সংক্ষিপ্ত
'ইউক্রেনে ভারতীয় দূতাবাস কিছু সাহায্য করেনি, ঝুঁকি নিয়েই পোল্যান্ড যাই', চরম উৎকন্ঠা কাটিয়ে ইউক্রেন থেকে বাঁকুড়ায় ফিরে অভিযোগ সৌমাল্যর। ছেলে ফিরে আসায় আপাতত স্বস্তির নিশ্বাস পেল বাঁকুড়া শহরের কেন্দুয়াডিহি উত্তরপ্রনবানন্দ পল্লীর মুখোপাধ্যায় পরিবার।
চরম উৎকন্ঠা কাটিয়ে ইউক্রেন (Russia Ukraine War) থেকে বাঁকুড়ায় ফিরল সৌমাল্য।ডাক্তারী পড়তে গিয়েছিল ইউক্রেনে সেখানের যুদ্ধ পরিস্থিতির জেরে অনান্য ছাত্র ছাত্রীদের মতো নিজের বাড়ি ফিরে এল সৌমাল্য (Soumalya Mukherjee) । প্রবল উৎকন্ঠায় থাকা পরিবার ছেলে ফিরে আসায় আপাতত স্বস্তির নিশ্বাস পেল বাঁকুড়া শহরের কেন্দুয়াডিহি উত্তরপ্রনবানন্দ পল্লীর মুখোপাধ্যায় পরিবার।
ইউক্রেন জুড়ে একের পর বোমা, মিসাইল হানা
বাঁকুড়া শহরের উত্তর প্রনবানন্দপল্লীর বাসিন্দা সৌমাল্য মুখোপাধ্যায়। বাবা উত্তম মুখোপাধ্যায় পেশায় হাই স্কুলের শিক্ষক। মা সোমা মুখোপাধ্যায় গৃহবধূ। দুই ছেলেকে স্ত্রীকে নিয়ে উত্তম বাবুর সংসার। ইউক্রেনের ভিয়েন খারাজিন খারকিভ ন্যাশান্যাল ইউনিভার্সিটিতে ডাক্তারী পড়ায় সুযোগ পায় বাঁকুড়ার মেধাবী ছাত্র সৌমাল্য মুখোপাধ্যায়। ছেলের ডাক্তারী হওয়ার স্বপ্ন সফল করতে পিছপা হয়নি মুখোপাধ্যায় পরিবার। ২০২০ সালে ২০ জুন মাসে ডাক্তারী পড়ার লক্ষ্যে সৌমাল্য পৌঁছে যায় ইউক্রেনে ওই ইউনিভার্সিটিতে। গত বছর মে মাসে বাড়ি এসেছিল এবং মাস ছয় বাড়িতে কাটিয়ে ফের অক্টোবর মাসে ফিরে যায় সেখানে। তারপর থেকে সেখানেই ডাক্তারী পাঠরত বাঁকুড়ার মেধাবী ছাত্র সৌমাল্য মুখোপাধ্যায়। ২৪ ফেব্রুয়ারী থেকে ইউক্রেনে জ্বলছে যুদ্ধের আগুন। যত বাড়ছে ইউক্রেন জুড়ে একের পর বোমা, মিসাইল হানা ততই উদ্বেগ বেড়েছে বাঁকুড়ার সৌমাল্যের পরিবারের। যেদিন থেকে যুদ্ধ শুরু হয়েছে সেদিন থেকেই হোস্টেলের বাংকারে রাখা হয়েছিল মেডিক্যাল পড়তে যাওয়া পড়ূয়াদের। সেখান থেকেই মাঝে মাঝে বাবা মায়ের সঙ্গে কথা বলত সে। কিন্তু সেখানকার পরিস্থিতির খবরে প্রবল উৎকন্ঠা দিন কাটছিল পরিবারের। কীভাবে ছেলেকে ফিরে আসবে বাঁকুড়ায় সেই চিন্তায় রাতের ঘুম ছুটেছিল পরিবারের।
আরও পড়ুন, 'মেয়েদের সঙ্গে চরম নিষ্ঠুরতা দেখিয়েছে ইউক্রেন সেনা', অভিযোগ বালুরঘাটের বাসিন্দার
'ইউক্রেনে ভারতীয় দূতাবাস কিছু সাহায্য করেনি, আমরা নিজের ঝুঁকিতেই পোল্যান্ড পৌঁছেছি'
একদিকে আগুন, বোমা, গুলিতে ইউক্রেনের পরিস্থিতি যত অবনতি হচ্ছে ততই ছেলেকে নিয়ে আরও উদ্বেগ বেড়েছে পরিবারের। ছেলেকে সুস্থভাবে বাড়ি ফিরিয়ে দেবার আহ্বান করেছিল সৌমাল্যের পরিবার। অবশেষে উতকন্ঠার অবসান শনিবার রাতে বাঁকুড়ায় নিজের বাড়ি ফিরে আসে সৌমাল্য। খুশি পরিবার। তবে চোখের সামনে একের পর এক মিসাইল হানা, বোমা গুলির শব্দের আতঙ্ক এখনও কাটেনি সৌমাল্যর। বাড়ি ফেরার পর সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সৌমাল্য জানায়, ইউক্রেনে থাকাকালীন ভারতীয় দূতাবাসের থেকে শে কোনও সাহায্য পায়নি। পোল্যান্ডে পৌছে যাওয়ার পরেই ভারতীয় দূতাবাসের থেকে সাহায্য আসে। এই মাঝের পথটুকুতে নিজেদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই তাঁদের আসতে হয়েছে। সৌম্যাল্যের কথায় ,' আমাদেরকে ইউক্রেন থেকে বের করে আনা হয়নি। আমরা নিজেরাই বেরিয়ে এসেছি পয়লা মার্চ। ওখানে ভারতীয় দূতাবাস কিছু সাহায্য করেনি। ওরা শুধু প্রতিদিন নতুন নির্দেশিকা জারি করছিল। আমরা ভারত সরকারের সাহায্য পেয়েছি পোল্যান্ডে আসার পর। আমরা পুরোটাই নিজের ঝুঁকি নিয়ে সীমান্ত পার হয়েছি।'