনি তাঁর ভারত জোড়ো যাত্রা নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন এই যাত্রাপথের মাধ্যমে তিনি ভারতের আত্মাকে খুঁজে পেয়েছেন। পাশাপাশি তিনি আরও বলেছেন দেশের অপমান হবে এমন কোনও মন্তব্য তিনি করেননি।
ব্রিটেনের মাটিতে দাঁড়িয়ে রাহুল ভারত জোড়ো যাত্রার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানান। তিনি বলেন, ভারত জোড়ো যাত্রার মাধ্যমে গোটা দেশকে তিনি এক ছাতার তলায় আনতে চেয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, বিজেপি রথ যাত্রা করেছিল। কিন্তু দুটি যাত্রার মধ্যে আদর্শগত ফারাক ছিল। তিনি বলেছেন ভারত জোড়ো যাত্রার উদ্দেশ্যই দেশে দেশের বেকারত্বের সমস্যা, আর্থিক সমস্যাগুলিকে পরখ করে দেখতে চেয়েছিলেন।
কথা প্রসঙ্গে বিবিসির তথ্যচিত্র নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। উত্তরে তিনি বলেন গত ৯ বছর ধরেই ভারতের গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোগুলি আক্রমণের মুখেঁ দাঁড়িয়ে রয়েছে। শুধু বিবিসি নয়, দেশের একাধিক সংবাদ মাধ্যমও আক্রমণের নিশানায় রয়েছে। বিরোধীদেরও আক্রমণ করা হচ্ছে। দেশের সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন দেশ কঠিন পরিস্থিতিতে রয়েছে। এর আগে আধুনিক ভারতে এমন ঘটনা কখনই ঘটেনি বলেও দাবি করেছেন তিনি।
রাহুল গান্ধী আবারও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে দেশের সবথেকে বেশি সম্পদ চলে যাচ্ছে দেশের গুটিকয়েক ধনপতিদের অধীনে। মিডিয়াও বিষয়টি নিয়ে চুপ করে রয়েছে। তবে ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের কথা বলতে গিয়ে আবারও কিছুটা হোঁচট খেলেন রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, কিছু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। অনেক রাজনৈতিক দলেরই বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ রয়েছে। বিরোধী দলগুলির সঙ্গে সমন্বয়ের চেষ্টা করা হচ্ছএ।
রাহুল গান্ধী আরও বলেছেন, মূল ধারনা যে আরএসএস ও বিজেপির-র সঙ্গে লড়াই করা দরকার। কিন্তু এই দুই শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করলে হারতে হবে - এমনটাই মনে গেঁথে গেছে বিরোধীদে। তবে এর সঙ্গে বাস্তবের কোনও সম্পর্ক নেই। তার জন্য প্রথম থেকেই কৌশল করতে হবে। তবে বিরোধীরা এখন সরকারের বিরুদ্ধে অনেক বেশি সক্রিয়। তবে তিনি বলেন ভারতের বিরোধীদের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে লড়াই করছে তারা দেশের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
রাহুল গান্ধী স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষণে দেশকে অপমান করেননি। তিনি আরও বলেন, বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে দেশকে তিনি অপমান করতেও চান না। পাশাপাশি তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদী বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে বলেছেন, গত ৭০ বছরে অর্থাৎ স্বাধীনতার পরে দেশে কোনও কাজ হয়নি। ১০ বছর ভারতে সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে। এই মন্তব্য করে তিনি দেশের প্রতিটি মানুষকে আক্রমণ করেছেন। রাহুল আরও বলেন, মোদীর এই মন্তব্য দেশের প্রতিটি মানুষের পূর্বপুরুষদেরও আক্রমণ করেছে। তিনি আরও বলেন কেন্দ্রীয় সরকার দেশের সম্পত্তি আদানিদের হাতে তুলে দিচ্ছে।