সংক্ষিপ্ত

দুই ক্ষমতাধর নারীর মধ্যেই দোলা দিচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতি। জানিয়ে রাখি যে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। অন্যদিকে, খালেদা জিয়া একজন প্রাক্তন সেনা অফিসার ও রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী।

খুব জনপ্রিয় একটা প্রবাদ আছে যে দুটি তলোয়ার এক খাপে থাকতে পারে না। একটু খেয়াল করলেই দেখবেন বাংলাদেশের পুরো রাজনীতি এই প্রবাদকে ঘিরেই আবর্তিত। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নতুন জাতি হিসেবে আবির্ভূত বাংলাদেশের ইতিহাস বিদ্রোহ ও রক্তপাতে ভরপুর। আর অভ্যুত্থানে ভরা এ দেশের ইতিহাসের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন দুই মহিলা। শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া এবং তাদের শত্রুতাকে বলা হয়- বেগমদের যুদ্ধ।

এই দুই ক্ষমতাধর নারীর মধ্যেই দোলা দিচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতি। আধিপত্য ও অস্তিত্ব নিয়ে শুরু হওয়া এই কাল্ট দ্বন্দ্বের গভীরে যাওয়ার আগে, জানিয়ে রাখি যে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। অন্যদিকে, খালেদা জিয়া একজন প্রাক্তন সেনা অফিসার ও রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। দুজনই প্রভাবশালী পরিবারের এবং নিজ নিজ পরিবারের রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।

হাসিনা ও খালেদার রাজনৈতিক প্রবেশ

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। ১৯৭৫ সালের অভ্যুত্থানে শেখ মুজিবকে তার স্ত্রী ও তিন ছেলেসহ হত্যা করা হয়। বাংলাদেশে যখন এসব হচ্ছে, তখন শেখ হাসিনা তার স্বামী ও বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে জার্মানিতে ছিলেন। তখন শেখ হাসিনার বয়স ছিল মাত্র ২৮ বছর।

এই একই বছরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে কয়েকজন বিদ্রোহী সেনা কর্মকর্তার হাতে নিহত হন। জিয়াউর রহমানকে হত্যার পর তার স্ত্রী খালেদা জিয়া রাজনীতিতে আসেন। এভাবে উভয় দলেরই কমান্ড নারীদের হাতে চলে আসে এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে আধিপত্যের খেলা আবার শুরু হয়।

শেখ হাসিনা দেশের বাইরে আর খালেদা জিয়া কারাগারের বাইরে

শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার মধ্যে আধিপত্যের এই লড়াইয়ে বারবার ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। বহু দশকের এই অন্তহীন যুদ্ধের শেষ নেই। হাসিনা-খালেদার এই যুদ্ধ নিজেকে ক্ষমতার কেন্দ্রে রাখার চেয়ে অন্যকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখা নিয়ে। এরই ফল হল বারবার আগুনে পুড়ছে বাংলাদেশ।

২০০৯ সাল থেকে একটানা প্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত থাকা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ হারিয়েছেন। দেশ ছেড়ে পলাতক। অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করতে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। তাই তার কাল্ট শত্রু খালেদা জিয়া জেল থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন। তিনি দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৮ সাল থেকে কারাগারে রয়েছেন। কিন্তু এখন কি বাংলাদেশের ভাগ্য নিয়ে সন্দেহ আছে? সেনাবাহিনী অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করতে যাচ্ছে, এই সরকারে খালেদার ভূমিকা কী হবে? বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হবে? কী হবে শেখ হাসিনার? এসব প্রশ্ন এখনো রয়ে গেছে।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।