সংক্ষিপ্ত

দক্ষিণ রাজস্থানের গোতামেশ্বর মহাদেবের মন্দির। স্থানীয়ভাবে হরিদ্বার নামে বিখ্যাত। প্রতাপড় জেলায় অবস্থিত এই মন্দির।

 

পাপমুক্তির শংসাপত্র দেয় শুধুমাত্র রাজস্থানের একটি মন্দির। এই দেশে অসংখ্য নদী রয়েছে যেখানে ডুব দিলে পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বলে প্রচলিত ধারনা রয়েছে। কিন্তু কোথাও কোনও সার্টিফিকেট পাওয়া যায় না। শুধুমাত্র দক্ষিণ রাজস্থানের এই মন্দিরই পাপ মুক্তির সার্টিফিকেট বিলি করে, তাও আবার মাত্র ১২ টাকায়। তবে রাজস্থানের মন্দিরটি কোনও নদী সংলগ্ন এলাকায় নয়। মন্দির সংলগ্ন একটি কুণ্ড রয়েছে। সেখানেই ডুব দিলে পুন্য অর্জন হয় বলে প্রাচীন বিশ্বাস।

মন্দিরের অবস্থান

দক্ষিণ রাজস্থানের গোতামেশ্বর মহাদেবের মন্দির। স্থানীয়ভাবে হরিদ্বার নামে বিখ্যাত। প্রতাপড় জেলায় অবস্থিত এই মন্দির। রাজধানী জয়পুর থেকে মাত্র ৪৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

পাপ মুক্তির সার্টিফিকেট

স্থানীয়রা জানিয়েছেন কুণ্ডে ডুব দিলেই ধুয়ে যায় সব পাপ। আর সার্টিফিকেট জারি করে মন্দির ট্রাস্ট। রাজ্য সরকারের দেবস্থান বিভাগের অধীনে সেটি। তবে খুব বেশি মানুষ কিন্তু সেখান থেকে সার্টিফিকেট গ্রহণ করে না। এটাই অবাককাণ্ড।

মন্দাকিনী কুণ্ড

মন্দির সংলগ্ন মন্দাকিনী কুণ্ডে ডুব দিলেই পাপ ধুয়ে যায়। বছরে পাপ মুক্তির শংসাপত্র জারি করা হয় মাত্র ২০০-২৫০০টি। তবে কবে থেকে মন্দির পাপ মুক্তির সার্টিফিকেট বিলি করছে তা অবশ্য এখন আর স্পষ্ট করে জানা যায় না।

সার্টিফিকেট দেওয়ার শর্ত স্থানীয়ভাবে বলা হয়, একটা সময় যারা অনিচ্ছাকৃতভাবে একটি প্রাণী হত্যা করার পাপ কাজটি করেছে তাদের জাত বা সম্প্রদায়ের বয়কট করেছে তারাই এই কুণ্ডে ডুব দিয়ে পাপ মুক্ত হতে পারেন। তাদেরই সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। আর সার্টিফিকেটে লেখা থাকে কবে তারা পাপ কাজটি করেছে। আর বয়কট কবে থেকে প্রত্যাহার করা হবে।

শংসাপত্রে বিবৃতি

মন্দির থেকে যে শংসাপত্র বিলি করা হয় সেখানে লেখা হয়েছে, গ্রামের পঞ্চায়েতের জানা উচিৎ যে ব্যক্তি শ্রী গোতামেশ্বর জির মন্দাকিনী পাপ মোচিনী গঙ্গা কুণ্ডে স্নান করে প্রায়শ্চিত্ত করতে পারে। তাদের পাপ মুক্তির পরে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়েছে। দয়া করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সমাজে ফিরিয়ে নেওয়া হোক। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান জানিয়েছেন, পাপমোচিনী মন্দাকিনী কুণ্ডের কাছে একটি অফিস রয়েছে। সেখানেই রাজস্ব বিভাগের এক কর্মী মাত্র ১২ টাকার বিনিময় সার্টিফিকেট জারি করে থাকে।

প্রাচীন বিশ্বাস

স্থানীয়দের কথায় হিন্দু ঋষি মহর্ষি গৌতম গোহত্যার পরে এখান ডুব দিয়ে পাপ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। সেই ঐতিহ্য অনুসারে এখনও দৃঢ়় বিশ্বাস এই কুণ্ডে জল স্নান করলে পাপ ধুয়ে যায়। সাধারণত, পোকামাকড় বা অন্যান্য প্রাণী চাষের সময় আঘাত পায় বা মারা যায়, বা পাখির ডিম নষ্ট হয়ে যায় যা পাপ হিসাবে ধরে নেওয়া হয়।

মন্দিরের ইতিহাস

মন্দিরটি ভগবান শিবের। গজনির সুলতাম মমুগ মন্দিরটি আক্রমণ করেছিলেন। তিনি মন্দিরের শিবলিঙ্গটি ধ্বংস করার চেষ্টা করেছিলেন। সেই সময়ই মন্দির থেকে ঝাঁক ঝাঁক মৌমাছি বেরিয়ে আসে। আক্রমণ করে সুলতানের সেনা বহিনীকে। তারপর আবার মন্দিরটি পুনর্নিমাণ করেন। তবে মন্দিরে এখনও ভাঙাচোরা শিবলিঙ্গ পুজো করা হয়।

শাংসাপত্র বিলির প্রাচীন কারণ

মন্দিরের এক পুরোহিত জানিয়েছেন, প্রাচীন কালে এই মন্দিরে লোকজন কম আসত। এটি ছিল দুর্গম এলাকায়। তাই কোন কোন মানুষ ডুব দিয়ে পুন্য অর্জন করেছে তার প্রমাণ হিসেবে শংসাপত্র বিলি করা হয়েছিল।

আরও পড়ুনঃ

Israel - Palestine conflict: শিশুদের কবরস্থান গাজা, ইজরায়েলের হামলার বলি সাড়ে ৩ হাজার শিশু

'নোংরা প্রশ্ন করছেন ওঁরা', সংসদীয় এথিক্স কমিটি থেকে বেরিয়ে এসে বললেন মহুয়া

Badrinath Temple: বদ্রীনাথ মন্দিরে কেন শঙ্খ বাজানো হয় না, জেনে নিন এর রহস্যময় কাহিনী