সংক্ষিপ্ত
তালিবান নেতা মোল্লা আব্দুল ঘানি বরাদরের সঙ্গে হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা রহমানের বিবাদ প্রকাশ্যে আসছে। আফগানিস্তান রাষ্ট্রপতি ভবনে দুই নেতার অনুগামীরা বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিল।
ক্ষমতা দখলের এক মাসের মধ্যে তালিবান নেতারা বিরোধে জড়িয়ে পড়ছেন। একটি সূত্র দাবি করছে, আফগানিস্তান জয়ের কৃতিত্ব কে নেবে তাই নিয়েই তালিবানদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। রীতিমত দুটি শিবিরে ভাগ হয়ে গিয়েছে তালিবানরা। একদিন মোল্লা আব্দুল ঘানি বরাদর ও তাঁর অনুগামীরা রয়েছে। অন্যদিকে রয়েছে হাক্কানি নেটওয়ার্কের সদস্যরা। বরাদরের অনুগামীদের কথায় আফগানিস্তান জয়ের কৃতিত্ব তাদেরই। তাদের দাবি শান্তি চুক্তির জন্যই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু হাক্কানি অনুগামীরা এই তত্ত্ব মানতে নারাজ। তাদের দাবি ক্রমাগত যুদ্ধ আর রণকৌশলই আফগান জয়ের কারণ।
সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরে নিখোঁজ ছিল তালিবান সহপ্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আব্দুল ঘানি বরাদর। সেই সময়ই সামনে এসেছে তালিবানদের গোষ্ঠী কোন্দলের কথা। অন্তবর্তী মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে দুই শিবিরের মধ্যে বিভেদ প্রকাশ্যে আসে। বিবিসি পাস্তুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতির প্রসাদে তালিবান ও হাক্কানি গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে মতানৈক্য তুঙ্গে ওঠে। দুই শিবিরের সদস্যরাই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে শুরু করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
রাজা নাও হতে পারেন প্রিন্স চার্লস, প্রথা ভেঙে কে হবেন ব্রিটিশ রাজ সিংহাসনের দাবিদার
কাবুল দখলের পরই অনুমান করা হয়েছে আব্দুল ঘানি বরাদরের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু তালিবানরা সেই দাবি প্রত্যাক্ষাণ করেছে। সম্প্রতি বরাদরের একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে তিনি দাবি করেছেন তিনি সুস্থ রয়েছেন। বেঁচে রয়েছেন। একটি সূত্র দাবি করছে কাবুল দখলের পর থেকেই দুই শিবিরের মধ্যে স্নায়ু যুদ্ধ চলছিল। মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে তা তীব্র আকার নেয়। কারণ তালিবানরা হাক্কানি নেটওয়ার্ককে ততটা গুরুত্বদিতে নারাজ ছিল প্রথম থেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানিয়েছে, হাক্কানি নেটওয়ার্কের একাধিক দাবি দাওয়ার কারণেই তালিবানরা বারবার মন্ত্রিসভা গঠনের অনুষ্ঠানিক ঘোষণা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল। কাতারে তালিবানদের রাজনৈতিক নেতাদের কার্যালয়ও হাক্কানিদের গুরুত্ব দিতে নারাজ ছিল। কিন্তু পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর মদতে তালিবান মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ জায়গা পেয়েছিল হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান খালিল উর রহমান হাক্কানি।
অন্যদিকে তালিবানদের সঙ্গে হাক্কানিদের বিরোধের পাশাপাশি উত্তর ও পূর্ব আফগানিস্তানের নেতাদের বিরোধও সামনে আসছে। তালিবানরা বিশেষত বরাদর চেয়েছিলেন বিভিন্ন আফগান উপজাতী নেতাদের নিয়ে সরকার গঠন করতে। পাশাপাশি আফগান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদেরও গুরুত্ব দিতে। কিন্তু হাক্কানিরা তা হতে না দেওয়ায় রীতিমত অসন্তুষ্ট বরাদর। যদিও তালিবানদের একটি গোষ্ঠী এই বিবাদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের দাবি বরাদর নিজের জন্মভূমি কান্দাহারে রয়েছে। তিনি তালিবান শীর্ষ নেতা হাইবাতুল্লা আখুন্দাজাদার সঙ্গে দেখা করেছেন। কিন্তু দীর্ঘ দিনের যুদ্ধ শেষ হওয়ায় তিনি এখন বিশ্রাম চান।
Climate Change: তবে কি জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়ঙ্কর থাবা পড়ছে এই রাজ্যে, সামনে এল সরকারি তথ্য
Afghan Crisis: তালিবান রাজত্বে চরম আর্থিক সংকট, ঘটিবাটি বিক্রি করে দেশ ছাড়তে মরিয়া আফগানরা
তবে তালিবানরা যে হাক্কানি নেটওয়ার্কের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ তালিবানরা সরকার গঠনের আগেই হাক্কানি নেটওয়ার্ক একাধিক পদে নিয়োগ করেছিল। যা মেনে নেয়নি তালিবানরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তানের নাক গলানোও তালিবানরা পছন্দ করেনি। সম্প্রতি তালিবান এক নেতার ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। একটি সূত্র বলছে তালিবানরা আগের মত কঠোর শাসন ব্যবস্থা লাগু করতে রাজি ছিল না। কিন্তু সহযোগী গোষ্ঠীগুলির চাপে পড়ে সেই রাস্তা থেকে পিছিয়ে আসতে হয়েছে তাদের। যা নিয়ে রীতিমত অসন্তোষ রয়েছে তালিবান শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে।
'