সংক্ষিপ্ত
শীর্ষস্থানীয় স্যাটেলাইট চিত্র বিশেষজ্ঞ সংস্থা ডি-আর্টিস সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকটি ছবি শেয়ার করেছে। সেখানেই বার্তা দিয়ে দাবি করা হয়েছে, ডোকলাম মালভূমির কাছে ভূটান আর চিনের বেশ কিছু জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে।
ভারত নেপালের পাশাপাশি চিনের টার্গেট ভূটানও (Bhutan)। সেখানেই অবৈধভাবে জমি দখলের চেষ্টা করেছে চিন (China)। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি স্যাটেলাইট ইমেজ ঘিরে তেমনই জল্পনা তৈরি হয়েছে। ছবিতে দেখাচ্ছে গত এক বছরে প্রায় চারটি নতুন গ্রাম তৈরি করেছে চিনারা। স্যাটেলাইট ইমেজে দাবি করা হয়েছে গ্রামগুলি ২০২০ সালের মে থেকে ২০২১ সালের নভেম্বরের মধ্যে তৈরি করা হয়েছে।
শীর্ষস্থানীয় স্যাটেলাইট চিত্র বিশেষজ্ঞ সংস্থা ডি-আর্টিস সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকটি ছবি শেয়ার করেছে। সেখানেই বার্তা দিয়ে দাবি করা হয়েছে, ডোকলাম মালভূমির কাছে ভূটান আর চিনের বেশ কিছু জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। সেই জমিতেই ২০২০ -২০২১ সালের মধ্যে নির্মাণ কার্যকলাপ দেখা যাচ্ছে। একাধিক নতুন গ্রাম তৈরি হয়েছে। প্রায় ১০০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলছে নির্মাণকাজ। এই এলাকাটি এবার চিনের নতুন আঞ্চলিক দাবি প্রয়োগের অংশ হয়ে উঠবে।
২০১৭ সালে এই ডোকলাম মালভূমিতে ভূটানের ভূখণ্ডে রাস্তা তৈরির বিরোধিতা করেছিল ভারত। সেই সময় দীর্ঘ দিন ডোকলাম এলাকায় ভারত ও চিনা সেনারা মুখোমুখি অবস্থান করেছিল। পরবর্তীকালে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও এখনও সেই বিবাদের কোনও সমাধান হয়নি। তাই চিনের এই পদক্ষেপ শুধু ভূটান নয় ভারতের কাছেও যথেষ্ট উদ্বেগের।
তবে এই ছবিগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ একাধিক দেশের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হতে পারে। কারণ এই ছবিগুলি রীতিমত জ্বলন্ত উদাহরণ প্রতিবেশীদের সীমান্তে চিনের অগ্রগতি ও দখলদারির নীতির। প্রতিবেশী দেশের জমি দখলের জন্য বেজিং কী জাতীয় কৌশল অবলম্বন করেছে তাও স্পষ্ট এই স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে।
যদিও এটি ভূটানের আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিষয়। কিন্তু চিনের এই পদক্ষেপ নিয়ে ভারতেরও শঙ্কা বাড়তে পারে। কারণ দীর্ঘ দিন ধরেই ভারত ভূটানের পাশেপ থাকেছে। বিদেশ নীতি নিয়ে ভূটানকে একাধিক বিষয় পরামর্শ দিয়ে আসছে ভারত। পাশাপাশি ভূটানি সেনা বাহিনীকেও ভারত প্রশিক্ষণ দেয়। অন্যদিকে ভূমি সীমানা পুনর্বিবেচনার জন্য চিন ক্রমশই ভূটানের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে।
Sudan: সেনার দখলে সুদান, প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে গুলিতে ঝাঁঝরা ১৫
Kulbhushan Jadhav: বিল পাশ পাক সংসদে, মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আবেদন করতে পারবেন কুলভূষণ যাদব
ডোকলাম মালভূমি ছাড়াও চিন সাক্টেং বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্যকেও নিজেদের বলে দাবি করেছে। এটি পূর্ব ভূটানের একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। যদিও এক আগে বেজিং-এর শীর্ষ নেতৃত্ব এজাতীয় কোনও দাবি করেনি। কিন্তু শি জিংপিং যে অন্য নীতি নিয়ে চলছেন তা স্পষ্ট হচ্ছে। গত বছর জুলাই মাসেই চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ভূটান ও চিনের মধ্যে ভূমি সীমানা নির্ধারণ না করে এজাতীয় আরও একাধিক সমস্যা দেখা দিয়েছে।
এর আগে চিনা প্রায় একই পদক্ষেপ নিয়ে ভারতের ক্ষেত্রে। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে পূর্ব লাদাখ সেক্টরে চিনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারতীয় সেনারা। প্যাংগং লেক থেকে শুরু করে দোপসাং উপত্যকাসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় লাল ফৌজদের দমিয়ে রাখতে কঠোর অবস্থায় ভারতীয় সেনার। প্রবল শীত, প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করেই দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রাখতে মোতায়েন রয়েছে ভারতীয় সেনা জওয়ানরা। চিনা আগ্রাসন রুখতেই গালওয়ানে শহিদ হয়েছে ২০ ভারতীয় জওয়ান। প্রায় একই অবস্থা নেপালেও। সেখানেও সীমান্ত নিয়ে সমস্যা রয়েছে চিনের সঙ্গে। চিনের তাবেদারি করে পদও খোয়াতে হয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে। তেমনই দাবি করেন সেদেশের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।