সংক্ষিপ্ত
উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে (Uttar Pradesh Elections 2022) বিজেপির স্ট্র্যাটেজি মেনেই সোমবার বারানসীতে (Varanasi), প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (PM Narendra Modi) মুখে শোনা গেল মুঘল শাসক আওরঙ্গজেবের নাম। কাশী বিশ্বনাথ ধামের (Kashi Vishwanath Dham) প্রথম পর্বের উদ্বোধন করতে এসে কী বললেন তিনি?
উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন (Uttar Pradesh Elections 2022) যত এগিয়ে আসছে, ততই সেখানকার বিজেপি (BJP) নেতাদের মুখে শোনা যাচ্ছে গজনির সুলতান মাহমুদ থেকে মহম্মদ ঘোরির নাম। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছিলেন, যত দিন যাবে, বিজেপি নেতাদের মুখে আরই বেশি করে উঠে আসবে মুসলিম (Muslims) শাসকদের নাম, তাদের অত্যাচারের কথা। সোমবার, নিজ লোকসভা কেন্দ্র বারানসীতে (Varanasi), কাশী বিশ্বনাথ ধামের (Kashi Vishwanath Dham) প্রথম পর্বের উদ্বোধন করতে গিয়ে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও (PM Narendra Modi) নিলেন মুঘল শাসক আওরঙ্গজেব, সালার মাসুদদের নাম। বললেন, ভারতে যখনই কোনও আওরঙ্গজেবের উত্থান হয়েছে, একজন শিবাজীও আবির্ভূত হয়েছেন। কারণ এই দেশের মাটি বিশ্বের অন্যান্য জায়গা থেকে আলাদা।
উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে বিজেপি যে কড়া হিন্দুত্বের (Hindutva) তাস খেলতে চলেছে, তা এতদিনে দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। সোমবার কাশী বিশ্বনাথ ধামের প্রথম পর্বের উদ্বোধনে, বারানসীতে এসে প্রধানমন্ত্রীও সেই অবস্থান মেনেই চললেন এবং বললেন। প্রথমেই গঙ্গা নদীতে ডুব দিয়ে, কাল ভৈরব মন্দিরে পুজো দেন। তারপর, কাশি-বিশ্বনাথ ধাম করিডোরের উদ্বোধন করেন তিনি।
আরও পড়ুন - Kashi Vishwanath Mandir: কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের পুনরুজ্জীবন, সোমবার মোদীর হাতে উদ্বোধন
তারপর, এই উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে হওয়া সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, হানাদাররা এই প্রাচীন শহর বারবার আক্রমণ করেছে, ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। ইতিহাস সাক্ষী আছে আওরঙ্গজেবের নৃশংসতার, সন্ত্রাসের। তিনি ধর্মান্ধতা দিয়ে সংস্কৃতিকে চূর্ণ করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এই দেশের মাটি আলাদা। 'যদি একজন মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের উত্থান ঘটে, শিবাজির মতো একজন মারাঠা যোদ্ধারও আগমন ঘটে। যদি একজন সালার মাসুদ এগিয়ে যায়, রাজা সুহলদেবের মতো যোদ্ধারা তাকে আমাদের ঐক্যের শক্তি উপলব্ধি করায়'। তিনি বলেন, যাঁর হাতে ডমরু রয়েছে তিনিই কাশীর শাসক। গঙ্গার প্রবাহকে কে থামাতে পারে?
প্রধানমন্ত্রী মোদি আরো বলেন, কাশী বিশ্বনাথ ধামের নতুন কমপ্লেক্সটি শুধু একটি বড় ভবন হতে যাচ্ছে না, এটি হবে ভারতের 'সনাতন সংস্কৃতি'র, আধ্যাত্মিক আত্মার এবং প্রাচীন ঐতিহ্যের প্রতীক। বর্তমানে কাশি বিশ্বনাথ মন্দিরের আয়তন মাত্র ৩০০০ বর্গফুট। নতুন কমপ্লেক্সটি হবে প্রায় পাঁচ লক্ষ বর্গফুটের বেশি এলাকা জুড়ে। ৫০,০০০ থেকে ৭৫,০০০ ভক্ত মন্দির প্রাঙ্গণে আসতে পারবেন৷ একে 'নতুন ইতিহাস' রচনা বলে দাবি করে মোদী বলেন, 'আমরা সৌভাগ্যবান যে এর সাক্ষী হতে পারছি'।
এই বিশাল কমপ্লেক্স নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক শ্রমিক, কারিগরদের, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ এবং কমপ্লেক্স করার জন্য জমি দেওয়া সকল পরিবারকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। পাশাপাশি, উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারেও কাশী বিশ্বনাথ ধাম প্রকল্পটি সম্পূর্ণ করার জন্য দিনরাত এক করে কাজ করেছেন বলে শংসা দিয়ে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারকে তিনি অভিনন্দন জানিয়েছেন। জানিয়েছেন, এমনকী, কোভিড-১৯ মহামারির সময়ও, এখানে কাজ থামানো হয়নি। এদিন তিনি দেশের মানুষের কাছ থেকে তিনটি অঙ্গীকার চেয়েছেন - পরিচ্ছন্নতা, সৃষ্টি ও উদ্ভাবন এবং একটি আত্মনির্ভর ভারত তৈরির জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টা।