সংক্ষিপ্ত

স্বাধীন ভারতবর্ষে ১৯৫০ সাল থেকে  ২৬ জানুয়ারি তারিখকেই পালন করা শুরু হয় প্রজাতন্ত্র দিবস (Republic Day)।  চলুন ফিরে দেখা যাক, এই দিনটিকেই কেন বেছে নেওয়া হয়েছে এবং কী কারণে বেছে নেওয়া হয়েছে।

 

স্বাধীন ভারতবর্ষে ১৯৫০ সাল থেকে পালন করা শুরু হয় প্রজাতন্ত্র দিবস (Republic Day)। সেই থেকে এখনও ২৬ জানুয়ারির দিনটায় সাড়ম্বরে পালন করা হয় ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস। কিন্তু এখানেই উঠে আসে প্রশ্ন। দেখতে দেখতে এবার দোরগড়ায় প্রজাতন্ত্র দিবস। কোভিড পরিস্থিতি হলে একটা সাজোসাজো রব সারা দেশে। চলুন তারই মাঝেই ফিরে দেখা যাক, এই দিনটিকেই কেন বেছে নেওয়া হয়েছে এবং কী কারণে বেছে নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট স্বাধীন হয় ভারত। কিন্তু এদিনটি ভারতীয়রা বেছে নেননি। লর্ড মাউন্ট ব্যাটন ১৫ অগাস্ট দিনটিকে বেছে নিয়ে ভারতকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন।দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর এই একইদিনেই জাপান মিত্রশক্তির কাছে হার মানে। তাই ১৫ অগাস্ট দিনটিকে বেছে নেন ব্রিটিশ সরকার। তবে ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট দেশ স্বাধীন হলেও তখন ভারতের নিজস্ব কোনও সংবিধান ছিল না। ১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর স্বাধীন ভারতের সংবিধান রচিত হয়। সেইসময় ভারতের সংবিধান রচয়িতারাই সিদ্ধান্ত নেন যে, স্বাধীনভারতের প্রজাতন্ত্র হয়ে ওঠা কোনও একটি বিশেষ দিনে পালন করা উচিত। এরপরেই ২৬ জানুয়ারি দিনটিকে বেছে নেওয়া হয়।এরপর ১৯৫০ সাল থেকে পালন করা শুরু হয় প্রজাতন্ত্র দিবস।এবার প্রশ্ন উঠে আসে, কেন ২৬ জানুয়ারি তারিখকেই প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯২৯ সালের বছরের শেষে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেড়ুর নের্তৃত্বে পূর্ণ স্বরাজ আনার শপথ ঘোষণার পর ১৯৩০ সাল থেকে ২৬ জানুয়ারিকেই স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে বিট্রিশ শাসক ভেঙে ভারতে স্বাধীনতা আসে ১৫ অগাস্টে। তাই বদলে যায় ২৬ জানুয়ারির গুরুত্ব। 

আরও পড়ুন, Republic Day Parade: কোভিডে দর্শক কমলেও কুচকাওয়াজ দেখার আমন্ত্রণ অটোচালক-শ্রমিকদের

অপরদিকে, ১৯৪৭ সালের ২৮ অগাস্ট ভারতের একটি স্থায়ী সংবিধান রচনার জন্য ড্রাফটিং কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন বিআর আম্বেদকর।১৯৪৭ সালের ৪ নভেম্বর একটি খসড়া সংবিধান প্রস্তুত করে গণপরিষদে জমা দেয়। চূড়ান্ত সংবিধান গৃহীত হওয়ার আগে ২ বছর ১১ মাস ১৮ দিন ধরে গণপরিষদ এই খসড়া সংবিধান আলোচনার জন্য ১৬৬ বার অধিবেশন ডাকে। এই সকল অধিবেশনে জনসাধারণের প্রবেশের অধিকার ছিল। ১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর স্বাধীন ভারতের সংবিধান গৃহীত হয়। এরপরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারীর ওই দিনকে সম্মান জানিয়ে ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতের সংবিধান কার্যকর হবে। এবং সেদিন থেকে প্রজাতান্ত্রিক ভারতবর্ষ পরিচিতি পাবে। অবশেষে বহু বিতর্ক পেরিয়ে একাধিক সংশোধনের পর ২৪ জানুয়ারি ১৯৫০ সালের ৩০৮ জন সদস্য চূড়ান্ত সংবিধানের হাতে লেখা দুটি নথিতে স্বাক্ষর করেন। এরপর দেশব্যাপী সংবিধান কার্যকর হতেই  ২৬ জানুয়ারিতেই প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করা হয়।

প্রসঙ্গত, কোভিড পরিস্থিতিতে স্বাধীনতার ৭৫ বছরের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে দর্শকের সংখ্যায় কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। ওই দিন দেশের সামরিক শক্তি এবং সাংস্কৃতিক প্রদর্শনীর জন্য উপস্থিত থাকবেন ৫,০০০ থেকে ৮,০০০ জন। এবিষয়ে এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এটি চূড়ান্ত সংখ্যা এখনও নির্ধারিত না হলেও এর বেশি হবে না। কোভিডের ডবল ডোজ যেসকল প্রাপ্তবয়স্করা পেয়ছেন তারই ভিতরে ঢোকার অনুমতি পাবেন। ১৫ বছরের ঊর্ধ্ব বয়সী কিশোর-কিশোরীদের ক্ষেত্রে কোবিডের একটি করে ডোজ থাকলেই মিলবে  প্রবেশের অনুমতি। যদিও ২০২০ সালের আগে অর্থাৎ কোভিড শুরু হওয়ার আগে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ দেখতে  অন্তত ১ লক্ষ ২৫ হাজার মানুষ তিরঙ্গা নিয়ে ভিড় জমাত। একুশ সালের ২৬ জানুয়ারী কুচকাওয়াজে ২৫,০০০ দর্শক উপস্থিত হয়। তবে চলতি বছরে দর্শকদের দেখার সুবিধার্থে রাজপথের উভয়দিকেই  মোট ১০ টি বড় এলইডি স্ক্রিন লাগানো হবে। বাইশের প্রজাতন্ত্র দিবসে কুচকাওয়াজ এবং বিটিং রিট্রিট অনুষ্ঠানে, অটোরিকশা চালক,  সাফাই কর্মী এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে সরকার।