সংক্ষিপ্ত
- মাত্র সতেরো বছর বয়সেই স্বেচ্ছামৃত্যু বাছল নোয়া পোথোভেন
- শৈশবে ধর্ষণের শিকার হয় সে
- মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তি পেতেই সিদ্ধান্ত
শৈশবই ধর্ষিত হতে হয়েছিল তাকে। সেই মানসিক যন্ত্রণা থেকেই গ্রাস করেছিল অবসাদ। আর তা থেকে নিষ্কৃতি পেতেই শেষ পর্যন্ত মাত্র সতেরো বছর বয়সেই স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ বেছে নিল নোয়া পোথোবেন।
নেদারল্যান্ডসের এই কিশোরীর স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনে সাড়া দিয়েছে সেদেশের সরকার। কারণ নেদারল্যান্ডসে স্বেচ্ছামৃত্যুর আইনি স্বীকৃতি রয়েছে। শেষ পর্যন্ত সরকারি অনুমোদন পাওয়ার পরে রবিবার একটি হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে নোয়া।
ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর থেকেই তীব্র অবসাদ গ্রাস করেছিল তাকে। অবসাদ কাটানোর জন্য নিজের লড়াই নিয়ে বিখ্যাত একটি বইও লিখে ফেলেছিল নোয়া। 'উইনিং অর লার্নিং' নামে সেই বইটি পুরস্কৃতও হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য অবসাদের সঙ্গে যুদ্ধে জিততে পারেনি সতেরো বছরের মেয়েটি। মানসিক যন্ত্রণা সহ্যসীমা ছাড়ানোর পরে দেশের সরকারের কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানায় সে। মৃত্যুর আগের দিন ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টও করে নোয়া। সেখানে সে লেখে, "বছরের পর বছর যুদ্ধ চলার পরে সব শেষ হতে চলেছে। বেশ কিছুদিন ধরেই আমি খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। অনেক আলোচনার পরে শেষ পর্যন্ত আমাকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ আমার যন্ত্রণা সহ্যের সীমা অতিক্রম করেছে।"
নেদারল্যান্ডসের আইন অনুযায়ী, একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যদি ছাড়পত্র দিয়ে বলেন যে সত্যিই আবেদনকারীর যন্ত্রণা সহ্যের সীমা অতিক্রম করেছে, তবেই স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনে সাড়া দেওয়া হয়। এক্ষেত্রেও সেই নিয়ম মানা হয়েছে। যেহেতু নোয়া নিজে থেকেই আহার ত্যাগ করেছিল, সেই কারণে তাকে আর জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়নি।
যদিও নোয়ার যন্ত্রণার সঙ্গে সহমত পোষণ করলেও তার স্বেচ্ছা মৃত্যুর আবেদনে সাড়া দেওয়া নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যেই অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের মতে, মাত্র সতেরো বছর বয়সে কি নিজের জীবন নিয়ে চরম সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো পরিণতি হয়েছিল নোয়া? অনেকেই আবার নোয়ার ধর্ষণের জন্য দেশের সরকার এবং প্রশাসনকেই কাঠগড়ায় তুলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। আর এই সব বিতর্কের মধ্যেই অবসাদ থেকে মুক্তি পেয়ে চিরঘুমে চলে গেল নোয়া। মাত্র সতেরো বছর বয়সেই চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল সে। তার অসময়ে মৃত্যুর দায় কার, নোয়ার মতোই হয়তো সেই প্রশ্নেরও উত্তর চিরকালের মতো হারিয়ে যাবে।
সতর্কীকরণ- সাধারণত ধর্ষণের শিকার হওয়া নির্যাতিতাদের ছবি প্রকাশ করা না হলেও এ ক্ষেত্রে নির্যাতিতাই একাধিকবার নিজের পরিচিতি সামনে এনেছে। ধর্ষণের বিরুদ্ধে তার এই লড়াইকে কুর্ণিশ জানাতেই তার ছবি প্রকাশ করলাম আমরা।