সংক্ষিপ্ত
সুরাটের আদালতে মানহানি মামলার শুনানি। রাহুল গান্ধীর সর্বোচ্চ সাজা অন্যায্য দাবি আইনজীবী। পুর্ণেশ মোদীর আইনজীবী টানলেন রাফাল মামলার কথা।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর 'মোদী পদবী' পরিপ্রেক্ষিতে গুজরাটের সুরাট আদালতে দায়ের করা মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল গান্ধীর আইনজীবী এদিন সুরাট আদালতে প্রথমেই বলেছেন, 'মোদী পদবী' মন্তব্যের জন্য মানহানি মামলার বিচার ন্যায্য নয়। এই মামলায় কংগ্রেস নেতাকে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা হয়েছে, যা অনুচিৎ। মানহানি মামলায় রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশেরও আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার অতিরুক্ত দায়রা জন আরপি মোগেরার আদালতে রাহুল গান্ধীর মামলার শুনানি শুরু হয়। রাহুল গান্ধীর হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী এস চিমা। তিনি বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটের রায় অদ্ভূত কারণ, ট্রায়াল কোর্টের বিচারক রেকর্ড থাকা সমস্ত প্রমাণের এরটি হটপট তৈরি করেছেন। তাই এটি সুষ্ঠু বিচার ছিল না। পুরো মামলাটি ইলেকট্রনিক প্রমাণের ওপর ভিত্তি করেই খাড়া করা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের সময় একটি ভাষণ দেওয়া হয়েছিল। সেই ভাষণকে কেন্দ্র করেই মামলা দায়ের হয়েছিল। আবেদনে বলা হয়েছিল ১০০ কিলোমিটার দূরে বসে এক ব্যক্তি খবরটি দেখছে বলে -- - এই বলে মামলা করা হয়েছিল। তাই এরজন্য সর্বোচ্চ সাজা অর্থাৎ ২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না। তিনি আরও বলেছেন,রাফালকাণ্ড নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে রাহুল গান্ধীর নিঃশর্ত ক্ষমা এই মামলায় ভুলভাবে যুক্ত করা হয়েছিল।
অন্যদিকে রাহুল গান্ধীর বিরোধী পক্ষ পুর্ণেশ মোদীর হয়ে সওয়াল করছেন হর্ষিত টোলিয়া। তিনি রাহুল গান্ধীর দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ওপর স্থগিতাদেশের আবেদনের বিরোধিতা করেছেন। বলেছেন, তাঁর মক্কেলে অসন্তুষ্ট হয়েছেন, কারণ রাহুল গান্ধী 'মোদী পদবী' মন্তব্য করে সমস্ত মোদী সম্প্রদায়ের মানুষদের মানহানির চেষ্টা করেছেন। তিনি আরও বলেছেন রাহুল গান্ধী যখন এই ভাষণ দিয়েছিলেন তখন তিনি কংগ্রেসের অর্থাৎ দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দলের সভাপতি ছিলেন। তাই সেই সময় তাঁর মন্তব্য দেশের মানুষের কাছে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিল। টোলিয়া বলেছেন এটাই প্রথম নয়, এর আগেও রাহুল গান্ধী মানহানি মামলার সম্মুখীন হয়েছিলেন। তিবি একাধিকবার বিতর্কিত মন্তব্য করেন বলেও অভিযোগ পুর্ণেশ মোদীর আইনজীবী।
সুরাটের আদালতে রায়ঃ
চিফ জুডিশিয়ার ম্যাজিস্ট্রেট এইচএইচ ভার্মা ২০১৯ সালের দায়ের করা মানহানি মামলায় রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। তাঁকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি ১৫ হাজার টাকা ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁর জামিনও মঞ্জুর করেছেন। একই সঙ্গে নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন তাঁকে উচ্চ আদালতে যাওয়া অনুমতি দিয়েছেন। রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদী মামলা দায়ের করেছিলেন। কর্ণটকে লোকসভার প্রচারে গিয়ে রাহুল গান্ধী নীরব মোদী ও ললিত মোদী ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করতে গিয়ে বলেছিলেন 'সব চোরেদের পদবী কেন মোদী হয়?' যদিও বিজেপির অভিযোগ রাহুল গান্ধী পিছিয়ে পড়াদের লক্ষ্য করে কটু মন্তব্য করেছেন। রাহুল গান্ধীকে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও দাবি জানিয়েছে বিজেপি।
সাংসদ পদ খারিজ
গুজরাট আদালতের রায় ঘোষণার পরেই লোকসভা সচবিচালয় জানিয়েদ দিয়েছেন, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে লোকসভা থেকে অযোগ্য সাংসদ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ওয়াইনাডের সাংসদ হিসেবে তাঁক অযোগ্যতা ২৩ মার্চ ২০২৩ সাল থেকে কার্যকর হয়েছে। অর্থাৎ তিনি এখন আর সাংসদ নন। তাঁর দোষী সাব্যস্ত হওয়ার দিন থেকে তা কার্যকর করা হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুরাটেরর আদালত বৃহস্পতিবার মানহানির মামলায় রাহুল গান্ধীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। মোদী পদবী নিয়ে তাঁর মন্তব্যের অভিযোগে গুজরাটের বিধায়ক পূর্ণেশ মোদী তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন।