সংক্ষিপ্ত
উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের (Uttar Pradesh Elections 2022) প্রথম পর্বের প্রায় ২৫ শতাংশ প্রার্থীর বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারি মামলা। এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে উত্তরপ্রদেশ ইলেকশন ওয়াচ (Uttar Pradesh Election Watch) এবং অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (ADR)।
আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকি। তারপরই ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন (Uttar Pradesh Elections 2022)। ২০২০-র ফেব্রুয়ারি মাসে, সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) এক পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে অপরাধমূলক ইতিহাস আছে, এমন ব্যক্তি প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন না দেওয়ার বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু, তার প্রভাব যে রাজনৈতিক দলগুলির উপর পড়েনি, আসন্ন উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের প্রার্থী তালিকাই তার প্রমাণ। দেখা যাচ্ছে, প্রথম পর্বের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সমস্ত প্রধান দলগুলিই ১৫ থেকে ৭৫ শতাংশ এমন প্রার্থীদের টিকিট দিয়েছে, যাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে উত্তরপ্রদেশ ইলেকশন ওয়াচ (Uttar Pradesh Election Watch) এবং অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (ADR)।
১০ ফেব্রুয়ারি উত্তরপ্রদেশে প্রথম পর্বের নির্বাচনে ৫৮ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৬২৩ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ৬১৫ জন প্রার্থীর হলফনামা বিশ্লেষণ করেছে এডিআর। দেখা যাচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মোট ১৫৬ জন বা প্রায় ২৫ শতাংশ প্রার্থী জানিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। ১২১ জন বা ২০ শতাংশ প্রার্থীর বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর ফৌজদারি মামলা।
এই বিষয়ে, প্রধান দলগুলির মধ্যে শীর্ষে রয়েছে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি (Samajwadi Party)। আর তারপরই রয়েছে তাদের জোট সঙ্গী রাষ্ট্রীয় লোক দল বা আরএলডি (RLD)। এডিআর-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, সপার ২৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ২১ জনের (৭৫%) এবং আরএলডির ২৯ প্রার্থীর মধ্যে ১৭ জনের (৫৯%) বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। অন্যদিকে, শাসকদল বিজেপি (BJP) যে ৫৭ জন প্রার্থী দিয়েছে তার মধ্যে ২৯ জনের (৫১%) বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ। এছাড়া কংগ্রেসের (Congress) ২১ জন, (৩৬%), বহুজন সমাজ পার্টির (BSP) ১৯ জন (৩৬%) এবং আম আদি পার্টির (AAP) ৮ জন (১৫%) প্রার্থী হলফনামায় তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা থাকার কথা ঘোষণা করেছেন। খুন ধর্ষণের মতো গুরুতর ফৌজদারি মামলার অভিযোগ থাকা প্রার্থীও সবথেকে বেশি দিয়েছে সপা-ই, ১৭ জন।
এডিআর-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, সমস্ত বড় রাজনৈতিক দলই ধনী প্রার্থীদের টিকিট দেয়। এর থেকেই ভারতের নির্বাচনে অর্থ শক্তির ভূমিকা স্পষ্ট হয়। উত্তরপ্রদেশের প্রথম পর্বের নির্বাচনে কোন দলের প্রার্থীরা অর্থশক্তিতে এগিয়ে রয়েছে? দেখা যাচ্ছে আরএলডি যে ২৯ জন প্রার্থী দিয়েছে তার মধ্যে ২৮ জনই (৯৭%) কোটিপতি। কোটিপতি প্রার্থীদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি, ৫৭ জন প্রার্থীর মধ্যে ৫৫ জন (৯৭%) কোটিপতি। এছাড়া বসপা দলের ৫৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৫০ জন (৮৯%), সপার ২৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ২৩ জন (৮২%), কংগ্রেসের ৫৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩২ জন (৫৫ শতাংশ) এবং আপ দলের ৫২ জন প্রার্থীর মধ্যে ২২ জন (৪২%) প্রার্থী জানিয়েছেন, তাঁদের সম্পদের মূল্য ১ কোটি টাকার বেশি। প্রথম পর্বের সবথেকে ধনী প্রার্থী হলেন মিরাট ক্যান্টনমেন্ট আসনের বিজেপি প্রার্থী অমিত আগরওয়াল। প্রার্থীদের মোট সম্পদের গড় ৩.৭২ কোটি টাকা!
এবার আসা যাক প্রার্থীদের শিক্ষাদিক্ষার বিষয়ে। ৬২৩ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩০৪ জন (৪৯%) প্রার্থী রয়েছেন, যাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক বা তার বেশি বলে জানিয়েছেন। এর পাশাপাশি ২৩৯ জন (৩৯%) প্রার্থী জানিয়েছেন তাঁদের শিক্ষা পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর মধ্যে, ৭ জন প্রার্থী ডিপ্লোমাধারী, ৩৮ জন প্রার্থী শুধুমাত্র সাক্ষর। ১৫ জন প্রার্থী নিজেদের নিরক্ষর বলে ঘোষণা করেছেন। ১২ জন প্রার্থী তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতার কোনও বিবরণ দেননি।