সিনিয়র সাংবাদিক রাজদীপ সরদেশাই জানিয়েছেন, কীভাবে প্রোস্টেট ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ জেতার পর এই দিওয়ালি তাঁর জন্য সবচেয়ে বিশেষ। রোবোটিক সার্জারির পর তিনি জীবনকে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছেন। তিনি প্রত্যেককে একটি বিশেষ বার্তাও দিয়েছেন।
রাজদীপ সরদেশাইয়ের ক্যান্সার: প্রখ্যাত সাংবাদিক রাজদীপ সরদেশাইয়ের চার মাস আগে প্রোস্টেট ক্যান্সার ধরা পড়েছে। এই তথ্য তিনি নিজেই এক্স (X) প্ল্যাটফর্মে একটি পোস্টে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ৬০তম জন্মদিন পালনের কয়েক সপ্তাহ পরেই জুলাই মাসে তাঁর ক্যান্সার ধরা পড়ে, কিন্তু আগস্টে সফল রোবোটিক সার্জারির পর তিনি জীবনকে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে শিখেছেন। রাজদীপ জানান, একটি রুটিন মেডিকেল চেকআপ তাঁর দুনিয়া বদলে দিয়েছে। ডাক্তারের কাছ থেকে আসা একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ যেন সবকিছু ওলটপালট করে দেয়। 'আমার ক্যান্সার, কীভাবে?' এই প্রশ্নই তাঁর মনে ঘুরপাক খাচ্ছিল। তিনি তখন সাহস পান, যখন তাঁর ছেলে বলে, 'যদি ক্যান্সার হতেই হয়, তাহলে প্রোস্টেট ক্যান্সার হওয়া ভালো, কারণ এটি ধীরে ধীরে বাড়ে এবং পুরোপুরি সেরে যেতে পারে।'
সার্জারির পর নতুন আশা
রাজদীপ সরদেশাই দেশের সেরা ডাক্তারদের সঙ্গে পরামর্শ করেন এবং আগস্ট ২০২৫-এ দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালে রোবোটিক সার্জারি করান। সার্জারি সফল হয় এবং স্ক্যানে জানা যায় যে ক্যান্সার ছড়ায়নি। এখন তিনি অ্যাক্টিভ সার্ভিলেন্সে আছেন, কিন্তু জীবন নিয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি আগের চেয়ে অনেক বেশি কৃতজ্ঞ এবং ইতিবাচক।
পরিবার ও টিমের সমর্থন
রাজদীপ তাঁর চিকিৎসায় সাহায্যকারী টিম ডঃ অংশুমান আগরওয়াল, ডঃ জসবিন্দর পেন্টাল, ডঃ গোপাল শর্মা, তাঁর পরিবার এবং বন্ধুদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'কোনও ওষুধই সেই শান্তির জায়গা নিতে পারে না যা নিজের বাড়ির ভালোবাসা এবং সমর্থন থেকে পাওয়া যায়।' তিনি জানান, কীভাবে তাঁর স্ত্রী প্রতিদিনের খাবার পর্যবেক্ষণ করেছেন, ছেলে প্রতিটি মেডিকেল পদক্ষেপে গাইড করেছে, মেয়ে এবং জামাই ছুটি নিয়ে তাঁর কাছে থেকেছে এবং বন্ধুরা প্রতিটি কঠিন সময়ে পাশে থেকেছে। তিনি বলেন, 'প্রত্যেক মানুষের এমন একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থাকা উচিত, যা বিচার করে না, শুধু সাহস জোগায়।'
দিওয়ালিতে বিশেষ আবেদন ও বার্তা
রাজদীপ দেশের সকল মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবার আবেদন জানিয়ে বলেন, 'ভারতে লক্ষ লক্ষ মানুষ ক্যান্সার পরীক্ষা এবং চিকিৎসার সুবিধা পান না। যদি আমরা পরিবর্তন আনতে চাই, তাহলে পাবলিক হেলথ সিস্টেমে বিনিয়োগ, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ এবং উন্নত সুবিধা প্রয়োজন।' এই দিওয়ালিতে তিনি সবাইকে CanSupport.org-এর মতো সংস্থাকে দান করার আবেদন জানান, যাতে অন্য কারও দিওয়ালিও আলোকিত হতে পারে। তিনি বলেন, 'জীবন সবসময় সহজ হয় না, কিন্তু তা যাপন করার সুযোগ পাওয়াই সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ।'


