সংক্ষিপ্ত

২০২৪-এর আগেই বাংলায় ব্যাপকভাবে সংগঠন ছড়িয়ে দিতে চাইছে আরএসএস (RSS)। তারই ভিত তৈরিত এখন বাংলায় মোহন ভাগবত (Mohan Bhagwat)। 
 

অন্য সব জায়গা ছেড়ে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস (RSS) এখন পাখির চোখ করেছে পশ্চিমবঙ্গকে (West Bengal)। বাংলায় বিরাট করে শাখা প্রশাখা বিস্তার করার পরিকল্পনা করেছে তারা। সময় সীমা ২০২৪ সালে, অর্থাৎ ২ বছর। এই ২ বছরের মধ্যেই বাংলাকে প্রায় আরএসএস ঘাঁটিতে বদলে ফেলার পরিকল্পনা নিয়েছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটি।  গত অক্টোবর মাসে কর্ণাটকের ধারওয়াড়ে (Dharwad, Karnataka) অনুষ্ঠিত আরএসএস-এর গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক বৈঠকেই এর ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করা হয়েছে।

আরএসএস-এর প্রথম লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গে ধারে ও ভারে সংগঠনকে যথা সম্ভব বাড়ানো। পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের মোট ১,৯০০ টি শাখা রয়েছে। আগামী ২ বছরে আসও অন্তত ৭০০ নতুন শাখা যোগ করার লক্ষ্য নিয়েছে সংঘ। আর তারই প্রাথমিক ধাঁচা তৈরি করতে, বর্তমানে দুই দিনের সফরে পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন সর সংঘ চালক মোহন ভাগবত (Mohan Bhagwat)। দক্ষিণবঙ্গের আরএসএসের এক কার্যকর্তা জানিয়েছেন, সংঘ তাদের শাখাগুলিকে গ্রামাঞ্চলে মন্ডল স্তরে এবং শহরাঞ্চলে ওয়ার্ড স্তরে উন্নীত করতে চাইছে। বর্তমানে, মন্ডল এবং ওয়ার্ডে প্রায় ৩০ শতাংশ উপস্থিতি রয়েছে।

আরও পড়ুন - Mohan Bhagwat-পূর্ব ভারতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করতে কলকাতায় মোহন ভাগবত

আরও পড়ুন - Mohan Bhagwat: ভারতে হিন্দু মুসলিম পূর্বপুরুষ এক সুতরাং দেশের সকল নাগরিকই হিন্দু দাবি RSS প্রধান মোহন ভাগবতের

আরও পড়ুন - Rahul Gandhi-হিন্দুত্ব মানেই শিখ-মুসলিমকে পেটানো, বিজেপিকে কটাক্ষ রাহুল গান্ধীর

এর আগে পশ্চিমবঙ্গে, সংঘ পরিচালিত হত দুটি অঞ্চলে ভাগ করে। চলতি বছরের মার্চ মাসে আরএসএস তা ভেঙে নতুন আরেকটি অঞ্চল তৈরি করেছে। ফলে পশ্চিমবঙ্গে এখন আরএসএস-এর সংগঠন পরিচালিত হচ্ছে তিনটি অঞ্চলভাগে। সংগঠন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ২০২৪ সালের মধ্যেই কার্যকর করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছ। এর অন্যতম কারণ হল, ২০২৫ সালে সংঘের প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ। তার আগেই বাংলায় জাঁকিয়ে বসতে চাইছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটি। 

সংগঠন সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে আপাতত অল্পবয়সী সদস্যদের দুই বছরের জন্য দায়িত্ব দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। প্রবীণরা প্রচারের কাজের জন্য সংঘের নিয়মিত কাজ থেকে কয়েকদিন ছুটিও নিতে পারে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংঘ কর্তারা বলছেন, তাঁদের সংগঠন সমাজ থেকে আলাদা নয়। দুটিকে আরও কাছাকাছি আনার লক্ষ্যেই সংগঠন সম্প্রসারণ পরিকল্পনা করা হয়েছে। 

এছাড়া বাংলা নিয়ে আরএসএস-এর পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে, সারা বাংলায় ছড়িয়ে থাকা, স্বাধীনতা সংগ্রামের অখ্যাত বা স্পল্পখ্যাত বীর নায়কদের ভূমিকা আবিষ্কার ও তুলে ধরা। এছাড়াও, স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থানগুলিকেও জনগণের সামনে তুলে ধরা হবে। এর সঙ্গে সঙ্গে সংঘ সদস্যদের বলা হয়েছে, স্থানীয়দের এমন কিছুর প্রশিক্ষণ দিতে বা এমন কিছুতে উত্সাহিত করতে যা তাদের জীবিকা অর্জনে সহায়তা করবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সংঘ সম্প্রসারণের এই কর্মসূচী, আসলে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির জন্য সমর্থন সংগ্রহের লক্ষ্য়েই নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন। বিজেপি ও আরএসএস-এর ঘনিষ্ঠতা কারোরই অজানা নয়। বস্তুত আরএসএস থেকেই অনেক বিজেপি নেতারা উছে আসেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী থেকে বাংলার দিলীপ ঘোষ - প্রত্যেকেই সংঘ থেকেই উঠে আসা। তবে সংঘের নেতারা অবশ্য এই ধারণা দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করছেন। তাঁদের দাবি, বাংলায় সব কিছুই আসলে রাজনৈতিক চশমা দিয়ে দেখা হয়। সংগঠন বৃদ্ধই একান্তই আরএসএস-এর নিজস্ব কর্মসূচি, তার সঙ্গে বিজেপি বা নির্বাচনের যোগ নেই বলেই দাবি করছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার কলকাতা মোহন ভাগবতের ওড়িশার সম্বলপুরে যাওয়ার কথা রয়েছে। 

YouTube video player