সংক্ষিপ্ত
- বিশ্ব সাক্ষী একাধিক ড্রোন হামলার
- একের পর এক ড্রোন হামলায় ক্ষতি যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্রের
- পাক জঙ্গিদের হাতেও ড্রোন
- আকাশপথে যুদ্ধে নকশা বদলে দিচ্ছে ড্রোনের ব্যবহার
জম্মু বিমানবন্দরে যেভাবে ড্রোন হামলা চালাল পাক জঙ্গিরা, তা আশঙ্কার মেঘ আরও ঘনীভূত করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভারতে এটাই প্রথম ড্রোন হামলা। বিশেষজ্ঞদের ধারণা ভবিষ্যতের যুদ্ধের নকশা বদলে দেবে এই ড্রোন হামলা। বিশেষত আনম্যানড ড্রোন দিয়ে হামলা সমস্যা আরও বাড়াতে পারে।
এর আগে একাধিকবার বার ভারত সীমান্ত দিয়ে ড্রোন উড়তে দেখা গিয়েছে, এমনও ঘটনা ঘটেছে বিএসএফ গুলি করে নামিয়েছে ড্রোনকে। এমনকী কাশ্মীর উপত্যকায় ড্রোন দিয়ে অস্ত্র পাচারের ঘটনাও নতুন নয়। কিন্তু ড্রোন দিয়ে নাশকতা মূলক হামলা ভারতের মাটিতে এই প্রথম। তবে ভারতে প্রথম বার হলেও, বিশ্বের যুদ্ধ মানচিত্র একাধিকবার ড্রোন হামলার সাক্ষী থেকেছে।
হামলার নয়া ধাঁচ পাক জঙ্গিদের, ভারতে এই প্রথম ড্রোন হামলা জম্মু বিমান বন্দরে
১. ২০১৮ সালে পশ্চিম সিরিয়ায় তৈরি রাশিয়ার খেমেইমিম এয়ারবেসে হামলা চালানোর পরিকল্পনা হয়েছিল ড্রোনের মাধ্যমে। প্রায় ১৩ টি ড্রোন ঝাঁক বেঁধে এয়ারবেসের খুব কাছ দিয়ে উড়ছিল, আচমকাই নজরে পড়ে জওয়ানদের। সঙ্গে সঙ্গে গুলি চালায় এয়ার ডিফেন্স অপারেটররা। সাতটি ড্রোনকে গুলি চালিয়ে নামানো হয়। ৬টি ড্রোনকে জ্যাম করে দেওয়া হয় তখনই।
২. ২০১৮ সালের ১৫ই জানুয়ারি আফগানিস্তানে মার্কিন ড্রোন হামলায় কমপক্ষে ১৭ আইএস জঙ্গি নিহত হয়। আফগানিস্তানের নানগারহার প্রদেশের কাছে আইএস জঙ্গিরা লুকিয়ে আছে, এমন খবরে মার্কিন বাহিনী সেখানে ড্রোন হামলা শুরু করে।
৩. ২০১৮ সালের ৯ই মার্চ আফগানিস্তানে মার্কিন ড্রোন হামলায় জঙ্গি সংগঠন তেহরিক ই তালিবানের ২০ জন সক্রিয় সদস্য নিকেশ হয়। আফগান প্রদেশ কোনারে তেহরিক গোষ্ঠীর অন্যতম মাথা ফজলুল্লাহ লুকিয়ে রয়েছে, এই খবর পেয়েই হামলা চালায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন।
৪. ২০১৯ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের আরামকো তেল প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে একটি তেলের খনি ও বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল শোধনাগার কেন্দ্রে ড্রোন হামলা চলে। ইরান সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠী হুথি ২৫টি ড্রোন নিয়ে হামলা চালায়। বলা হয় এটিই সৌদিতে সবচেয়ে ভয়াবহ ড্রোন হামলা। তবে সৌদি এয়ার ডিফেন্স তা কোনওক্রমে আটকে দেয়।
৫. ২০১৯ সালের ২১শে সেপ্টেম্বর মার্কিন ড্রোন হামলায় আফগানিস্তানের নানগারহার প্রদেশের খুগিয়ানি জেলার ওয়াজির তাঙ্গি এলাকায় অন্তত ৩০ জন ব্যক্তি নিহত ও ৪০ জন আহত হন। হতাহতরা কৃষক বলে জানা যায়। জঙ্গি সংগঠন আইএসের গোপন আস্তানা ভেবে বিশ্রামরত কৃষকদের ওপর বোমা ফেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
৬. ২০২০ সালে ১১ই সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় হুতি বিদ্রোহীরা। টুইটারে ওই সামরিক গোষ্ঠীর মুখপাত্র ইয়াহইয়া সারিয়া এই হামলার দায় স্বীকার করে। আল জাজিরা জানীয়, সৌদি কর্তৃপক্ষ কয়েকটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও বিস্ফোরকভর্তি ড্রোন নিষ্ক্রিয় করেছে।
৭. ২০২১ সালের ২০শে এপ্রিল সৌদির বিমানবন্দের ইয়েমেন ড্রোন হামলা চালায়। ইয়েমেনের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি জানিয়ে ছিলেন, সৌদির দক্ষিণাঞ্চলীয় আবহা বিমানবন্দরে ড্রোন হামলা চালানো হয়। কাসেফ-কে২ ড্রোন দিয়ে এই হামলা চালানো হয়েছে।
৮. ২০২১ সালের ২৬শে জুন আফগানিস্তানে তালিবানকে লক্ষ্য করে ফের দুটি ড্রোন হামলা চালায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্তানের উত্তরে বাঘলান এবং কুনদুজ প্রদেশে হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম ফক্স নিউজ। কুনদুজে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় তালিবানের তিন শীর্ষ কমান্ডার নিহত হয়।
ইসলামিক স্টেট বা তালিবানরা প্রায়ই ড্রোন ব্যবহার করে। অস্ত্র পাচার বা অর্থের লেনদেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ড্রোন ব্যবহার করে এই জঙ্গি সংগঠনগুলি। এক্ষেত্রে ধরা পড়লেও দলের লোকবলের ক্ষতি হয় না। ড্রোন দিয়ে হামলা চালানোও তাদের জন্য নিরাপদ বলে গণ্য করে জঙ্গি সংগঠনগুলি।