সংক্ষিপ্ত

এর আগেও কর্নাটকের হিজাব বিতর্কের সময়ও প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মালালা। মেয়েদের হিজাব পরে স্কুলে না যেতে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও সরব হন তিনি। এবার ফের হিজাবের কারণে প্রাণ হারানো ইরানের ২২ বছরের তরুণীর মৃত্যুর বিচার চেয়ে সরব হলেন এই পাক নোবেল জয়ী। 
 

যাথাযথভাবে হিজাব না পরার অপরাধে ইরানের তরুণীরকে পিটিয়ে মারার ঘটনার প্রতিবাদে সরব পাক নোবেল জয়ী মালালা ইউসুফজাই। পোশাক পরার সিদ্ধান্ত যে একান্ত ব্যক্তিগত এবং সে বিষয় কেউ জোড় করলে তা যে কেবল অপরাধই নয় বরং ঘৃন্য তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন মালালা। গোটা ঘটনার নিন্দা করে মালালা টুইট করেছেন এই নোবেল জয়ী। 


ইরানের হিজাবকাণ্ডে স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া মালালার। এই প্রসঙ্গে টুইটারে তিনি লিখলেন,"একজন মহিলা কী পরবে সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার একমাত্র তাঁর নিজের। 


আমিও আগেও বলেছি, কেউ যদি আমায় মাথা ঢেকে রাখতে বলে আমি তার প্রতিবাদ করব। একইভাবে কেউ যদি আমায় মাথা থেকে ওড়না খুলে ফেলার জন্য জোর করে আমি তারও প্রতিবাদ করব। আমি মাহসা আমিনির হত্যার বিচার চাই।" 

 

উল্লেখ্য এর আগেও কর্নাটকের হিজাব বিতর্কের সময়ও প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মালালা। মেয়েদের হিজাব পরে স্কুলে না যেতে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও সরব হন তিনি। এবার ফের হিজাবের কারণে প্রাণ হারানো ইরানের ২২ বছরের তরুণীর মৃত্যুর বিচার চেয়ে সরব হলেন এই পাক নোবেল জয়ী। 

আরও পড়ুন - 'অত্যাচারী নিপাত যাক' প্রতিবাদের আগুনে জ্বলছে ইরান, চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে রাস্তায় রাস্তায় পুড়ছে হিজাব

প্রসঙ্গত, ঠিকভাবে হিজাব না পরার 'অপরাধে' ইরানের ২২ বছরের তরুণীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ইরানি পুলিশের বিরুদ্ধে। পরিবারের সঙ্গে তেহরানে বেড়াতে এসেছিলেন ২২ বছরের মাহসা আমিনি। যথাযথ ভাবে হিজাব না পরার 'অপরাধে' নীতি পুলিশের হাতে আক্রান্ত হন আমিনি। কয়েকজন স্থানীয় মহিলা আমিনির পথ আটকে হিজাব পরার জন্য বারবারই চাপ দিতে থাকে। রাজী না হওয়ায় বাড়তে থাকে বাগবিতন্ডা। ধীরে ধীরে তর্কাতর্কি ধস্তাধস্তির রূপ নেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ইরানি পুলিশ। হিসাব নেই দেখে তরুণীকে 'উচিত শিক্ষা' দিতে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আমিনিকে টানতে টানতে গাড়িতে তোলার পর পুলিশের গাড়িতেই তাঁকে বেধরক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। থানায় নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আমিনির পরিবার জানতে পারে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তরুণীকে। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই কোমায় চলে যান তরুণী। চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে ২২ বছরের আমিনি। পরিবারের অভিযোগ থানায় নিয়ে গিইয়ে বেধরক মারধর করা হয় আমিনিকে। হিজাব পরা শেখানোর নামে মেরে ভেঙে দেওয়া হয় মাথার খুলি। যদিও পুলিশের তরফ থেকে অস্বীকার করা হয়েছে যাবতীয় অভিযোগ। তাঁদের দাবি আগে থেকেই অসুস্থ ছিল তরুণী এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশের এই যুক্তি কোনওভাবেই মানতে রাজী নন আমিনির পরিবার। 

আরও পড়ুন - তীব্র ক্ষুধার জ্বালায় জ্বলছে বিশ্ব, প্রতি চার সেকেন্ডের মৃত্যু ১ জনের- সতর্ক করল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি

এরপরই, রানের রাস্তায় রাস্তায় জ্বলে ওঠে প্রতিবাদের আগুন। 'অত্যাচার'-এর বিরুদ্ধে পথে নেমেছে কাতারে কাতারে ইরানি মহিলা। প্রশাসনের চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে গণবিক্ষোভের আগুন দেখা গিয়েছে ইরানের রাস্তায়। সেই আগুনের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বজুড়ে। আমিনি হত্যার প্রতিবাদে প্রকাশ্য রাস্তায় হিজাব পুড়িয়ে, চুল কেটে বিক্ষোভ উত্তেজিত জনতা। মুহুর্মুহু উঠছে সরকার বিরোধী স্লোগান। তেহেরান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জমায়েত করেছেন শয় শয় ইরানি তরুণী। ইরানের ১৫টি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবাদের আঁচ। সমবেত জনতার ওপর চাঠিচার্জ করে ইরানি পুলিশ।  কাঁদানে গ্যাসের সেল ছোড়া এমনকী চলছে গুলিও। আমিনি মৃত্যুর প্রতিবাদে পথে নেমে ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৩১ জন। যদিও গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।এর আগে কর্নাটকের হিজাব বিতর্কের সময়ও প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মালালা। মেয়েদের হিজাব পরে স্কুলে না যেতে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও সরব হন তিনি। এবার ফের হিজাবের কারণে প্রাণ হারানো ইরানের ২২ বছরের তরুণীর মৃত্যুর বিচার চেয়ে সরব হলেন এই পাক নোবেল জয়ী।