সংক্ষিপ্ত

দীর্ঘ দিন ভারতের ছিলেন  মহম্মদ আব্বাস স্টানেকজাই। এই দেশ থেকেই প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। আফগান সেনা বাহিনীর অন্যতম সদস্য ছিলেন। পরে তালিবান নেতা হিসেবেই উত্থান হয় তাঁর। 

রবিবারই পতন হয়েছে আফগানিস্তানে আশরাফঘানি সরকারের। তারপর থেকেই আফগানিস্তানে তালিবানরা সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সামনে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তালিবানদের শীর্ষস্থানীয় সাত নেতার মধ্যে একজন হলেন মহম্মদ আব্বাস স্টানেকজাই। তিনি দলের প্রবীণ নেতা। পাশাপাশি সংগঠনে শীর্ষ আলোচকও। এই স্টানেকজাইয়ের সঙ্গে একটা সময় ভারতের যোগ ছিল। তিনি ২০০১ সালে আগের তালিবান সরকারের পতনের পর থেকেই দোহায় বাস করেছেন। বর্তমানে তিনি আফগানিস্তানে ফিরে এসেছেন বলেও সূত্রের খবর। 

তালিবান নেতা
স্টানেকজাই কট্টোর তালিবান ধর্মীয় নেতা হিসেবেই পরিচিত। একটা সময় তাঁকে তালিবানদের দোহায় তাদের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধানও করেছিল। পরে আফগান সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় তিনি রীতিমত গুরুপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। একই সঙ্গে আমেরিকার সঙ্গেই তিনি আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন। বেশ কয়েকটি দেশের রাজনৈতিক সফরেও প্রধান প্রতিনিধি ছিলেন স্টানেকজাই। শিক্ষিত তালিবান নেতা হিসেবেই গণ্য করা হয় তাঁকে।

১ কোটি স্মার্ট ফোন থেকে মহার্ঘভাতা বৃদ্ধি, ভোটের আগে কল্পতরু মুখ্যমন্ত্রী

'তালিবানি কায়দায়' মোকাবিলা করতে হবে তৃণমূলের, মন্তব্য করে বিতর্কে ত্রিপুরায় বিজেপি নেতা

UNSC: আফগানিস্তানের পরিবর্তন বড় চ্যালেঞ্জ, তালিবান ইস্যুতে নাম না করে পাকিস্তানকে নিশানা জয়শঙ্করের

ভারতীয় যোগ
সালটা ছিল ১৯৮২। সেই সময় ভারত দেরহাদুনের ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমিতে প্রায় ২০ জন আফগান সৈন্যকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। সেই সৈন্যদের তালিকায় ছিল স্টানেকজাইয়ের নাম। তবে ভারতের স্মৃতি এখনও রয়েছেন স্টানেকজাইয়ের মনে। কারণ এখনও কথায় কথায় দেরহাদুনের ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমির দিনগুলির কথা বলেন তিনি। একি সঙ্গে সেই সময়ের প্রশিক্ষণের কথাও তুলে ধরেন তাঁর ভাষণে। আফগান নেতা যখন ভারতের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন সেই সময় তাঁর বয়স ছিল ২০। বর্তমানে তিনি ৬০এর প্রৌঢ়। IMAএর ভগৎ ব্যাটানিয়নের ৪৫ জন জওয়ানের সঙ্গেই প্রশিক্ষণ পেয়েছলেন স্টানেকজাই। তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিবে তৎকালীন মেজর জেনারেল ডিএ চতুর্বেদী। ১৯৭১ সালের ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের পর স্টানেইজাইকে সরাসরি ভারতের মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। আফগান ডিফেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটির তরফ থেকেই ওই দলটিকে পাঠান হয়েছিল। 

আফগান সেনার সদস্য
ভারত থেকে প্রশিক্ষণ পেয়ে স্টানেকজাই ফিরে যান আফগানিস্তানে। সেখানে আফগান সেনা বাহিনীতে যোগদান করেন। লেফট্যানেন্ট পদেই দায়িত্ব নিয়েছিলে। কিন্তু ১৯৯৬ সালে আফগান সেনা বাহিনী থেকে বেরিয়ে যান। তারপরই হাত মেলান তালিবাদনদের সঙ্গে। তারপর থেকে তাবিলানদের সংগঠেনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। একটি সংবাদন মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রীও হতে পারেন তিনি। 

ভারতকে পাশে চায় তালিবানরা 
কাতারের দোহায় তালিবানদের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে তালিবান নেতারা ভারতের সেনা বাহিনী, কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন। আফগানিস্তানে ভারতের কূটনৈতিক উপস্থিতি চাইছে তালিবানরা। স্টানেকজাই একটা সময় ভারতের কড়া সমালোচক ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে তিনিও আফগানিস্তানের ভারতের উপস্থিতি চাইছেন। স্টেনেকজাইয়ের এই মন্তব্য কিছুটা হলেও অবাক হয়েছেন ভারতীয় কর্তারা। তিনিও জানিয়েছেন আফগানিস্তানে ভারতীয়রা নিরাপদেই থাকবে। কাবুলে ভারতীয় মিশন ও দূতাবাসের কর্মীদের পুরো নিরাপত্তা দেওয়া হবে। যদিও এখনও পর্যন্ত ভারত আফগানিস্তান থেকে সমস্ত সরকারি কর্মী ও নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতেই উদ্যোগ নিয়েছে।