সংক্ষিপ্ত

সম্প্রতি ভারতীয় মুসলিম মহিলা আন্দোলন পরিষদ থেকে সারা দেশ্বব্যাপী এক সমীক্ষা করা হয়। এই সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে যে বহুবিবাহে থাকা মহিলারা যে মানসিক পীড়ার মধ্যে দিয়ে যান তা অবর্ণনীয়।

ভারতের সিভিল আইন এক এক ধর্মের জন্য এক এক রকম। অর্থাৎ একজন হিন্দু দুটি বিয়ে করলে ভারতীয় আইন অনুযায়ী তিনি শাস্তির যোগ্য কিন্তু একজন মুসলিম দুটি বিয়ে করলে তিনি আইন অনুসারে দোষী নন অর্থাৎ তার কোনো শাস্তি হবে না। এই দুরকম সিভিল আইন থাকার কারণে শাসন ব্যবস্থা চালাতে গিয়ে বেশ মুসকইলেই পড়তে হচ্ছিলো আদালত গুলিকে। তাই নতুন সিভিল আইন প্রণয়নের কথা ভাবে পার্লামেন্ট। সংসদে প্রস্তাবিত হয় যে ভারতের সিভিল আইন জাতি, ধর্ম ,নির্বিশেষে সকলের জন্য সমান করতে হবে। সম্প্রতি এক সমীক্ষা আরও একবার সিভিল আইন এক করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলো দেশবাসীকে।

সম্প্রতি ভারতীয় মুসলিম মহিলা আন্দোলন পরিষদ থেকে সারা দেশ্বব্যাপী এক সমীক্ষা করা হয়। এই সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে যে বহুবিবাহে থাকা মহিলারা যে মানসিক পীড়ার মধ্যে দিয়ে যান তা অবর্ণনীয়। প্রধানত ৩০০ জন মহিলার উপর করা হয়েছিল এই গবেষণা। যার মধ্যে ৮৪ শতাংশ মহিলাই বলেন যে বহুবিবাহকে নিষিদ্ধ করা উচিত। যারা এই সমীক্ষা করছিলেন তারা অনেকেই বলেন যে তাদের স্বামী অন্য কাউকে বিয়ে করলে তাদের মনে হয় যে তাদের স্বামী তাদের সঙ্গে বিস্বাসঘাতকতা করেছে। এমনকি স্বামীর দ্বিতীয় বিবাহের পর তাদের মনে হয় যে তারা কোথাও আত্মসম্মান হারিয়ে ফেললেন। তাদের কোথাও মর্যাদা ক্ষুন্ন হলো। কিন্তু শুধুমাত্র অর্থনৈতিকভাবে তারা স্বামীর উপর নির্ভরশীল হওয়ার কারণে তারা নিজেদের মানসিক অবস্থার কথা , কষ্টের কথা পেওকাশ করতে পারেন না।দীর্ঘদিন তারা নিজেরাই নিজেদের মধ্যে গুমরে মরেন।

ভারতীয় মুসলিম মহিলা আন্দোলন পরিষদের এই সমীক্ষাটি শুরু হয়েছিল ২০১৭ সাল থেকে। এই সংস্থাটি ২০০৭ সাল থেকেই মুসলিম পারিবারিক আইন সংস্কারের উপর কাজ করছেন ভারতে। তাদের এই নয়া রিপোর্ট ভারতবর্ষের সামাজিক উন্নয়নে কতটা পরিপন্থী হবে বা নারী অধিকার বা নারী সুরক্ষায় কি নজির গড়বে এখন সেটাই দেখার।

এই গবেষণাটির নাম দেওয়া হয় 'বহুবিবাহে নারীর অবস্থা এবং তাদের প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষা'এটি লিখেছেন নুরজেহান সাফিয়া নিয়াজ এবং বিএমএমএর জাকিয়া সোমন। বহুবিবাহ করেছেন এমন ৫০ জন মহিলাকে ২৮৯ টি রান্ডাম প্রশ্ন করে এই গবেষণার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা, তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং দিল্লিতে বহুবিবাহে নারীদের থেকে উত্তর সংগ্রহ করা হয়। তারপর তাদের মতামত বিশ্লেষণ করেই এই রিপোর্ট তৈরী করা হয়।

সমীক্ষায় আরও জানা গেছে যে অনেক মহিলাই তাদের স্বামীর দ্বিতীয় বিবাহ সম্পর্কে বন্ধু বা প্রতিবেশীদের মাধ্যমে জানতে পেরেছে ন, কিন্তু তারা এখনও তাদের স্বামীর সঙ্গে এক ছাদের নীচে থাকেন শুধুমাত্র সন্তানদের স্বার্থে। কিছু সাক্ষাত্কারকারী জানান যে তারা খবর পাওয়া মাত্রই তাদের পিতামাতার বাড়িতে চলে গেছিলেন।