সংক্ষিপ্ত

মন্দিরের ভেতরেই ওই যুবককে চূড়ান্ত মারধরের পর বেঁধে রাখা হয়। তবে, এতেই ক্ষান্ত হয়না ‘উচ্চবর্ণের’ পাশবিকতা। 

নীচু বর্ণের মানুষ হয়ে ঈশ্বরের আশীর্বাদ নিতে মন্দিরের ভেতরে প্রবেশ কেন? উচ্চ বর্ণের নজরে পড়তেই পেতে হল চরম শাস্তি। মন্দিরের মধ্যে প্রবেশ করার ‘অপরাধে’ এক দলিত যুবকের ওপর নির্মম অত্যাচার চালাল এক দল ব্যক্তি। জ্বলন্ত শিক দিয়ে ছ্যাঁকাও দিয়ে দেওয়া হল ‘অপরাধী’ যুবককে। পাশবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলা।

উত্তরকাশীতে একটি মন্দিরে ঢোকার অপরাধে মাত্র বাইশ বছর বয়সী এক স্থানীয় যুবককে ভয়ঙ্করভাবে মারধর করল তথাকথিত উচ্চ বর্ণের পাঁচ জন ব্যক্তি। ঘটনা সম্পর্কে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়াতেই অভিযোগ দায়ের করা হয় পুলিশের কাছে। পাঁচ অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহের ৯ জানুয়ারি উত্তরকাশী জেলার সালরা গ্রামের মোরী এলাকায় একটি মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন বাইশ বছর বয়সী এক যুবক। তিনি সালরা গ্রামের পার্শ্ববর্তী গ্রাম বাইনোলের বাসিন্দা। গত ৯ তারিখ কোনও শুভ কাজের উদ্দেশ্যে তিনি যখন মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন, সেই সময়ই পাঁচ-ছ’জন মিলে তাঁকে ঘিরে ধরে। দলিত হওয়া সত্ত্বেও সে কেন মন্দিরের ভেতর প্রবেশ করেছে? এই প্রশ্ন তুলে মন্দির চত্বরের মধ্যেই তীব্র বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এরপর ওই যুবককে ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে ওই পাঁচ-ছ’জন। মন্দিরের ভেতরেই ওই যুবককে বেঁধে রাখা হয়। তবে, এতেই ক্ষান্ত হয়না ‘উচ্চবর্ণের’ পাশবিকতা। এরপর সারা রাত ধরে জ্বলন্ত লোহার শিক দিয়ে ‘নিম্নবর্ণের’ তরুণের শরীরে ছ্যাঁকা দিতে থাকে তারা।

পরেরদিন কোনওমতে মুক্ত হয়ে অত্যাচারিত যুবক ওই মন্দিরের বাইরে বেরিয়ে আসেন। পথচলতি মানুষজন তাঁকে ওই অবস্থায় দেখতে পেয়েই সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরেও তাঁর শারীরিক সংকট না কাটায় যুবককে বড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান তিনি।

নিগৃহীত যুবক জানিয়েছেন, তিনি দলিত হওয়ায় মন্দিরে ঢোকা নিয়ে এই ব্যক্তিরা রেগে যান। তাঁকে মন্দির থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হলে তিনি জানিয়েছিলেন যে, তিনি পুজো দিয়েই চলে যাবেন। তখনই আগত ব্যক্তিরা তাঁর ওপর চড়াও হন। তাঁকে মন্দিরের পিলারে বেঁধে রেখে বেধড়ক মারধর করা হয়। লোহার শিক দিয়ে তাঁর গোটা শরীরে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে জনজাতি/ উপজাতি আইনে গ্রামের পাঁচ বাসিন্দার নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং সমগ্র ঘটনার তদন্ত করছেন সার্কেল অফিসার প্রশান্ত কুমার।

আরও পড়ুন-

বিশ্বভারতী থেকে প্রফেসর সুদীপ্ত ভট্টাচার্যকে অপসারণের বিরোধিতা, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি দিলেন স্বয়ং নোয়াম চমস্কি
কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবীদের বিক্ষোভ ‘অভব্যতা’, রাজ্যে আসছে বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার প্রতিনিধি দল
সাগর থেকে প্রবেশ করা উষ্ণ হাওয়ার জেরে আপাতত থমকে উত্তুরে বাতাস, জেলায় জেলায় কুয়াশার দাপট