কোভিড-১৯: ভারতে আবার বাড়ছে করোনা, নতুন লক্ষণে ছড়াচ্ছে বেশি আতঙ্ক
বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে তুলেছিল করোনা মহামারী। আবার কি সেই দুঃস্বপ্ন ফিরছে? নতুন করে বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণের ঘটনা চিন্তার ভাঁজ ফেলছে স্বাস্থ্যকর্তাদের কপালে।

সম্প্রতি দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভাইরাসটি আবারও প্রকোপ দেখাচ্ছে। নতুন সংক্রমণের বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এবং চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা সতর্ক হয়েছেন।
পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি (NIV) সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, করোনার বৃদ্ধির জন্য ওমিক্রনের চারটি নতুন উপ-প্রকারভেদ (Subvariants) দায়ী বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে NIV যে ভ্যারিয়েন্টগুলি শনাক্ত করেছে সেগুলি হল: LF.7, XFG, JN.1.16, NB.1.8.1। প্রাথমিকভাবে JN.1.16 এর কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলেও, মে মাস থেকে XFG এর প্রভাব বেশি দেখা যাচ্ছে।
LF.7 এবং LP.81.2 নামক দুটি উপ-প্রকারভেদ একত্রিত হয়ে XFG তৈরি হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। ভাইরাসের ক্রমাগত পরিবর্তনই এর কারণ বলে তারা মনে করছেন।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, বর্তমানে মোট ৬৪৮৩ টি সক্রিয় সংক্রমণ রয়েছে। ১ জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত ১১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। কেরালা, গুজরাট, কর্ণাটক, দিল্লিতে সংক্রমণ বেশি। তবে এবার সংক্রমণের তীব্রতা কম।
বেশিরভাগ রোগীই হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।ভারতে নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলি নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই আমেরিকায় নিম্বাস (Nimbus) নামক একটি ভ্যারিয়েন্ট ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। এই ভ্যারিয়েন্টের বৈজ্ঞানিক নাম NB.1.8.1।
গত বছরই এটি প্রথম চিনে আবিষ্কৃত হয়েছিল। বর্তমানে আমেরিকায় ৩৭ শতাংশ সংক্রমণ এই ভ্যারিয়েন্টের কারণে হচ্ছে। এর বিস্তার খুব দ্রুত হচ্ছে।নিম্বাস ভ্যারিয়েন্টের প্রধান লক্ষণ হিসেবে ‘রেজার ব্লেড থ্রোট’ দেখা যাচ্ছে। অর্থাৎ গলায় ছুরি কাটা অনুভূতি হচ্ছে।
এটি অনেক রোগীর জন্য অস্বস্তিকর। আমেরিকা ছাড়াও ইউকে, ভারতেও এই লক্ষণ সহ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। গিলে ফেলার সময় গলায় ব্লেড কাটা অনুভূতি হয়।
এছাড়াও শুকনো কাশি, উচ্চ জ্বর, শ্বাসকষ্ট, মতিভ্রম, ঘুম ঘুম ভাব, মাংসপেশীর ব্যথা, ডায়রিয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুসারে, বর্তমানে এটি তীব্র বিপদ না হলেও সতর্ক থাকতে হবে। বর্তমান টিকা দিয়েই এই ভ্যারিয়েন্টের মোকাবেলা করা যাবে বলে তারা জানিয়েছে।
তবে এই ভ্যারিয়েন্ট অ্যান্টিবডিগুলিকে বাইপাস করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।বিশেষজ্ঞদের মতে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট অনেক পরিবর্তনের মাধ্যমে নিম্বাস ভ্যারিয়েন্টে রূপান্তরিত হয়েছে। এই পরিবর্তনের কারণেই এটি দ্রুত ছড়াচ্ছে। যাদের অ্যান্টিবডি আছে তাদেরও আক্রান্ত করছে।
বর্তমানে সংক্রমণের তীব্রতা কম হলেও সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। মাস্ক পরা, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা জরুরি। সরকারি নির্দেশনা মেনে চলা এবং লক্ষণ দেখা দিলে তাড়াতাড়ি পরীক্ষা করানো উচিত।

