সংক্ষিপ্ত
- নির্ভয়ার ৪ ধর্ষকের ফাঁসি তিহাড় জেলে
- খবর আসতেই আনন্দে মাতল বালিয়া
- নির্ভয়ার গ্রামে উৎসবের পরিবেশ
- একে অপরকে চলছে মিষ্টিমুখ করানো
উত্তরপ্রদেশের বালিয়া জেলার এক ছোট্ট গ্রামে জন্ম নির্ভয়ার। কৃষক পরিবারের মেয়ের বেড়ে ওঠাও বালিয়াতেই। মেয়ের পড়াশোনার খরচ মেটাতে জমি বিক্রি করে দিয়েছিলেন বাবা। ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর নির্ভয়াকে ঘিরে পরিবারের সব স্বপ্ন তছনছ করে দিয়েছিল মানুষ রূপী ৬ পিশাচ। রাজধানীর চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার হতে হয়েছিল প্যারামেডিক্যালের ২৩ বছরের ছাত্রীটিকে। নির্মাম অত্যাচারের পরও বাঁচার চেষ্টা করেছিলেন নির্ভয়া। কিন্তু ১৩ দিনের যমে মানুষে লড়াই শেষ হয় ২৯ ডিসেম্বর। তারপর ন্যায় বিচারের জন্য দীর্ঘ সাত বছর ধরে লড়াই চালিয়েছে নির্ভয়ার বাবা-মা বদ্রিনাথ সিং ও আশাদেবী। অবশেষে এসেছে সেই দিন। শুক্রবার ভোরে তিহাড় জেলে ফাঁসিতে ঝোলান হয়েছে নির্ভয়াকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত চার ধর্ষক মুকেশ সিং, বিনয়. শর্মা, পবন গুপ্তা ও অক্ষয় ঠাকুরকে। দীর্ঘ লড়াইয়ের শেষে শান্তি পেয়েছেন আশআদেবী ও বদ্রিনাথ। শান্তি পেয়েছে নির্ভয়ার গ্রামও।
আরও পড়ুন: আশাদেবীর সঙ্গে রাত জাগল রাজধানীও, ফাঁসি হতেই জেলের বাইরে উৎসবের মেজাজ
দীর্ঘ সাত বছর ধরে নির্ভয়ার পরিবারের সঙ্গে ন্যায়বিচারের জন্য অপেক্ষা করছিল বালিয়াও। ঠিক জেলাসদর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরেই রয়েছে নির্ভয়ার গ্রাম মেদৌলা কালনে। গত দুবারে মত এবারও ফাঁসি পিছিয়ে যায় কিনা তা নিয়ে সারা দেশের সঙ্গে উৎকন্ঠায় রাত জেগেছে এই গ্রামের বাসিন্দারাও। ভোরে চার অপরাধীরে ফাঁসিতে চড়ান হতেই উৎসবে মেতে ওঠেন গ্রামবাসীরা। গ্রাম প্রধান জানান, এই দিনের অপেরক্ষায় ছিল গোটা মেদৌলা কালনে। ৪ অপরাধীর ফাঁসি হওয়ায় তারা খুশি। আজকের দিনটা বড় আনন্দের।
গ্রামে ফাঁসির খবর আসতেই নির্ভয়ার দাদা মোহন সিং বলেন, " আজ দেশ সবচেয়ে বড় করোনা থেকে মুক্ত হয়েছে।" কাকা সুরেশ সিং বলেন, "অন্ধকার রাতের পর আজ ধলমলে দিনের সূচনা হয়েছে। আজকের দিনটা আমাদের কাছে হোলি আর দীপাবলির মতই। আমরা বহু বছর ধরে এই দিনটারই অপেক্ষায় ছিলাম। আজ হৃদয় ঠান্ডা হল। " নির্ভয়ার কাকিমা ভাগ্যমণি বলেন, " ৭ বছর ধরে এই দিনটারই অপেক্ষা করছিলাম।"
আরও পড়ুন: এতদিনে ন্যায়বিচার পেল মেয়ে, জেল কর্তৃপক্ষ এসে খবর জানাতেই হাসি ফুটল বাবার মুখে
চার ধর্ষক চরম শাস্তি পাওয়ায় খুশি বালিয়ার মেয়েরাও। এটা কেবল নির্ভয়া নয়, মেয়েদের ন্যায়বিচার পাওয়া। বলেন এখানকার কলেজপড়ুয়া মেয়েরা। এতে দেশের মেয়েদের মন থেকে কিছুটা হলেও ভয় দূর হবে বলেই মনে করছেন তারা।