সংক্ষিপ্ত

এবার যুদ্ধ বিরতি চেয়ে খোদ রাশিয়ান টিভি চ্যানেলের এক অভিনব কান্ডকারখানায় নড়েচড়ে বসেছে গোটা দুনিয়া। সোমবার রাশিয়ার একটি জনপ্রিয় টিভি চ্যানেলে যখন খবর সম্প্রচার করা হচ্ছিল তখন সেই টিভি চ্যানেলের এডিটর মারিনা অভসায়ানিকোভা ঘটালেন এক উদ্ভট কান্ড। বুলেটিন চলাকালীনই সঞ্চালকের পিছনে প্ল্যাকার্ড হাতে হঠাৎ করে আবির্ভাব হয় তাঁর। সেখানে ইংরাজি লেখা লাইনগুলোর অর্থ হল এবার যুদ্ধ বন্ধ হোক। উল্লখ্য, রাশিয়ার প্রথম সারির নিউজ চ্যানেল ওয়ানের এডিটর  মারিনা অভসায়ানিকোভার ব্যানারে লেখা লেখা ছিল, যুদ্ধ বন্ধ করুন..আর যুদ্ধ নয়..আর প্রোপাগন্ডাতে মোটেই বিশ্বাস করা উচিত করা উচিত নয়।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ (Russia-Ukraine War) বিরতি চাইছে গোটা বিশ্ব। দুই দেশের যুদ্ধের আঁচ পড়েছে সর্বত্র। এবার যুদ্ধ বিরতি চেয়ে খোদ রাশিয়ান টিভি চ্যানেলের (Russian TV Channel)এক অভিনব কান্ডকারখানায় নড়েচড়ে বসেছে গোটা দুনিয়া। সোমবার রাশিয়ার একটি জনপ্রিয় টিভি চ্যানেলে যখন খবর সম্প্রচার করা হচ্ছিল তখন সেই টিভি চ্যানেলের এডিটর মারিনা অভসায়ানিকোভা (Marina Ovsyannikova) ঘটালেন এক উদ্ভট কান্ড। বুলেটিন চলাকালীনই সঞ্চালকের পিছনে প্ল্যাকার্ড হাতে হঠাৎ করে আবির্ভাব হয় তাঁর। সেখানে ইংরাজি লেখা লাইনগুলোর অর্থ হল এবার যুদ্ধ বন্ধ হোক। উল্লখ্য, রাশিয়ার প্রথম সারির নিউজ চ্যানেল ওয়ানের এডিটর  মারিনা অভসায়ানিকোভার ব্যানারে লেখা লেখা ছিল, যুদ্ধ বন্ধ করুন..আর যুদ্ধ নয়..আর প্রোপাগন্ডাতে মোটেই বিশ্বাস করা উচিত করা উচিত নয়। একজন চ্যানেল এডিটরের এই ধরনের উদ্যোগ বা কার্যকলাপ ঝড় তুলেছিল সোমবারের সন্ধ্যায় সম্প্রচারিত হওয়া সেই বুলেটিনে। 

রাশিয়ার চ্যানেল ওয়ানের এডিটর  মারিনা অভসায়ানিকোভার এই কার্যকলাপের পর বিভিন্ন মহল থেকে নেতিবাচক মন্তব্য পেশ করা হয়। তাঁকে স্ক্রিন থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য ভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করা হয়। বলা বাহুল্য, মারিনার বাবা একজন ইউক্রেনিয়ান অর্থাৎ ইউক্রেনের বাসিন্দা আর তাঁর মা একজন রাশিয়ান মহিলা। নিউজ রুমে যুদ্ধ বন্ধের প্রতিবাদে যে ভূমিকা নিয়েছিলেন তাঁর জন্য মারিনা অভসায়ানিকোভাকে গ্রেফতার করা হয়। সেই সঙ্গে রাশিয়ান সৈন্যবাহিনীকে অসম্মান করার জন্য তাঁকে অভিযুক্তও করা হবে। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দিকে অভিযোগের তীর তোলেন তিনি। তার আগে অবশ্য নিজের এই সুর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে নিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ইউক্রেনে যা ঘটছে তা একটি অপরাধ এবং রাশিয়া আগ্রাসী। 

এডিটর  মারিনা অভসায়ানিকোভা আরো বলেন, সেই আগ্রাসনের দায় শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির বিবেকের উপর বর্তায়। আর সেই ব্যক্তি হলেন ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর বাবা একজন ইউক্রেনিয়ান বা ইউক্রেনের বাসিন্দা। আর মা রাশিয়ান। তাই তাঁরা কখনই শত্রু ছিল না। নিজের গলার নেকলেসটি দেখিয়ে বলেন, এটি রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ করার প্রতীক বা সিম্বল। এই যুদ্ধ বন্ধ হলে ফের দুই দেশের পুনর্মিলন ঘটতে পারে বলেও মত প্রকাশ করেছেন তিনি। নিজের ভাগ্যক দোষারোপ করে বলেছেন, দুর্ভাগ্যবসত বিগত কয়েক বছরে রাশিয়ান চ্যানেল ওয়ানে কাজ করছেন এবং সেই সঙ্গে ক্রিমলিন প্রোপাগণ্ডার প্রচারে কাজ করেছেন। আর সেই কাজের সঙ্গে এখন লজ্জায় তাঁর মাথা নীচু হয়ে যাচ্ছে। সই সময় ক্রিমলিনের প্রচারে যে কথা গুলো বলেছিলেন সেগুলো আজ সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে গেল। সেই সঙ্গে রাশিয়ার মানুষদের জোম্বিফিকেশনের জন্য অনুমতি দেওয়ার জন্য আজ লজ্জিত। 

২০১৪ সালে যখন ধীরে ধীরে পরিস্থিতি অশান্ত হচ্ছিল তখন সকলে শান্ত ছিল। সেই সময় যখন ক্রেমলিন নাভালনিকে বিষিয়ে তুলেছিল সেই সময় প্রতিবাদের ঝড় তোলা হয় নি। কেবল এই অমানবিক শাসনটাই দেখেছিল রাশিয়া। আর আজ তার ফলস্বরুপ গোটা বিশ্ব আমাদের থেকে তাঁদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, আগামী দশ প্রজন্ম রাশিয়ার এই যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য লজ্জা বোধ করবে। রাশিয়ার মানুষরা যথেষ্ট বুদ্ধিদীপ্ত। আর সেই বুদ্ধির জেরেই সব কিছু বন্ধ করা সম্ভব। সকলকে এই যুদ্ধের জন্য সুর চরানোর আবেদন করেছেন এডিটর  মারিনা অভসায়ানিকোভা। তিনি বলেন ভয় না পেয়ে প্রতিবাদ করতে। প্রতিবাদ করলে কেও তাঁদের জেলে পুড়ে দিতে পারবে না। বলা বাহুল্য, সোমবার নিজের ফেসবুক প্রোফাইলের ছবি পাল্টে ফেলেছেন। মনে করা হচ্ছে যে সময় তিনি এই ভিডিওটি রেকর্ড করেছেন সেই সময়ই প্রোফাইলের ছবিও বদলে ফেলেছেন। 

রাশিয়ান সংবাদপত্র নোভায়া অভসায়ানিকোভার একটি ব্লার করা ছবির সঙ্গে খবরটি প্রকাশ করেছে। সেন্সরশিপের নিয়মের জন্যই ছবি ব্লার করে প্রকাশ করা হয়েছে। রাশিয়ার যুদ্ধের প্রতিবাদ করার জন্য রাশিয়ান পুলিশ প্রায় ১৪ হাজার ৯১১ জনকে গ্রেফতার করেছেন। যুদ্ধবিরোধী ৮০০ জন বিক্ষোভকারীকে রাশিয়ান পুলিশ সোমবার গ্রেপ্তার করেছে। এক মহিলা যুদ্ধবিরোধীকে যখন পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তিনি সুর চড়িয়ে বলছিলেন, যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই।