সংক্ষিপ্ত

পড়াশোনার জন্য বহু বছর ধরেই ইউক্রেনে পাড়ি দেন বহু ভারতীয়। একইভাবে সেখানে পড়ে গিয়েছিলেন অভিষেক। ১৯৯৫ সালে খারকিভে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ করেন তিনি। কিন্তু, তারপর আর দেশে ফেরেননি। খারকিভেই ব্যবসা শুরু করেন। তাঁর ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ফার্ম রয়েছে সেখানে। 

ইউক্রেন (Ukraine), এই নামেই এখন গ্রাস করছে আতঙ্ক। আগে এই দেশে পড়াশোনা (Study) করতে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকতেন অনেকেই। কিন্তু, গত মাস থেকেই সেখানে বদলে গিয়েছে ছবিটা। ছবির মতো সাজানো শহর আজ পুরোপুরি তছনছ হয়ে গিয়েছে। সেখানে সেখানে পড়ে রয়েছে মৃতদেহ (Dead Body)। ভেঙে পড়েছে ঘর-বাড়ি, অফিস, স্কুল (Office-School) সবই। রুশ সেনার (Russian Army) হামলায় ইউক্রেনের অবস্থা রীতিমতো বিধ্বস্ত। আজ ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের (Ukraine Russia Conflict) একাদশতম দিন। যতদিন যাচ্ছে ততই খারাপ হচ্ছে ইউক্রেনের পরিস্থিতি। আর সেই কারণেই নিজের ও পরিবারের প্রাণ বাঁচাতে বাড়ি ঘর ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি দিচ্ছেন অনেকেই। সেই তালিকায় রয়েছেন অভিষেক কুমারও (Abhishek Kumar)। পোল্যান্ড ইউক্রেন সীমান্তে এশিয়ানেট নিউজের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বললেন তিনি।  

পড়াশোনার জন্য বহু বছর ধরেই ইউক্রেনে পাড়ি দেন বহু ভারতীয় (Indian)। একইভাবে সেখানে পড়ে গিয়েছিলেন অভিষেক। ১৯৯৫ সালে খারকিভে ইঞ্জিনিয়ারিং (Engineering) পড়া শেষ করেন তিনি। কিন্তু, তারপর আর দেশে ফেরেননি। খারকিভেই (Kharkiv) ব্যবসা শুরু করেন। তাঁর ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ফার্ম রয়েছে সেখানে। ব্যবসার পাশাপাশি সেখানে বিয়ে করেন নাতাশা নামে এক ইউক্রেনিয়ান মহিলাকে। তাঁদের দুই সন্তানও রয়েছে। ব্যবসা পরিবার সব নিয়েই এতদিন সুখেই ছিলেন তিনি। এক কথায় এতদিনে মনে প্রাণে ইউক্রেনেরই এক বাসিন্দা হয়ে উঠছিলেন। কিন্তু, ২৪ ফেব্রুয়ারি এক ঝটকা ভেঙে যায় তাঁর ছবির মতো সাজানো সব কিছুই। ভিটেমাটি, ব্যবসা ছেড়ে শুধুমাত্র প্রাণ বাঁচাতে এখন নিজের ভারতের বাড়িতে ফিরতে চলেছেন তিনি। 

আরও পড়ুন- এবার টার্গেট সাধারণ নাগরিক, শহর ছাড়ার চেষ্টা করতেই ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে এল গুলি

এশিয়ানেটকে অভিষেক বলেন, "২০১৪ সালেও ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু, তখন পরিস্থিতি এতটা খারাপ হয়নি। আমরা ভাবতেই পারিনি এবার পরিস্থিতি এইরকম হয়ে যাবে। প্রথম দিকে খুব একাট গুরুত্ব দিচ্ছিলাম না। পরে পরিস্থিতি যখন খারাপ হতে শুরু করল তখন পরিবার নিয়ে ভারতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। কারণ ক্ষেপণাস্ত্র আমার বাড়ির ঠিক পাশেই এসে পড়েছিল। আর তার তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে বাড়ির জানলা ও দরজার কাচ ভেঙে গিয়েছে। তাই সব ছেড়ে ভারতে নিজের বাড়িতে ফিরছি। ভারত ছাড়া আর কোন জায়গা এতটা নিরাপদ হবে। সেখানে আমার বাড়ির সবাই রয়েছে। তারা সবাই চিন্তা করছে।"

আরও পড়ুন- ইউক্রেনে ভারতীয়দের উদ্ধারে মোদীর ভূমিকা তাক লাগিয়েছে- এশিয়ানেটকে সাক্ষাতকার রাষ্ট্রদূতের

অভিষেকের মেয়ে অঞ্জলির বয়স ১৮ বছর। ইউক্রেনেই বড় হয়েছেন তিনি। এখন তিনি মেডিকেলের ছাত্রী। কিন্তু, নিজের দেশের অবস্থা এমনই যে ইচ্ছে না থাকলেও সেই দেশকে ছেড়ে যেতে হচ্ছে। অবশ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেলে আবার ওই দেশের মাটিতেই ফেরার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর। আর ফিরবেন নাই বা কেন তাঁর সেখানেই যে রয়েছে তাঁর কলেজ, বন্ধু ও ছেলেবেলা। এই পরিস্থিতিতে বন্ধুরা কেমন রয়েছে তাও জানেন না তিনি। তাই ইচ্ছে না হলেও নিজের দেশকে ছেড়ে এখন ভারতে পাড়ি দিতে হচ্ছে তাঁদের। শুধুমাত্র প্রাণ বাঁচাতে। কারণ আগামীদিন আরও ভয়াবহ হতে চলেছে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতারা। 

আরও পড়ুন- 'ইউক্রেনে ভারতীয় দূতাবাস কিছু সাহায্য করেনি, ঝুঁকি নিয়েই পোল্যান্ড যাই', সাফ জানাল সৌমাল্য

পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে খারকিভ থেকে বাসে করে পোল্যান্ড সীমান্তে এসে পৌঁছে গিয়েছেন অভিষেক। সেখান থেকেই পাড়ি দেবেন ভারতে নিজের বাড়িতে। এই মুহূর্তে মা-বাবার আশ্রয় সবচেয়ে নিরাপদ। এমনটাই মনে করছেন অভিষেক কুমার। পাশাপাশি যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে ভারতীয়দের উদ্ধারে মোদী সরকারের উদ্যোগে প্রশংসাও করেছেন তিনি। 

"