সংক্ষিপ্ত
শ্রীলঙ্কায় গণবিক্ষোভ ক্রমশই জটিল আকার নিচ্ছে। সশস্ত্র গণবিদ্রোহ এখনও পর্যন্ত পরিলক্ষিত না হলেও গণরোষের তীব্র আগুনে পুড়ছে কলম্বো থেকে শুরু করে শ্রীলঙ্কার অধিকাংশ শহর। এই মুহূর্তে সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকলেও এই গণবিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণে তারা কতটা সক্ষম হবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি। গণবিদ্রোহের রোষ এতটাই ভয়ানক হয়ে উঠেছে যে কোনও পরিস্থিতিতে তা আরও বেশি হিংসাত্মক হয়ে ওঠার আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে যে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন সেই খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল। যার জেরে বুধবার সকাল থেকেই কলম্বো-তে প্রাইমমিনিস্টারের বাসভবনে ঢোকার চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা। হাজার হাজার মানুষ প্রাইমমিনিস্টারের আবাসের প্রাচীরের উপরেও উঠে পড়েন। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ানক হয়ে যায় যে বিক্ষোভকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনীকে টিয়ারগ্যাল চালাতে হয়। এমন এক পরিস্থিতির মধ্যেই খবর আসে যে শ্রীলঙ্কার প্রাইম মিনিস্টারের দফতর থেকেও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা লাগু হয়েছিল। এবার সামগ্রিক পরিস্থিতির উপরেই জরুরি অবস্থা লাগু করা হয়েছে।
প্রাইম মিনিস্টার রনিল বিক্রমাসিংঘে বুধবার সকালে দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার সঙ্গে পশ্চিমাংশে কারফিউ জারির নির্দেশ দেন। কারণ, রাজাপক্ষের দেশ ছেড়ে পালানোর খবর চাউর হতেই বিক্ষোভকারীরা তাদের বিক্ষোভের মাত্রা বাড়াতে থাকে। কলম্বোর রাস্তায় রাস্তায় দলে দলে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়। এমনকী প্রাইম মিনিস্টারের সরকারি আবাসের প্রাচীর টপকেও ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা। দিন কয়েক আগেই এই একই কায়দায় বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্সিয়াল প্য়ালেসে ঢুকে পুরো প্রাসাদ তছনছ করে দিয়েছিল।
কারফিউ ভেঙে যারা বাইরে বের হবে এবং দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করবে, তাদের গ্রেফতার করারও নির্দেশ দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রাইম মিনিস্টার রনিল বিক্রমাসিংঘে। বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে প্রাইম মিনিস্টারের বাড়ির চারপাশে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দেখলেই কাঁদানে গ্যাস দিয়ে তাদের পিছু হঠতে বাধ্য করছে সেনাবাহিনী। এদিকে, শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রাক্তন এক পরামর্শদাতা জানিয়েছেন, অবিলম্বে প্রাইম মিনিস্টারেও পদত্যাগ করা উচিত। কারণ, সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট যদি পদত্যাগ করেন তাহলে প্রাইম মিনিস্টারকেও সেই জায়গা নিতে হয়। কিন্তু, এখানে দেশবাসী চাইছে যে প্রেসিডেন্ট ও প্রাইম মিনিস্টার পদত্যাগ করুক। যার জেরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে, সেনাবাহিনীও নেমে পড়েছে। এর জন্য প্রাইম মিনিস্টারকে এখন পদ ছাড়তে হবে বলে মনে করেন এই প্রাক্তন নিরাপত্তা উপদেষ্টা।