সংক্ষিপ্ত
ত্রিপুরায় চলতি বছরেই বিধানসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যেই জোট বেঁধেছে সিপিএম-কংগ্রেস। বিজেপি - তৃণমূল একাই লড়বে। ট্রাম্পকার্ড হতে পারে টিপরা মোথা নামের উপজাতি দল।
৬০ আসনের ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতায় ফেরার লড়াই সিপিএমের। পাল্টা ক্ষমতা ধরে রাখার লড়াই বিজেপির। আর কংগ্রেসের লড়াই অস্ত্বত্ব রক্ষার। এই অবস্থায় বিজেপির বিরোধী শক্তি হিসেবে নিজের প্রমাণ করতে রাজ্যে চির-প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস-সিপিএম বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য হাতে হাত মিলিয়েছে। দুই দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনী আসন সমঝতার কথা ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে। আঞ্চলিত উপজাতীয় সংগঠন IPFTও এই দুই দলের সঙ্গে জোট বাঁধতে চাইছে।
টিপরা মোথা
টিপরা মোথা, একটি উপজাতি সংগঠন। বর্তমানে ত্রিপুরার রাজনৈতিক মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছে। ত্রিপুরার জেলা পরিষদ নির্বাচনের অধিকাংশতেই জয়লাভ করেছে। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই দলটি জোটসঙ্গীদের খোঁজে রয়েছে। কারণ এই দলের পৃথক রাজ্য চিপরাসার দাবিকে এখনও পর্যন্ত কেউ সমর্থন জানায়নি। রাজ্যের প্রধান দলগুলির এই দাবির বিরোধিতা করছে।
তৃণমূল কংগ্রেস
তৃণমূল কংগ্রেস, গত মাসে এই রাজ্যে পুরো দলীয় সংগঠনকে ঢেলে সাজিয়েছে ঘাসফুল শিবির। তবে আপাতত জোটে যেতে রাজি নয়। এই দল একাই লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিজেপি
গেরুয়া শিবির দীর্ঘ দিনের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে ত্রিপুরার মসনদ দখল করেছিল। বর্তমানে বিজেপি ত্রিপুরার ডবল - ইঞ্জিন সরকারের ওপর জোর দিচ্ছে। ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য বিজেপির মূল ভরসাই হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সিপিএম
দীর্ঘ ২৫ বছর ত্রিপুরা শাসন করেছে বামেরা। নেতৃত্বে ছিল সিপিএম। কিন্তু এখন ক্ষমতার বাইরে থাকায় কিছুটা হলেও ফ্যাকাসে হয়েছে লাল পার্টির প্রভাব। তবে রাজ্যে ফেরার লড়াই চালাচ্ছে। দুর্নীতি আর অবিচার- এই দুটি বিষয়কেই প্রচারের হাতিয়ার করতে চাইছে বামেরা। রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেছেন যে তার দল এবং কংগ্রেস সতর্কতার সাথে একটি আসন ভাগাভাগি কৌশল তৈরি করছে, "জনগণের আকাঙ্ক্ষা এবং বিজেপিকে পরাজিত করার প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে।
অন্যদিকে বিজেপি সিপিএম-কংগ্রেসের জোট নিয়ে রীতিমত কটাক্ষ করেছে। তাদের দাবি এটাই হওয়ার ছিল। কারণ দীর্ঘ দিন ধরেই বাম-কংগ্রেসের গোপন আঁতাত ছিল। যার কারণে সিপিএম এই রাজ্য শাসন করতে পেরেছে। বিজেপির রাজ্যসভাপতি জানিয়েছেন, সিপিএম- কংগ্রেস এবার নিশ্চিত করেছে তারা দুটি দলই পরস্পরের শত্রু নয় বরং মিত্র। তবে বিজেপি নির্বাচনের প্রায় এক বছর আগেই ভোট প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। কারণ এই রাজ্যে অমিত শাহের উপস্থিতিতে জন বিশ্বাস যাত্রা শুরু হয়েছে। যা প্রচার আর জনসংযোগ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করেছে রাজনৈতি বিশেষজ্ঞরা।
টিপরা মোথার সূত্রে জানা গেছে, দলের প্রধান প্রদ্যোত বিক্রম মাণিক্য দেববর্মা শুধু রাজ্যের দুই তৃতীয়াংশ এলাকা নিয়ে গঠিত ত্রিপুরা উপজাতি স্বায়ত্বশাসিত জেলা পরিষদের মধ্যেই নিজেকে আটকে রাখতে রাজি নয়। এই দল বর্তমানে গোটা ত্রিপুরার উপজাতি ভোটকে একত্রিত করতে চাইছে। এই দল প্রথম থেকেই ঘোষণা করেছে তারা নির্বাচনে ৪০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে ।এটি আইপিএফটি-তে জোটের আমন্ত্রণও বাড়িয়েছে।
আইপিএফটি-এর কার্যনির্বাহী সভাপতি এবং আদিবাসী কল্যাণ মন্ত্রী প্রেম কুমার রেয়াং-এর কাছে একটি চিঠিতে দেববর্মা জোর দিয়েছিলেন যে "বিলুপ্ত হওয়া এড়াতে ত্রিপুরার আদিবাসীদের এক ছাতার নীচে একত্রিত হওয়া উচিত
কংগ্রেস ও সিপিএমের একাংশ জানিয়েছে, টিপরা মোথার প্রভাব মূলত ২০টি নির্বাচনী এলাকায তাদের ৪০ সিটের দাবি তাই যুক্তিসঙ্গত নয়। রাজ্যের রাজনৈতিক বিশ্লেষক শেখর দাত্ত মনে করেন এই দলটির মূল দাবি 'টিপ্রাল্যান্ড' কোনও দলই মেনে নেবে না। আর সেই কারণে যেকোনও রাজনৈতিক দল টিপরা মোথাকে নির্বাচনী ট্রাম্প কার্ড হিসেবে ব্যবহার করবে।
আরও পড়ুনঃ
নেপালে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমান দুর্ঘটনার পাঁচটি সম্ভাব্য কারণ, দ্রুত তদন্তের নির্দেশ সরকারের
নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় ৫ ভারতীয়-সহ ১০ বিদেশির মৃত্যু, জোর কদমে চলছে উদ্ধারকাজ
ত্রিপুরার রাজনৈতিক সমীকরণে বদল, বিজেপির বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াই করবে কংগ্রেস-সিপিএম