সংক্ষিপ্ত
ইউক্রেন থেকে বহু ভারতীয় পড়ুয়া এসে পৌঁছে ছিলেন পোল্যান্ড সীমান্তে। এরপর সেখান থেকে তাঁদের উদ্ধার করে ফেরানো হয় দেশে। কিন্তু, পড়ুয়াদের ওই যাত্রা একেবারেই সহজ ছিল না।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন (War-Torn Ukraine)। চারিপাশে শুধুই আতঙ্কের ছবি। এক কথায় সাজানো গোছানো ইউক্রেনের রাস্তা এখন মৃত্যুপুরী। আর সেই ইউক্রেনে (Ukraine) এখনও আটকে রয়েছেন বহু ভারতীয় (Indian)। আবার অনেকে ইতিমধ্যেই নিরাপদে দেশে ফিরতে পেরেছেন। কিন্তু, এই যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা থেকে নিরাপদে বেঁচে ফেরাটাই তাঁদের কাছে এক বড় চ্যালেঞ্জের বিষয় ছিল। ওই এলাকা থেকে বহু ভারতীয়কে উদ্ধার করতে সাহায্য করেছিল মালায়ালি স্বেচ্ছাসেবকরা (Malayalee volunteer)। অবশ্য উদ্ধারকাজ (Rescue Operation) একেবারেই সহজ ছিল না বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
ইউক্রেন থেকে বহু ভারতীয় পড়ুয়া এসে পৌঁছে ছিলেন পোল্যান্ড সীমান্তে (Poland Border)। এরপর সেখান থেকে তাঁদের উদ্ধার করে ফেরানো হয় দেশে। কিন্তু, পড়ুয়াদের ওই যাত্রা একেবারেই সহজ ছিল না। বিশ্ব মালায়ালি ফেডারেশনের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এশিয়ানেট নিউজের (Asianet News) প্রতিনিধি প্রশান্ত রঘুবংশম। কীভাবে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে ভারতীয় পড়ুয়াদের উদ্ধার করা হয়েছিল সেই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন মালায়ালি ফেডারেশনের সদস্যরা।
আরও পড়ুন- কখনও বাঙ্কারে আশ্রয়, আবার কখনও রাত জেগে সফর, ইউক্রেন যুদ্ধের আতঙ্ক এখনও চোখেমুখে
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে বের হওয়ার রাস্তা একেবারেই সহজ ছিল না। চারিপাশে তখন চলছিল গোলা-গুলি। তার মধ্যে দিয়েই কোনওরকমে প্রাণ হাতে করে নিয়ে সীমান্তে পৌঁছান তাঁরা। অনেক সময়তেই গাড়ি না পেয়ে পায়ে হেঁটে সীমান্তে পৌঁছাতে হয়েছিল তাঁদের। প্রায় ৪০ কিলোমিটার রাস্তা তীব্র ঠান্ডার মধ্যে পায়ে হেঁটে পাড়ি দিয়েছিলেন অনেকেই। এরপর ইউক্রেন পোল্যান্ড সীমান্তে পৌঁছানোর পর তা পেরতেই প্রায় ৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল তাঁদের। তারপর সেখান থেকে অনুমতি মেলার পর সীমান্ত পার করতে পারেন তাঁরা।
আরও পড়ুন- একটানা বোমাবর্ষণ রাশিয়ার, ইউক্রেনের সুমি থেকে ভারতীয়দের উদ্ধারকাজ ফের ব্যহত
প্রথম কয়েকদিন ছাত্ররা আসতে শুরু করলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাঁদের। আসলে কোন দিকে যাবেন তা বুঝতেই পারছিলেন না তাঁরা। ফোনের নেটও রাস্তায় সব সময় অন রাখা সম্ভব নয়। সেই কারণে কোন রাস্তা দিয়ে কোথায় পৌঁছাবেন তাও বুঝতে পারছিলেন না। প্রথম কয়েকটা দিন খুব কঠিন ছিল। অনেক দূরে চেকপোস্টে এসেছিলেন। ১৭০ কিলোমিটার দূরত্বে পৌঁছানোর পরে, ঠান্ডায় বাসের জন্য অপেক্ষা করা কঠিন। অবশ্য নিরাপদে সবাইকে উদ্ধার করা খুবই আনন্দের বিষয় বলে জানিয়েছেন ফেডারেশনের সদস্যরা। তাঁরা জানান, এক্ষেত্রে অনেকটা সাহায্য করেছে দূতাবাস। এছাড়া এতটা দীর্ঘ পথ অতিক্রম করার ফলে অনেকেরই সমস্যা দেখা দিয়েছিল শরীরে। কিন্তু, দূতাবাসের সাহায্যে তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়।
সুমি থেকে ফিরে আসা শিক্ষার্থীরা ইউক্রেন-পোল্যান্ড সীমান্ত থেকে এশিয়ানেট নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন। পাঞ্জাবের এক ছাত্রী জানান, খারকিভের দিনগুলো অসহনীয় ছিল। তাঁরা যখন পিচেসে পৌঁছেছিল তখন শান্তি পান। আর সেখানে ভারতীয় দূতাবাস থেকে প্রচুর সাহায্য পেয়েছিলেন।
এদিকে, ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাস সুমির শিক্ষার্থীদের শহর ছেড়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে সতর্ক করেছে। ইউক্রেনের পোলতাভা থেকে পশ্চিম সীমান্তে পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে। দূতাবাসের কর্মকর্তারা উদ্ধার অভিযানে সাহায্য করতে পোলতাভায় পৌঁছেছেন। শীঘ্রই সময় ও তারিখ ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে দূতাবাস। বিদেশ মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখন সুমিতে প্রায় ৭০০ পড়ুয়া আটকে রয়েছে। এদিকে কিয়েভে গুলিবিদ্ধ ছাত্র হারজোৎ সিংকে দেশে ফেরানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি কে সিংয়ের সঙ্গে দেশে ফিরবেন তিনি। তারপর তাঁকে দিল্লির একটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে। অবশ্য ইউক্রেন সীমান্ত দিয়ে ভারতের উদ্ধার অভিযান একেবারে শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।