সংক্ষিপ্ত
- নিজেকে অবিরত পরিবর্তন করে চলেছে করোনা ভাইরাস
- নতুন করোনা ভাইরাস বাতাসে ভাসতে সক্ষম
- মার্কিন গবেষণায় প্রকাশ পেল চাঞ্চল্যকর তথ্য
- করোনা এড়াতে ৩ থেকে ৬.৫ ফুট দূরত্ব আর নয় নিরাপদ
গোটা বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক তৈরি করেছে করোনা ভাইরাস। পৃথিবীর প্রায় সব প্রান্তেই ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। দিনে দিনে যেমন করোনা সংক্রমণের পরিমান বাড়ছে তেমনি নিজেকে অবিরত পরিবর্তন করে চলেছে ভাইরাসটি। এতদিন করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে আক্রান্তের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলছিলেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে আরও ভয় ধরানো তথ্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশন ডিজিজের একদল চিকিৎসক এই গবেষণা সম্পন্ন করেছেন। তাতেই জানা যাচ্ছে, নতুন করোনা ভাইরাস বাতাসে কয়েক ঘণ্টা ভেসে থাকতে পারে।
গত বছর ডিসেম্বরে চিনের উহানে প্রথম করোনা সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়। তারপর থেকেই চিনের বিজ্ঞানীরা এই নতুন ভাইরাসটিকে নিয়ে পরীক্ষা-নিরিক্ষা চালিয়ে চলেছেন। সম্প্রতি চিনের এক সংবাদপত্রে করোনা ভাইরাস নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তাতে দাবি করা হয়, চিনের সরকারি উদ্যোগে সম্পন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে নতুন করোনা ভাইরাস বাতাসে ৩০ মিনিট পর্যন্ত ভেসে থাকতে পারে। শুধু তাই নয় ভাইরাসটি ৪.৫ মিটার বা ১৪.৭ ফুট পর্যন্ত চলাচলও করতে পারে। গবেষকরা জানাচ্ছেন, শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে নির্গত হাওয়ার পর ভাইরাসটি কিছু বস্তু যেমন প্লাস্টিক কিংবা স্টেইনলেস স্টিলের গায়ে কয়েকদিন পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে। স্পর্শের মাধ্যমে তখন এটি অন্যের শরীরে চলে যেতে পারে। তাছাড়া কেউ ওই বস্তু গুলিতে হাত রাখার পর নিজের নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ করলে তাঁরও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
ভাইরাসটি কতোক্ষণ সক্রিয় থাকবে, তা নির্ভর করছে বস্তুর ধরন ও তাপমাত্রার ওপর। প্রায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ভাইরাসটি কাঁচ, কাপড়, ধাতু, প্লাস্টিক ও কাগজের ওপর দুই থেকে তিন দিন টিকে থাকতে পারে। চীনের হুনান প্রদেশের সরকারি গবেষকদের এই গবেষণার ফল এরআগে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যবিদদের দেওয়া মানুষ থেকে মানুষের নিরাপদ দূরত্বে তিন থেকে সাড়ে ছয় ফুট থাকার পরামর্শকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: গরম ও আর্দ্রতা কোনও কিছুতেই কাবু হবে না কোভিড-১৯, উদ্বেগ বাড়িয়ে জানিয়ে দিল 'হু'
মানুষের মল বা শারীরবৃত্তিয় তরলে করোনা ভাইরাস পাঁচ দিনেরও বেশি টিকে থাকতে পারে জানিয়েছেন গবেষকরা। ভাইরাসটি থেকে রক্ষা পেতে ঘন ঘন হাত ধোয়া ও মাস্ক পরার কোন বিকল্প নেই বলেও সতর্ক করেছেন তারা। জনাকীর্ণ স্থানে মাস্ক পরে থাকার পরামর্শই দিচ্ছেন গবেষকরা। সংক্রমণের ৫ দিন পর প্রকাশ পেতে পারে লক্ষণ। অন্য একটি গবেষণায় আবার দাবি করা হয়েছে আক্রান্ত হওয়ার পাঁচ দিন পর থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিপূর্ণ লক্ষণ প্রকাশ পাবে।
এর মধ্যেই বুধবার এনআইএআইডি চিকিৎসক দলের নতুন গবেষণা প্রকাশ পেল। যেখানে ভাইরাসটির অনুলিপি পেতে আক্রান্ত ব্যক্তি কফ ও স্পর্শ করা জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন গবেষকরা। এক্ষেত্রে গবেষকরা এমন ডিভাইস ব্যবহার করেছেন যা কাশি বা হাঁচিতে তৈরি মাইক্রোস্কোপিক ফোঁটাগুলো নকল করতে পারে।
আরও পড়ুন: কোন ব্লাড গ্রুপে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি, গবেষণায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
নতুন এই গবেষণায় দেখা গেছে, যখন কেউ কাশি বা হাঁচি দেয় তখন তাদের কফের মাধ্যমে ভাইরাস বের হয় এবং তা কার্যকরভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় বাতাসে এই ভাইরাস কমপক্ষে তিন ঘণ্টা ভেসে থাকতে পারে। গবেষকরা প্লাস্টিক এবং স্টেইনলেস স্টিলে তিন দিন পরেও করোনা ভাইরাস শনাক্ত করতে পেরেছেন। কিন্তু, কার্ডবোর্ডে ২৪ ঘণ্টা পরে এই ভাইরাস কার্যকর ছিল না। তামার উপর ভাইরাস নিষ্ক্রিয় হতে ৪ ঘণ্টা সময় নিয়েছে।