গুরুগ্রামের এক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে লক্ষ্য পূরণ না করায় এক কর্মচারীকে কান ধরে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করার শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার ভিডিও লিঙ্কডিনে ভাইরাল হয়েছে, যদিও সংস্থা অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

লিঙ্কডিনে 'পীযূষ কুমার’ নামে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে একটা ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিয়োয় দৃশ্যমান, এক জন তরুণ কান ধরে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করছেন। ক্যামেরার পেছনে দাঁড়িয়ে আরেক তরুণী গুনছেন যে, কত বার কান ধরে সিঁড়ির পাক ঘুরলেন সেই তরুণ।

গুরুগ্রামের এক চাকরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কাজ করেন ওই তরুণ। প্রতি দিন ৫০ জন পড়ুয়াকে ভর্তি করাতে হবে সেই তরুণকে। আর সেই লক্ষ্য পূরণ না করতে পারলে কান ধরে ৫০ বার সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে হবে তাকে। এমনকি সাদা কাগজে তরুণকে দিয়ে এমনটাই লিখিয়ে নিয়েছিলেন তাঁর তরুণী ম্যানেজার। লক্ষ্য পূরণ করতে না পারায় সেইদিনই এই শাস্তিই পেতে হয় তরুণকে। তবে ৫০ বার নয়, সেদিন ১০ বার কান ধরে সিঁড়ি ওঠা নামা করান ওই তরুণী ম্যানেজার। উচ্চপদস্থ, তাই বসের নির্দেশ মানতেই হবে। বাধ্য হয়ে সেদিন কান ধরে ১০ বার সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করেন ওই তরুণ।

এই করুন মুহূর্তের ভিডিয়ো অফিসের হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপেও ছড়িয়ে দেন ম্যানেজার, যাতে অন্য সহকর্মীর মনে ভয় ধরাতে পারেন যে লক্ষ্য পূরণ না হলে কান ধরে সিঁড়ি ওঠা নামা করার এমন শাস্তিই মিলতে পারে। এধরনের চাপ ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ওই তরুণ চাকরি ছেড়ে দেন। সংস্থার তরফ থেকে তরুণের অফিসের মেল আইডিও নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়।

মানসিকভাবে নির্যাতিত তরুণ ম্যানেজারের বিরুদ্ধে, সংস্থার মানব সম্পদ বিভাগের কাছে অভিযোগ জানালে আমল দেওয়া হয়নি তাতে। এরপরও বহু চে‌ষ্টা করে সংস্থার ডিরেক্টরের সঙ্গে মিটিংয়ের অনুমতি পেলেও, সেখানেও তার অভিযোগ গুরুত্বহীন বলে অবহেলা করা হয়। তরুণের ফোন কেড়ে নিয়ে তাঁকে অভিযোগ তুলে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয় তাকে। অভিযোগ তোলায় সম্মতি না দিলে জোর করে তরুণকে গাড়িতে করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

পুলিশ মারধর করলে ওই তরুণ বাধ্য হয়ে ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়, যে সম্পূর্ণ মজা করেই তরুণের এমন ভিডিয়ো করা হয়েছে। যদি কোনও সহকর্মীর সঙ্গে তিনি এই প্রসঙ্গে আলোচনা করেন তাহলে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডও হতে পারে তরুণের। থানা থেকে ফোন ফেরত পেলে ওই তরুণ বুঝতে পারে অফিসের এবং ব্যক্তিগত কিছু তথ্যপ্রমাণও মুছে দেওয়া হয়েছে ফোন থেকে। সম্পূর্ণ ঘটনাটি লিখে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে জানায় ওই তরুণ।

সমাজ মাধ্যমে করা তরুণের এই অভিযোগ নাকোচ করছেন ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ডিরেক্টর। মজার ছলে অফিসের সহকর্মীরাই বানিয়েছিলেন ওই ভিডিও। সেই ভিডিয়োই ব্যবহার করে সংস্থার খ্যাতি নষ্ট করার জন্য এমন অপপ্রচার করা হচ্ছে বলে সংস্থার ডিরেক্টরের।