সংক্ষিপ্ত
তদন্তের সময় অভিযুক্ত জামান মীর, আলী মোহাম্মদ মীর এবং ইকবাল গান্দ্রু স্বেচ্ছায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তাদের ভূমিকার কথা স্বীকার করেন। এছাড়া আরও চারজন সিবিআইয়ের পুলিশ সুপারের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুফতি মহম্মদ সঈদের মেয়ে রুবাইয়া সইদের বড় পদক্ষেপ। শুক্রবার জেকেএলএফ প্রধান ইয়াসিন মালিক এবং অন্য তিনজনকে বিশেষ সিবিআই আদালতের সামনে ১৯৮৯ সালে তার অপহরণকারী হিসাবে চিহ্নিত করলেন রুবাইয়া। এই প্রথমবার আদালতে এই মামলায় হাজিরা দেন রুবাইয়া। যদিও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গোটা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ চলে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমেই ইয়াসিন মালিককে চিহ্নিত করে তিনি।
উল্লেখ্য, রুবাইয়াকে ১৯৮৯ সালের ৮ই ডিসেম্বর লাল দেদ হাসপাতালের কাছে থেকে অপহরণ করা হয়েছিল এবং পাঁচ দিন পর ১৩ ডিসেম্বর পাঁচ ভয়ঙ্কর জেকেএলএফ জঙ্গিকে মুক্তির বিনিময়ে তার অপহরণকারীরা তাকে ছেড়ে দেয়। জঙ্গিদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তটি নেন কেন্দ্রে বিজেপি সমর্থিত তৎকালীন ভিপি সিং সরকার। রুবাইয়াকে ফিরিয়ে আনতে তখন বিনিময়ে পাঁচ সন্ত্রাসীকে মুক্তি দেওয়া হয়।
জেকেএলএফ জঙ্গিদের মুক্তি কাশ্মীর উপত্যকায় সক্রিয় অন্যান্য জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে উৎসাহিত করে। সিবিআই, ১৯৯০ সালের গোড়ার দিকে মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেছিল। তাদের তরফে রুবাইয়াকে প্রসিকিউশনের সাক্ষী হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়। যাইহোক, বছরের পর বছর ধরে, মামলাটি কার্যত ঠান্ডা ঘরে চলে যায় এবং ২০১৯ সালে সন্ত্রাসের অর্থায়নের অভিযোগে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি মালিককে গ্রেপ্তার করার পরে ফের চালু করা হয়।
গত বছরের জানুয়ারিতে, সিবিআই বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর মনিকা কোহলি এবং এস কে ভাটের সহায়তায় মালিক সহ দশজনের বিরুদ্ধে রুবাইয়া অপহরণ মামলায় অভিযোগ গঠন করে। শুনানির সময়, তামিলনাড়ুতে বসবাসকারী রুবাইয়া বিশেষ বিচারকের সামনে তার বক্তব্য রেকর্ড করেন। তিনি মালিককে শনাক্ত করেন, যিনি সম্প্রতি সন্ত্রাসের অর্থায়নের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি পেয়েছেন। অন্য তিনজনকে তার অপহরণকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
রুবাইয়া বিচারককে বলেন, "এই সেই ব্যক্তি। তার নাম ইয়াসিন মালিক। তিনি হুমকি দিয়েছিলেন যে আমি তাদের নির্দেশ মানতে অস্বীকার করলে তিনি আমাকে মিনিবাস থেকে টেনে বের করে দেবেন।" পরে তিনি তাকে আদালতে প্রদর্শনী হিসেবে দেখানো ছবির মাধ্যমে শনাক্ত করেন। তিনি আদালতকে আরও বলেন, সরকার যদি ২২ জুলাইয়ের মধ্যে সাড়া না দেয়, তাহলে তিনি অনির্দিষ্টকালের অনশনে যাবেন।
মে মাসে দিল্লিতে একটি বিশেষ এনআইএ আদালত তাকে সাজা দেওয়ার পরে জেকেএলএফ প্রধান বর্তমানে তিহার জেলে বন্দী। ২০১৯ সালের গোড়ার দিকে এনআইএ দ্বারা নথিভুক্ত করা সন্ত্রাস-তহবিলের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। রুবাইয়া অপহরণ মামলায় অভিযুক্ত অন্যরা হলেন জাভেদ আহমেদ মীর, মোহাম্মদ রফিক পাহলু, আলী মোহাম্মদ মীর, মোহাম্মদ জামান মীর, মঞ্জুর আহমেদ সোফি, ওয়াজাহাত বশির, মেহরাজ-উদ-দিন শেখ, ইকবাল আহমেদ গান্দ্রু এবং শওকত আহমেদ বকশী।
তদন্তের সময় অভিযুক্ত জামান মীর, আলী মোহাম্মদ মীর এবং ইকবাল গান্দ্রু স্বেচ্ছায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তাদের ভূমিকার কথা স্বীকার করেন। এছাড়া আরও চারজন সিবিআইয়ের পুলিশ সুপারের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।