সংক্ষিপ্ত
RPF কর্মীদের বক্তব্য ছিল যে, ট্র্যাকের নীচে কয়েকশ ইঁদুর বাস করে, তার মধ্যে কয়েকটা যদি ট্রেনের ভেতর ঢুকেও যায়, তাতে কী হয়েছে? প্যান্ট্রি ম্যানেজার বলেছেন, ‘প্যান্ট্রির ভেতরে অসংখ্য ইঁদুর রয়েছে। আমরা কী করতে পারি? রেলওয়ে খুব নিম্নমানের কোচ দেয়।’
দীর্ঘদিন ধরেই ভারতীয় রেলওয়ের খাবারদাবার সম্পর্কে যাত্রীদের অসন্তুষ্টি এক নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে উঠেছে। খাবারের গুনগত মান নিয়ে যাত্রীদের ক্ষোভ তো আছেই, তার পাশাপাশি খাবারের মধ্যে অস্বাস্থ্যকর বস্তুর উপস্থিতির সমস্যাও প্রায়শই দেখা যায়। একটি সাম্প্রতিক ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যা দেখে একেবারে গা ঘিনঘিন করে উঠতে পারে নেটিজেনদের।
এটি কেবলমাত্র খাদ্যের গুণমানে ত্রুটির বিষয় নয়, বরং একটি চরম অস্বস্তিকর কাণ্ডও বটে। একটি ট্রেনের রান্নাঘর, অর্থাৎ প্যান্ট্রির ভিতরে অবাধে বেড়ে উঠেছে ইঁদুরের রাজত্ব! ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মানুষের খাবার-দাবার যেখানে রান্না হচ্ছে, শাক-সবজি কেটে রাখা হয়েছে, সেখানেই সদর্পে হাঁটছে-চলছে এবং বিনা বাধায় সব খাবার-দাবার খেয়ে ফেলছে ছোট ছোট ইঁদুর! প্রচন্ড উদ্বেগের এই ঘটনা প্রমাণস্বরূপ একটি ভিডিওতে রেকর্ড করে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন এক ব্যক্তি।
ভিডিওটি @mangirish_tendulkar নামের একজন ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী নিজের অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছেন, যিনি নিজের পরিবারের সঙ্গে 11099 LTT MAO এক্সপ্রেসে চড়ে ১৫ অক্টোবর রেলসফর করছিলেন। সেই যাত্রার সময় তাঁরা ট্রেনের প্যান্ট্রি কারের মধ্যে ইঁদুরদের অবাধ বিচরণ দেখতে পেয়েছিলেন। মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ওই যাত্রী এই বিরক্তিকর দৃশ্য রেকর্ড করেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন।
নিজের পোস্টে তিনি প্রচণ্ড হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং লিখেছেন, ‘রেলের একজন উৎসাহী এবং ঘন ঘন ভ্রমণকারী হিসাবে, এই ঘটনাটি আমাকে গভীরভাবে অস্থির করে তুলেছে। ১৫ অক্টোবর, আমি 11099 মাদগাঁও এক্সপ্রেসটিতে ছিলাম, যেটা ১টা বেজে ৪৫ মিনিটে ছাড়ার কথা ছিল, কিন্তু প্রায় ৩টে বেজে ৩০ মিনিট পর্যন্ত এটা ছাড়তে দেরি করেছে। রেলের প্রতি আমার আবেগের কারণে, আমি ট্রেনের ইঞ্জিন কাপলিং নথিভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিই এবং পেছনের দিকে হাঁটা শুরু করি। ঠিক তখনই আমি এই চমকপ্রদ আবিষ্কারটি করে ফেলেছি। আমি অন্তত ৬-৭টা ইঁদুর দেখতে পেয়েছি প্যান্ট্রি কারের মধ্যে, যদিও আমি তাদের মধ্যে মাত্র ৪টের ফুটেজ (ভিডিও) ক্যাপচার করতে পেরেছি।’
ওই যাত্রী এই সমস্যাটির কথা রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স (RPF) এর কাছে রিপোর্ট করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাঁদের প্রতিক্রিয়া খুবই হতাশাজনক ছিল। RPF কর্মীদের বক্তব্য ছিল যে, ট্র্যাকের নীচে কয়েকশ ইঁদুর বাস করে, তার মধ্যে কয়েকটা যদি ট্রেনের ভেতর ঢুকেও যায়, তাতে কী হয়েছে? এরপর সমস্যাটি সমাধানের জন্য ওই যাত্রী তখন সহকারী স্টেশন মাস্টার মীনার কাছে যান, যিনি প্যান্ট্রি ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্যান্ট্রি ম্যানেজারের প্রতিক্রিয়াও একইরকম হতাশাজনক ছিল, কারণ তিনি মন্তব্য করেছেন, ‘আসলে প্যান্ট্রির ভেতরে অসংখ্য ইঁদুর রয়েছে। আমরা এটার জন্য কী করতে পারি? রেলওয়ে বারবারই আমাদের খুব নিম্নমানের কোচ সরবরাহ করে।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সমস্যার কথা জানতে পেরে এর প্রতিক্রিয়া দিয়ে IRCTC লিখেছে, "বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয়েছে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্যান্ট্রি কারের কর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি এবং পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্যান্ট্রি কারে কার্যকর কীটপতঙ্গ ও ইঁদুর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের যথাযথভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং এটা নিশ্চিত করা হচ্ছে।"