সংক্ষিপ্ত
পুলিশ জানিয়েছেন গত ৯ ডিসেম্বরে বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল দিল্লির রোহিনী আদালত। এই ঘটনায় আহত হয়েছিল পুলিশের এক সদস্যও। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ গ্রেফতার করেছে ডিআরডিও-র বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মরত ভারত ভূষণ কাটারিয়াকে।
প্রতিবেশী আইনজীবীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ। হাতে হাতকড়া পড়ল প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীর। তেমনই জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ (Delhi Police)। দিন কয়েক আগে তীব্র বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল দিল্লির রোহিনী আদালত (Rohini Court)। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে রীতিমত মাথায় হাত পড়েছে পুলিশের। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, কৌটো বোমা থেকেই রোহিনী আদালতের বিস্ফোরণ। আদালতের এক আইনজীবীকে হত্যার উদ্দেশ্যই এই বিস্ফোরণ করা হয়েছিল। আর এই ঘটনার মূল চক্রী হল ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট বা প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থায় (DRDO) কর্মরত এক বিজ্ঞানীর।
পুলিশ জানিয়েছেন গত ৯ ডিসেম্বরে বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল দিল্লির রোহিনী আদালত। এই ঘটনায় আহত হয়েছিল পুলিশের এক সদস্যও। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ গ্রেফতার করেছে ডিআরডিও-র বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মরত ভারত ভূষণ কাটারিয়াকে। পুলিশ সূত্রের খবর আইনজীবী অমিত বশিষ্ঠকে হত্যা করার জন্যই আদালতের ভিতরে কৌটোবোমা লাগিয়েছিল অভিযুক্ত বিজ্ঞানী। সেইদিন আইনজীবী অমিত বশিষ্ঠর একটি মামলার সওয়ালের জন্য রোহিনী আদালতে আসার কথা ছিল। সেইমত পরিকল্পনা করেও বোমা ফিট করা হয়েছিল।
আইনজীবী অমিত বশিষ্ঠর সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরেই বিবাদ চলছি ডিআরডিও-র বিজ্ঞানী ভারত ভূষণের। আইনজীবী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাতটি মামলা করেছিলেন। যারমধ্যে ভূষণের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করা হয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরেই আইনি লড়াই চলছিল।এছাড়াই আইনজীবী অমিত বশিষ্ঠ ভারত ভূষণের বিরুদ্ধে একটি সতর্কতার অভিযোগও দায়ের করেছিলেন।
পুলিশ সূত্রের খবর অভিযুক্ত আইনজীবীর সঙ্গে মামলা মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়েছিল। মামলার জাল ছিঁড়ে বেরিয়ে আসতে আইনজীবীকে হত্যা করার চক্রন্ত করেছিল। নিজেই একটি বোমা তৈরি করে ১০২ নম্বর কোর্টরুমে রেখেছিল। সূত্রের খবর জেরায় বিজ্ঞানী স্বীকার করে নিয়েছেন আইনজীবীকে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই অভিযুক্ত কোর্টরুমে আইইডি রেখেছিল।
বিজ্ঞানীকে গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ। স্পেশাল সেলের নর্দান রেঞ্জের দুটি বিশেষ ইউনিটের সাহায্য দিল্লি পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছিল। দিল্লির পুলিশ কমিশনার রাকেশ আস্থানা জানিয়েছেন যেহেতু রোহিনী আদালতের কোর্টরুমে শ্যুটআউটের পরেই বিস্ফোরণ হয়েছিল তাই ঘটনার তদন্তে নেমে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়েছিল। ঘটনার তদন্তের জন্য কোর্টরুমে আসা সমস্ত গাড়ি ও গাড়ির নম্বর প্লেট ধরে তদন্ত শুরু করা হয়েছিল। প্রায় এক হাজার গাড়ির গতিবিধি খতিয়ে দেখা হয়েছে। এছড়াও প্রায় ১০০টি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়েছিল। সন্দেহজনকদের গতিবিধি চিহ্নিত করার জন্য আদালতের আসপাশের সিসিটিভি ফুটেজগুলির ওপরেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও জেরা করা হয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দাদেরও। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে প্রায় এক হাজার ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়েছে।
সবশেষে পুলিশ জানিয়েছে একটি ল্যাপটপ ব্যাগে করে বোমা আদালতে নিয়ে আসা হয়েছিল। সেটি শনাক্ত করার পরই তদন্তের মোড় ঘুরে যায়। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যাগে একটি বিশেষ লোগো ছিল। সেটি মুম্বইয়ে একটি সংস্থার তৈরি। দিল্লিতে ব্যাগ সংস্থার একটা গোডাউন রয়েছে। ব্যাগটি তৈরি করা হয়েছিল ২০০৬ সালে। সংস্থাটি এখনও রয়েছে। সেই ব্যাগের খরিদদারকে ট্র্যাক করা হয়েছিল। তারপরই আসল অভিযুক্তের কাছে পৌঁছে ছিল দিল্লি পুলিশ।
দিল্লি পুলিশ আরও জানিয়েছে, বিস্ফোরকটি তৈরি হয়েছিল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ব্যবহার করে। পুলিশ জানিয়েছে এই উপাদন সহজে পাওয়া যায় না। পুলিশ আরও জানিয়েছে, শুধুমাত্র ডিটোনেটরটি বিস্ফোরণ হয়েছিল। বিস্ফোরকরটি ফাটেনি বলেও রক্ষা পেয়েছে অনেকে। সেটি ফাটলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকত বলেও মনে করেছিল পুলিশ। ভারত ভূষণ কাটারিয়ার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বোমা তৈরির সরঞ্জাম। পুলিশ আরও জানিয়েছে অভিযুক্ত একটি ইকমার্স সংস্থা থেকে বিস্ফোরণে ব্যবহার করা অন্যান্য সামগ্রী ও রিমোটটি কিনেছিল। বিজ্ঞানী বিস্ফোরক কোথা থেকে জোগাড় করেছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Revenge of Monkeys: বানরের প্রতিশোধে আতঙ্কিত গ্রাম, একে একে হত্যা ২৫০ কুকুর ছানা
Agni Prime Missile: অগ্নি-প্রাইমের সফল উৎক্ষেপণ, জেনে নিন এই ক্ষেপণাস্ত্রের বৈশিষ্ঠ্যগুলি
Laughing Ban: ১০ দিনের জন্য 'হাসতে মানা', উত্তর কোরিয়ায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি