সংক্ষিপ্ত

চিনা সেনারা বর্ডারের পিলারগুলিকে সরিয়ে দিয়েছে যা এক পাশ থেকে অন্য দিকে চিহ্নিত করে। এই কারণে, নেপালের গোর্খা জেলার আনুমানিক ১৯০টি পরিবার "চিনা ভূখণ্ডের" অংশ হয়ে উঠেছে।

একদিকে তথাকথিত বন্ধুরাষ্ট্রের উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকার সাহায্য, অন্যদিকে সেই বন্ধুরাষ্ট্রের জমিতেই জবরদখল। এই দুমুখো নীতি একমাত্র চিনের পক্ষেই নেওয়া সম্ভব। প্রকাশিত বেশ কিছু মিডিয়া রিপোর্ট জানাচ্ছে চিন নেপাল সীমান্তের বেশ কিছু এলাকায় অর্থাৎ নেপালের সীমান্তবর্তী এলাকায় জবরদখল করেছে চিনা সেনা। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মাস পর্যন্ত দখল অংশটি সীমানা বা বেড়া দেওয়া হয়নি। এই সীমান্ত এলাকাটি স্থানীয়রা কোনো বাধা ছাড়াই এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করত, কিন্তু গত মাস থেকে, চীনা সেনাদের বেড়া দিয়ে ঘেরা এলাকায় মোতায়েন করা রয়েছে। নেপাল থেকে আসা লোকজনকে পার হতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। 

নেপালি পত্রিকা অন্নপূর্ণা পোস্ট প্রথম এই ঘটনাটি প্রকাশ করে। তবে নেপালের বিদেশমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া এই বিষয়ে মেলেনি। এ রিপোর্ট গণমাধ্যমে আসা পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ভারতের লাদাখে চিনা সেনারা একই কৌশল অবলম্বন করেছিল, যার কড়া জবাব দিয়েছিল ভারত। ফলস্বরূপ ২০২০ সালের জুনে গালওয়ানে ২০ জন ভারতীয় সৈন্য এবং অগণিত চিনা সেনার মৃত্যু হয়েছিল।

এই প্রথম নয় যে চিন নেপালের মালিকানাধীন জমি এমনভাবে দখল নেওয়ার চেষ্টা করেছে। ২০২০ সালের জুনে, এমনকি যখন বিশ্ব করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তখনও খবর প্রকাশিত হয়েছে যে চিন হুমলা, রাসুওয়া, শঙ্খুয়াসভা এবং সিন্ধুপালচোক জেলা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা নেপালের অন্তত ২৮ হেক্টর জমি দখল করেছে। গোর্খা জেলার অন্তর্গত একটি রুই গ্রামও চীন দখল করে নিয়েছে।

চিনা সেনারা বর্ডারের পিলারগুলিকে সরিয়ে দিয়েছে যা এক পাশ থেকে অন্য দিকে চিহ্নিত করে। এই কারণে, নেপালের গোর্খা জেলার আনুমানিক ১৯০টি পরিবার "চিনা ভূখণ্ডের" অংশ হয়ে উঠেছে। এখানে উল্লেখ করা জরুরি যে দীর্ঘ প্রতিক্ষিত চিন-নেপাল রেলওয়ে প্রকল্পটিও রাসুয়ার মধ্য দিয়ে যাবে। চলতি বছরের মার্চে চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল নেপালের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা এবং বিদেশমন্ত্রী ডঃ নারায়ণ খাদাকার। সেই বৈঠকে যাতে ২০১৬ সালে স্বাক্ষরিত প্রকল্পটি যথাসময়ে সম্পন্ন হয়, তার অনুরোধ করা হয়। দুই পক্ষের মধ্যে মার্চ মাসে নয়টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যার মধ্যে দুটি রেল প্রকল্পও ছিল। নেপালে চিন যে প্রকল্পগুলো নির্মাণ করছে তার মধ্যে এই প্রকল্পটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বারবার নেপালকে সতর্ক করে আসছেন যাতে তারা চিনের "ঋণের ফাঁদে" না পড়ে, যেটি প্রাথমিকভাবে খুব কম হারে আর্থিক সাহায্য দেয়, কিন্তু তারপর ঋণখেলাপি দেশের স্থাবর সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করে চিন। যেরকম বর্তমানে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি হয়েছে।