সংক্ষিপ্ত

অরুণাচল প্রদেশের (Arunachal Pradesh) ১৫ টি স্থানের নাম পরিবর্তন করে নিজেদের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করল চিন (China)। তবে, এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে, অরুণাচলকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলেছে বিদেশ মন্ত্রক।  
 

লাদাখের পর এবার ধীরে ধীরে বেজিং হাত বাড়াতে শুরু করল ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য অরুণাচল প্রদেশের (Arunachal Pradesh) দিকে। বৃহস্পতিবার, চিন সরকারের পক্ষ থেকে অরুণাচল প্রদেশের ১৫ টি স্থানের নাম পরিবর্তন করে, নিজেদের সরকারি মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করেছে। চিনের (China) নাগরিক বিষয়ক মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, চিনা মানচিত্রে ব্যবহারের জন্য তারা অরুণাচল প্রদেশের ১৫ টি স্থানের নাম 'স্ট্যান্ডার্ডাইজড' বা 'প্রমিত' করেছে। সেই সঙ্গে, চিনা সরকারি বিবৃতিতে অরুণাচল প্রদেশকে, চিনের জিজাং প্রদেশের (Xizang) দক্ষিণাঞ্চলের জাংনান (Zangnan) এলাকা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই চিনের এই পদক্ষেপকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, এইভাবে 'দেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ' অরুণাচল প্রদেশের মর্যাদা পরিবর্তন করা যাবে না।

বৃহস্পতিবার চিন অরুণাচল প্রদেশের  যে ১৫ টি স্থানের নাম পরিবর্তন করেছে, তার মধ্যে রয়েছে আটটি আবাসিক এলাকা, চারটি পাহাড়, দুটি নদী এবং একটি পার্বত্য গিরিপথ। এই বিষয়ে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী (Arindam Bagchi) বলেন, চিনের এই পদক্ষেপের বিষয়ে প্রতিবেদন পেয়েছেন তাঁরা। অরুণাচল প্রদেশের জায়গায় নাম নাম পরিবর্তনের চেষ্টা এই প্রথম করা হল না। ২০১৭ সালেও একবার চিন একই কাজ করেছিল। কিন্তু, অরুণাচল প্রদেশ সর্বদা ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল এবং থাকবে। অরুণাচল প্রদেশের কয়েকটি জায়গার 'উদ্ভাবিত নাম' বরাদ্দ করলেই এই সত্যিটা রাতারাতি পাল্টে যাবে না, এমনটাই দাবি তাঁর। 

দীর্ঘদিন ধরেই চিন অরুণাচল প্রদেশের প্রায় ৯০ হাজার কিলোমিটার এলাকাকে দক্ষিণ তিব্বত বলে দাবি করে। ২০১৭ সালে অরুণাচল প্রদেশের ছয়টি স্থানের জন্য চিনা নাম জারি করা হয়েছিল। এতদিন, বিষয়টি ততটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। কিন্তু, এবারের দাবিটা এল, পূর্ব লাদাখে,  প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বা এলএসি বরাবর লাদাখ সেক্টরে ভারতীয় এবং চিনা সৈন্যদের মধ্যে দীর্ঘ অচলাবস্থার পটভূমিতে। ২০২০ সালের মে মাস থেকে বছর ভর একের পর এক সীমান্ত সংঘর্ষে দুই দেশের সম্পর্ক সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। 

এরইমধ্যে, ২০২১-এর শেষে একটি নতুন সীমান্ত নিরাপত্তা আইন আনল তার। ২০২২-এর জানুয়ারি থেকেই এটি কার্যকর করা হবে। এই আইন পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA) এবং চিনা সরকারি নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে সীমান্ত এলাকায় আরও বেশি ক্ষমতা দেয়। অসামরিক নাগরিকদের প্রতিরক্ষার প্রথম লাইন হিসেবে ব্যবহার করে এবং পরিকাঠানোর উন্নয়ন ঘটিয়ে সীমান্ত এলাকায় আরও শহর গড়ে তোলাটাই বেজিং-এর লক্ষ্য। চিনের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন, সীমান্ত এলাকাগুলিতে 'জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষা'র জন্য, ভারতের সঙ্গে চলমান আঞ্চলিক উত্তেজনার মধ্যে, 'জাতীয় নিরাপত্তাকে আরও ভালভাবে বজায় রাখতে এবং সীমান্ত-সম্পর্কিত বিষয়গুলিকে আইনী স্তরে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে' বেজিং-এর গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।