সংক্ষিপ্ত
নারকো টেস্টের পর তিহার জেলে নিয়ে যাওয়ার সময় আফতাব এক পুলিশকর্মীকে বলেছিলেন যে মাদকাসক্তির কারণে বর্তমানে তার অবস্থা খারাপ। আফতাব পুলিশকে বলেছেন যে তিনি দিল্লিতে নতুন ছিলেন এবং তিনি শ্রদ্ধার শরীরের অঙ্গগুলি কোথায় ফেলেছিলেন তা ঠিক মনে নেই।
শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যা মামলার অভিযুক্ত আফতাব পুনাওয়ালাকে নিয়ে একটি নতুন বিষয় সামনে আসছে। আফতাবের বক্তব্যের সত্যতা জানতে সম্প্রতি নারকো টেস্ট করা হয়। সূত্রের খবর, নারকো টেস্টে আফতাব পুনাওয়ালা চিকিৎসক ও মনোবিজ্ঞানীদের ফাঁকি দেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আফতাব পুনাওয়ালা ইতিমধ্যেই প্রশ্নের উত্তর মুখস্ত করে ফেলেছিলেন এবং নেশাগ্রস্ত অবস্থায়ও উত্তরের মহড়া দিয়েছিলেন।
সূত্রের খবর, নারকো টেস্টের পর তিহার জেলে নিয়ে যাওয়ার সময় আফতাব এক পুলিশকর্মীকে বলেছিলেন যে মাদকাসক্তির কারণে বর্তমানে তার অবস্থা খারাপ। আফতাব পুলিশকে বলেছেন যে তিনি দিল্লিতে নতুন ছিলেন এবং তিনি শ্রদ্ধার শরীরের অঙ্গগুলি কোথায় ফেলেছিলেন তা ঠিক মনে নেই। তার মনে পড়ে শুধু তার বাড়ির কাছের জায়গাটি অর্থাৎ মেহরাউলি বন। তিনি বলেছিলেন যে তিনি তার ফোনটি সমুদ্রে ফেলে দিয়েছিলেন এবং তারা দুজনেই মুম্বাই থেকে দিল্লিতে চলে গিয়েছিলেন।
নারকো টেস্টের পর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকরা আফতাবকে চেকআপ করলে দেখা যায় তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ। জেনে রাখা ভালো যে নারকো টেস্টের আগে একটি 'ট্রুথ সিরাম' ইনজেকশন দেওয়া হয়। শরীরের উপর এর প্রভাবের কারণে, একজন ব্যক্তি মিথ্যা বলতে সক্ষম হয় না এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সে সত্যি কথা বলতে বাধ্য হয়।
সূত্র জানায়, সংশোধনাগারে নারকো টেস্ট ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় একই ধরনের উত্তর দেন আফতাব। এমতাবস্থায় বলা হচ্ছে, আফতাব হয়তো তার উত্তরগুলো ভালোভাবে প্রস্তুত করেছেন। এ কারণে প্রতিবারই একই উত্তর দেন তিনি। পুলিশ বলছে তাদের তদন্ত প্রায় শেষ। এখন ফরেনসিক রিপোর্টের অপেক্ষা। এই রিপোর্টে শ্রদ্ধার হাড়ের বিস্তারিত তথ্য ও আফতাবের রান্নাঘরের পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য থাকবে বলে জানা গিয়েছে। আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে ফরেনসিক রিপোর্ট আসবে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে ডিএনএ রিপোর্টও আসবে।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডের যথেষ্ট মিল রয়েছে। শুধুমাত্র এটাই নয়, শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়েই এই হত্যাকাণ্ডের রহস্যের পর্দা খুলতে শুরু করেছে। দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবর, গত জুন মাসে পাণ্ডবনগরের কাছে দিল্লি পুলিশ কতগুলি দেহের টুকরোর সন্ধান পেয়েছিল। সেগুলি অত্যাধিক পচে যাওয়ায় তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডে সামনে আসতেই সেই উদ্ধার হওয়া দেহের টুকরোগুলি শ্রদ্ধার কিনা তা জানতে নতুন করে পরীক্ষা করা হয়। তাতে জানা যায় দেহগুলির শ্রদ্ধার নয়। তারপরই নতুন করে তদন্ত শুরু হয়। তাতেই সামনে আসে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড।