সংক্ষিপ্ত
মঙ্গলবার পূর্ব ইন্দোনেশিয়ায় আঘাত হানে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। এরপরেই সুনামি সতর্কতা জারি করে সেদেশের আবহাওয়া দফতর।
প্রবল ভূমিকম্প ইন্দোনেশিয়ায়(Indonesia Earthquake)। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৪ ম্যাগনিটিউড (7.4-magnitude)। মঙ্গলবার পূর্ব ইন্দোনেশিয়ায় আঘাত হানে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প(earthquake)। এরপরেই সুনামি সতর্কতা(tsunami warning) জারি করে সেদেশের আবহাওয়া দফতর। তবে এই ভূমিকম্পে কোনও প্রাণহানি বা সম্পত্তিহানির খবর মেলেনি।
ভূমিকম্পটি ফ্লোরেস সাগরের ১১২ কিমি উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত ফ্লোরেস দ্বীপের পূর্ব অংশের লারানতুকা শহরে আঘাত হানে। মাটি থেকে ১২ কিলোমিটার গভীরে ছিল এর উৎস। ফ্লোরেসের মাউমেরে শহরের বাসিন্দা অগাস্টিনাস ফ্লোরিয়ানাস জানান, "সবাই দৌড়ে রাস্তায় চলে গেল।" ১৯৯২ সালে একই মাত্রার ভূমিকম্পে মাউমেরে খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
সেদেশের মালুকু, পূর্ব নুসা টেঙ্গারা, পশ্চিম নুসা টেঙ্গারা এবং দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ সুলাওয়েসি অঞ্চলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে পরে বলেছে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.৩। প্রথম ভূমিকম্পের পর ৫.৬ মাত্রার একটি আফটারশক লারানতুকাতে আঘাত হানে বলে জানায় ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া বিভাগ। লারানতুকার এক বাসিন্দা জাকারিয়াস জেন্টানা কেরানজ জানান, ভূমিকম্পের সময় ওপরে ও নীচে প্রবল ভাবে দুলছিল। অনেকটা ঢেউয়ের মতো অনুভূত হয়েছিল।
লারানতুকার ইস্ট ফ্লোরেস দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থার প্রধান আলফনস হাদা বেটান বলেছেন, এখনও পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। কয়েক মিনিট ধরে ভূমিকম্প অনুভূত হয় মঙ্গলবার। তবে আতঙ্কে অনেক বাসিন্দা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই তা ভাইরাল হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক সুনামি ওয়ার্ণিং সেন্টার জানিয়েছে ভূমিকম্পের যে মাপকাঠিতে সুনামি সতর্কতা তৈরি হয়, এই কম্পন সেরকম বিপজ্জনক ছিল। এর ফলে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের এক হাজার কিলোমিটার (৬২১.৩৭ মাইল) মধ্যে অবস্থিত উপকূলের জন্য বিপজ্জনক সুনামি তরঙ্গ ওঠার আশঙ্কা ছিল।
আবহাওয়াবিদ মহম্মদ স্যাডলি সাংবাদিকদের জানান, স্থানীয় বাসিন্দাদের সমুদ্র সৈকত থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সুনামি সতর্কতা জারি হওয়ার কমপক্ষে দুই ঘন্টা পরে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। তবে সতর্ক থাকা জরুরি। ইন্দোনেশিয়া “প্যাসিফিক রিং অফ ফায়ার”-এ বিস্তৃত, ভূমিকম্পপ্রবণ একটি এলাকা যা একাধিক টেকটোনিক প্লেটের উপরে অবস্থান করে।
বিজ্ঞানীরা বলেন পৃথিবীর টেকটোনিক প্লেটগুলির সীমান্তবর্তী 'রিং অফ ফায়ার' এলাকায় অবস্থিত এই দেশ। এই অঞ্চলটি বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসাবে পরিচিত। ফলে প্রায়শই ভূমিকম্পের কবলে পড়ে এই দেশ। চৌঠা ডিসেম্বর জাভা দ্বীপে মাউন্ট সেমেরু আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাতের সময় কমপক্ষে ৪৮ জন মারা যান ও শতাধিক আহত হয়।