সংক্ষিপ্ত
সকাল ১০টা থেকে দেশজুড়ে শান্তিপূর্ণভাবেই ট্রেন অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। চলবে বিকেল ৪টে পর্যন্ত।
লখিমপুর কাণ্ডের (Lakhimpur Violence) প্রতিবাদে আজ দেশজুড়ে রেল রোকো (Rail Roko) কর্মসূচি পালন করা হবে। মন্ত্রীপুত্রের গ্রেফতারির পর এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের (Ajaya Mishra) ইস্তফার দাবিতে রেল রোকো অভিযানের ডাক দিয়েছে কৃষক সংগঠন। সকাল ১০টা থেকে দেশজুড়ে শান্তিপূর্ণভাবেই ট্রেন অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। চলবে বিকেল ৪টে পর্যন্ত।
কিষাণ মোর্চার তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সংশোধিত কৃষি আইন (Farm Law) প্রত্যাহারের দাবিতে দেশজুড়ে কৃষকরা প্রতিবাদ-আন্দোলন করছে। যে আন্দোলনটা শুধুমাত্র কৃষকের ন্যায় ও সুরক্ষার জন্য ছিল। কিন্তু, সেখানে মন্ত্রীর ছেলে ইচ্ছাকৃত ভাবে গাড়িয়ে চালিয়ে নিরীহ চাষিদের (Farmer) হত্যা করেছে। তার প্রতিবাদে ন্যায়-সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিক আন্দোলন চলতে থাকবে। এই আন্দোলনে কোনও প্রকার ক্ষয়ক্ষতি করা হবে না। সে রকম কোনও উদ্দেশ্যও নেই তাদের। শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করা হবে।
আরও পড়ুন- বাংলাদেশের দুর্গাপুজোয় হিংসা, আজ জেলায় জেলায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে বিজেপি
উল্লেখ্য, গত ৩ অক্টোবর উত্তর প্রদেশের লখিমপুরে একটি সভায় যাওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব মৌর্য্যের। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আসার খবর পেয়েই লখিমপুর খেরির কাছে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছিলেন কৃষকরা। এমন সময়ই একটি এসইউভি গাড়ি এসে পিছন থেকে আন্দোলনকারী কৃষকদের ধাক্কা মারে। এরপরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে ৪ জনের কৃষকের মৃত্যু হয়। ওই দিন ৪জন কৃষক সহ মোট ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অজয় মিশ্রের ছেলে আশিস মিশ্রের গাড়ির ধাক্কায় লখিমপুরে চার কৃষকের মৃত্যুর অভিযোগ নিয়ে উত্তাল জাতীয় রাজনীতি। ওই ঘটনায় ওই চার কৃষক-সহ মোট আট জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, গাড়ির ধাক্কার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আশিস মিশ্রকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেরার সময় সব প্রশ্নের উত্তর না দেওয়ায় ও তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে আন্দোলনকারী কৃষকদের দাবি, এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জড়িত থাকায় কোনওভাবেই সুবিচার সম্ভব নয়। তাই তাঁকে ইস্তফা দিতেই হবে।
আরও পড়ুন- মেলায় ফুচকা খাওয়াই কাল হয়েছে, বংশীহারীতে অসুস্থ প্রায় ২০ জন
এ প্রসঙ্গে কৃষক সংগঠনের তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, অজয় মিশ্র তাঁর মন্তব্যের মাধ্যমে হিন্দু ও শিখদের মধ্যে হিংসা, শত্রুতা তৈরির চেষ্টা করেছেন। কৃষকরা যখন শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ দেখাচ্ছিল, তখন ওঁর ছেলের গাড়িরই এসে তাঁদের চাপা দিয়েছে। পুলিশ সমন পাঠানোর পরও তিনি নিজের ছেলেকে বাঁচানোর ক্রমাগত চেষ্টা করে গিয়েছেন।
হাই কোর্টের এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে যোগী সরকার। এই পরিস্থিতিতে লখিমপুরের ঘটনা নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। তারপর আশিস মিশ্রকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু, তারপরও থেমে নেই কৃষকরা। এবার মন্ত্রীর ইস্তফার দাবিতে রেল রোকো কর্মসূচি পালন করলেন তাঁরা। কৃষকদের পাশাপাশি মন্ত্রীর ছেলের ইস্তফার দাবিকে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করেছিল কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল। এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত ও কেন্দ্রীয়মন্ত্রীর ইস্তফার দাবি জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে তাঁরা স্মারকলিপিও জমা দেন।