সংক্ষিপ্ত
উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে (UP Elections 2022) হস্তিনাপুরে তাঁকে প্রার্থী করেছে কংগ্রেস (Congress)। তারপরই ভাইরাল তাঁর বিকিনি পরা ছবি, কী বলছেন অভিনেত্রী অর্চনা গৌতম (Archana Gautam)?
বেজে গিয়েছে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের (UP Elections 2022) দামামা। ভোটের দিনক্ষণ ঠিক হয়ে গিয়েছে। একে একে সব দলের প্রার্থী তালিকা সামনে আসছে। উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের জন্য ১২৫ জনের প্রথম প্রার্থী-তালিকা প্রকাশ করেছে কংগ্রেস, তাতে জায়গা পেয়েছেন ৫০ জন মহিলা। আর তাদেরই একজন হলেন অভিনেত্রী অর্চনা গৌতম। মীরাটের হস্তিনাপুরের মতো ছোট শহর থেকে যিনি নিজের পরিশ্রম আর দক্ষতায় তামিল, তেলেগু, মালয়ালম এমনকী বলিউডেও পৌঁছে গিয়েছেন। হস্তিনাপুর আসন থেকে এবার তাঁকেই প্রার্থী করেছে কংগ্রেস। আর তারপরই, ভাইরাল হয়েছে তাঁর বিকিনি পরিহিত ছবি। জীবনের নয়া ইনিংস শুরুর আগে এশিয়ানেট নিউজকে একান্ত সাক্ষাতকার দিলেন আসন্ন উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের এই বর্ণময় চরিত্র।
প্রশ্ন: বলা হয়, হস্তিনাপুর আসনে যে দল জয়ী হয়, তারাই উত্তরপ্রদেশে সরকার গঠন করে। সেখান থেকে এবার কংগ্রেস আপনাকে দাঁড় করিয়েছে। কী মনে হচ্ছে?
অর্চনা: ঠিকই শুনেছেন। আমি চাই এবার প্রিয়াঙ্কা দিদি (প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র) উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব নিন এবং মুখ্যমন্ত্রী হোন।
প্রশ্ন: আপনি আসায় কি হস্তিনাপুরে কংগ্রেসের জেতার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, নাকি আগে থেকেই কংগ্রেসের জেতার মতো পরিস্থিতি তৈরি ছিল?
অর্চনা: আমি যখন এখানে প্রার্থী হইনি, তখন কংগ্রেস সম্ভবত ৫ নম্বর স্থানে ছিল। হস্তিনাপুরে কংগ্রেস নামগন্ধও ছিল না। কিন্তু, আমি প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই মানুষের মধ্যে কংগ্রেস দলকে নিয়ে, আমাকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। সবথেকে বড় কথা হল মহিলাদের নিয়ে প্রিয়াঙ্কা দিদি যে বিষয়ের উত্থাপন করেছেন, তাই নিয়ে চর্চা চলছে।
প্রশ্ন: বিজেপি সরকারের দাবি, তারা অনেক উন্নয়নের কাজ করেছে। কিন্তু বাস্তবে কতটা উন্নয়নের কাজ তারা করেছে? আপনি কতটা কী দেখছেন?
অর্চনা: দেখুন বিজেপি সরকার কোনও নতুন কাজ করতে পারেনি। আগের কংগ্রেসের আমলের সরকারের করে যাওয়া প্রকল্পের যে কাজ বাকি ছিল, এই সরকার সেগুলিই সম্পূর্ণ করেছে। আর সেগুলিই তারা তাদের করা উন্নয়ন বলে প্রচার করছে।
প্রশ্ন: কোথায় কোথায় খামতি আছে বলে আপনি মনে করছেন?
অর্চনা: দেখুন আমি আপনাকে আমার বিধনসভা কেন্দ্রের কথা বলতে পারি। হস্তিনাপুরে কোনও বাস স্টপ নেই। লখনউ যেতে গেলে হস্তিনাপুর থেকে মীরাট আসতে হয়। তারপর এক থেকে দুই ঘন্টা অপেক্ষা করার পর সেখান থেকে লখনউ যাওয়ার বাস মেলে। হস্তিনাপুর একসময় রাজধানী ছিল। হস্তিনাপুর এবং চন্ডিগড় শহরের একই সময়ে নামকরণ করা হয়েছিল। এখন চন্ডিগড় কোথায় পৌঁছে গিয়েছে দেখুন। এছাড়া, দীর্ঘদিন ধরে হস্তিনাপুরে রেল যোগাযোগ স্থাপন করার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু, এখনও কোনও রেল স্টেশন বা রেললাইনের দেখা মেলেনি।
প্রশ্ন: আপনি কেন কংগ্রেসে যোগ দিলেন? বিজেপি তো কেন্দ্র ও রাজ্য - দুই জায়গাতেই সরকারে রয়েছে। আরও অনেক দল রয়েছে। সবাইকে ছেড়ে কেন কংগ্রেসে যোগ দিলেন?
অর্চনা: প্রিয়াঙ্কা দিদি যে 'লড়কি হুঁ, লড় সকতি হুঁ' স্লোগান চালু করেছেন, সেই স্লোগানই আমায় রাজনীতিতে আসার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করেছিল। সেই স্লোগান শুনেই আমার মনে হয়েছিল, আমারও রাজনীতিতে এসে মহিলাদের জন্য কিছু করা উচিত। এভাবেই কংগ্রেসে যোগদান করি।
প্রশ্ন: ভোটে দাঁড়ানোর পরই আপনার পুরোনো ছবি ভাইরাল হয়েছে। বিশেষ করে এক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় আপনার বিকিনি পরা ছবি নিয়ে এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর চর্চা চলছে। এটা কীভাবে দেখছেন?
অর্চনা: দেখুন ওটা ছিল আমার অন্য পেশা। মিস কসমো ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় আমি দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলাম। দেশের হয়ে সেরার মুকুট জিতেছিলাম। অনেক অভিনেত্রীই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় বিকিনি পরেছেন। প্রিয়াঙ্কা চোপরা, মানুষি চিল্লাররা পরেছেন। আমিও পরেছি। দেশের হয়ে মুকুট জেতাটা গৌরবের বলেই আমি মনে করি। দুটি আলাদা পেশা, একটির সঙ্গে আরেকটিকে জড়ানো ঠিক নয়।
প্রশ্ন: কিন্তু, গ্রামীন এলাকার মানুষ অনেক বেশি সংস্কারী। বিকিনি পরা ছবি সেই নিয়ে সেইসব এলাকায় আপনাকে অসুবিধায় পড়তে হবে না তো?
অর্চনা: একেবারেই নয়। আমি হস্তিনাপুরেরই মেয়ে। হস্তিনাপুরের মানুষ আমার পরিবার। তারা জানেন, আমি আজ যেখানে পৌঁছেছি, তার জন্য আমাকে কী পরিশ্রম করতে হয়েছে। আমার পিছনে কোনও বড় প্রোডিউসারের হাত ছিল না। আর আজকের দিনে মানুষ অনেক বেশি আধুনিক। তারা আমার বিকিনি পরা ছবি নয়, তার পিছনে আমার পরিশ্রমটাই দেখবেন। এগুলো কোনও সমস্যা হবে না।
প্রশ্ন: হস্তিনাপুরের বর্তমান বিধায়ক যোগী সরকারের মন্ত্রী। এছাড়া এই কেন্দ্রে অন্যান্য দলেরও অনেক বড় বড় নেতা রয়েছেন। আপনার লড়াই কার সঙ্গে?
অর্চনা: আমার কারোর সঙ্গেই লড়াই নেই। এই নেতারা প্রত্যেকেই আমার বড় দাদার মতো। বয়সে অভিজ্ঞতায় আমার থেকে অনেক বড়। আমি তাদের আশীর্বাদ নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমি রাজনীতিও করতে চাই না। শুধু মানুষের সেবা করতে চাই।