সংক্ষিপ্ত

গালওয়ান উপত্যকায় রক্তাক্ত সংঘর্ষের পর কেটে গিয়েছে ৯ মাস

অবশেষে তাদের সেনা সদস্যদের মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকার করল চিন

নিহত হয়েছে ভারতীয় সেনাদের হুমকি দেওয়া পিএলএ-র নেতা কুই ফাবাও-ও

কী জানালো পিএলএ-র সরকারি সংবাদপত্র

নয় নয় করে কেটে গিয়েছে প্রায় নয় মাস। শুক্রবার, অবশেষে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিন সেনার মধ্যে হওয়া রক্তাক্ত সংঘর্ষে তাদের সেনাও নিহত হয়েছিল বলে স্বীকার করল চিন। এদিন চিনা পিএলএ-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত বছরের জুনে গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে হওয়া সংঘর্ষে তাদের চার সেনা কর্তা-কর্মী নিহত হয়েছিল। এমনকী, এক ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে যে চিনা সেনাকর্তাকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার (LAC) কাছে ভারতীয় সেনাদের হুমকি দিতে দেখা গিয়েছিল, সেও সেই সংঘর্ষে নিহত হয়েছে।

গত বছরের ১৫-ই জুন মধ্যরাতে ভারত ও চিন সেনার মধ্যে ওই মুখোমুখি রক্তাক্ত সংঘর্ষ হয়েছিল। তবে তারও মাসখানেক আগে থেকেই চিনা অনুপ্রবেশ ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। সেই সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। সেখানে উভয় পক্ষের সেনা সদস্যদের তীব্র বিতর্কে জড়াতে দেখা গিয়েছিল। পিএলএ-র শিনজিয়াং আর্মি কমান্ডের রেজিমেন্টাল কমান্ডার কুই ফাবাও-কে অত্যন্ত আক্রমণাত্মকভাবে ভারতীয় সৈন্যদের হুমকি দিতেও দেখা গিয়েছিল। কিন্তু, এদিন পিএলএ-র প্রকাশিত খবর অনুসারে ১৫-ই জুন রাতে ভারতীয় সেনাদের হাতে তার মৃত্যু হয়েছে। এদিন, চিন সরকার ফাবাও-কে 'বর্ডার গার্ডিং হিরো' উপাধি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে।

পিএলএ-র শিনজিয়াং আর্মি কমান্ডের রেজিমেন্টাল কমান্ডার কুই ফাবাও

তবে শুধু রেজিমেন্টাল কমান্ডার কুই ফাবাও-ই নন, ওই সংঘর্ষে ভারতীয় সেনাদের হাতে মোট চার চিন সেনা সদস্য নিহত হয়েছে, বলে দাবি করেছে  চিনা পিপলস লিবারেশন আর্মির সরকারি সংবাদপত্র 'পিএলএ ডেইলি'। উল্লেখ্য ওই সংঘর্ষের অব্যবহিত পরই ভারত সরকার জানিয়েছিল ভারতের ২০ জন সেনা কর্তা ও জওয়ান শহিদ হয়েছেন। তবে এতদিন হতাহতের কোনও হিসাবই দেয়নি বেজিং। এই প্রথমবার, চিনের পক্ষ থেকে ওই সংঘর্ষে তাদের সেনা সদস্যদের মৃত্যুর কথা স্বীকার করা হল। গত ১০ ফেব্রুয়ারি, রুশ সরকারি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল, গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষে ৪৫ জন চিনা সেনা সদস্য নিহত হয়েছিল।

এতদিন মুখ বুজে থেকে হঠাৎ গালওয়ান উপত্যকায় নিহত চিনা সেনাদের নিয়ে মুখ খুলল বেজিং? কুটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে চিন রুশ ও অন্যান্য বিদেশি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যকে 'বিভ্রান্তিমূলক' বলে খারিজ করতে চাইছে। তারা প্রমাণ করতে চাইছে ওই সংঘর্ষে চিনের থেকে ভারতেরই বেশি ক্ষতি হয়েছিল। একই সঙ্গে সংঘর্ষ ভারতীয় পক্ষ থেকেই শুরু করা হয়েছিল, এমনটাই আন্তর্জাতিক মহলে প্রমাণ করতে চাইছে তারা।