সংক্ষিপ্ত

গত পাঁচ বছর ধরে এই দ্বীপের তন্ন তন্ন করে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল ইন্দোনেশিয়ার একদল মৎজীবী। অবশেষে তারা সেই গুপ্তধমনের সন্ধান পেয়েছে

অনেকটা ঠিক গল্প কথার মত। ঘুরতে ঘুরতে পাওয়া গেল গুপ্তধন (treasure)। আর সেই গুপ্তধনের মধ্যে ছিল রাশি রাশি সোনা। - সত্যি অনেকটা এমনই ঘটনাই ঘটেছে  ইন্দোনেশিয়া (Indinasia)। সেখানকার একদল মৎসজীবী ঘুরতে ঘুরতে সুমাত্রার (Sumatra) এমন এক দ্বীপের সন্ধান পেয়েছে যাকে সোনায় মোড়া দ্বীপ বললে খুব একটা ভুল হবে না। 

গত পাঁচ বছর ধরে এই দ্বীপের তন্ন তন্ন করে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল ইন্দোনেশিয়ার একদল মৎজীবী। অবশেষে তারা সেই গুপ্তধমনের সন্ধান পেয়েছে- রত্নপাথর, সোনার আংটি, পয়সা তোয় রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে বহু মূল্যবান ব্রোঞ্জের বুদ্ধসন্নাস্যীদের ব্যবহার করা ঘণ্টা। ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রার পালেমবাং এর কাছে মুসি নদীতে রাতের অন্ধকারেই এই বিপুল রত্নভাণ্ডার উদ্ধার হয়েছে। 

অনেক রূপকথার গল্পের সঙ্গে পাল্লাদিয়ে প্রচলিত গল্পও দীর্ঘ দিন ধরে দাবি করে আসছিল ইন্দোনেশিয়ায় রয়েছে গুপ্তধন। সেই গুপ্তধন মুসিনদীর ধারেই রয়েছে। সেই গল্পকথায় ভর করেই গত পাঁচ বছর ধরে সেদেশের একদল জেলে কুমীর-ভরা মুসি নদীতে জীবন হাতে নিয়ে তল্লাশি অভাযান শুরু করে দেয়। কঠোর পরিশ্রমের পর উদ্ধার হয়েছে বিপুল রত্ন সম্ভার। 

তবে উদ্ধার হওয়া সামগ্রীর মধ্যে যেটা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সেটা হল একটি বুদ্ধের মূর্তি। যেটি ৮ শতকের বলে দাবি করা হয়েছে। রত্নখচিত মূর্তির দাম কয়েক মিলিয়ন পাউন্ড হবে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গার্ডিয়ানের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এই নিদর্শনগুলি সবই 'শ্রীবিজয়া সভ্যতার'। ৭-১৩ শতকে এই এলাকায় একটি শক্তিশালী সাম্রাজ্য ছিল। ভারতের সঙ্গে এই সভ্যতার যোগাযোগ ছিল। কিন্তু আচমাকাই একটি এই সভ্যতা বিলুপ্ত হয়ে যায়।  কিন্তু কী কারণে তা বিলুপ্ত হয়ে যায়- তা স্পষ্ট নয় বিজ্ঞানীদের কাছে। 

Sameer Wankhede: রেহাই নেই সমীর ওয়াংখেড়ে, নথি দেখতে বাড়িতে তফসিলি জাতি কমিশন

https://bangla.asianetnews.com/international/amid-death-rumours-taliban-supreme-leader-haibatullah-akhundzada-makes-public-appearance-bsm-r1u64o

Video: ট্রেভির জলে কয়েন ছুঁড়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, জানেন কী হয় ঝরনায় পয়সা পড়লে

ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক শন কিংশলরির মতে, এই সাম্রাজ্য ছিল গড়ে উঠেছিল জল নির্ভর করে। তিনি বলেছেন এই সভ্যতা ছিল 'ওয়াটার ওয়ার্ল্ড'। এখানকার মানুষ নৌকা তৈরি ও তার ব্যবহার করে জানত। নৌকাকেই তাঁরা বাড়ি হিসেবেও ব্যবহার করত। কিন্তু একদিন এই সভ্যতার সলিল সমাধী ঘটে। জলের তলায় চলে যায় গোটা সভ্যতা- কাঠের বাড়ি, নৌকা, প্রাসাদ, মন্দির। 

প্রত্নতাত্ত্বকদের মতে শ্রীবিজয়া সভ্যতার সবথেকে বড় বৈশিষ্ট হল গোটা সভ্যতার কঠোর আইন মেনে চলত। নিরাপত্তার অত্যান্ত জোর দেওয়া হত। কিন্তু পুরো বিষয়টাই তৎকালীন বিশ্বের কাছ থেকে গোপন রাখা হয়েছিল। সেই সময় সাম্রাজ্যের রাজধানীতে ২০ হাজারেরও বেশি সৈন্য ছিল। অনেক বৌদ্ধভিক্ষুক বাস করতেন এখানে। এই সভ্যতার অনুসন্ধানের জন্য থাইল্যান্ড ও ভারতও অনুসন্ধান করেছিল। কিন্তু তা সফল হয়নি। কিন্তু গত পাঁচ বছর অনুসন্ধানের সময় একাধিন মূর্তি, ভাস্কর্য পাওয়া গেছে- যা প্রমাণ করে দিয়েছিল শ্রীবিজয় সভ্যতা কাল্পনিক ছিল না। 

প্রত্নতাত্ত্বিক কিংসলে বলেন, উদ্ধার অভিযানের সময় কিছু পাত্র পাওয়া গেছে। যা বলে সেই সময়ের মানুষ ঠিক কতটা উন্নত ছিল। ভারত আর পারস্যের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক  ছিল। চিনের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল। তল্লাশি অভিযানের সময় একটি রাহুর মূর্তি পাওয়া গেছে। যা প্রমাণ করে দিচ্ছে সেইসময়ের বাসিন্দারা হিন্দু ধর্মেও বিশ্বাসী ছিল। যা প্রমাণ করে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগের কথাও। গবেষকদের কথায় আগ্নিয়গিরি বা প্রবল বন্যার কারণে এই সভ্যতা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে।