সংক্ষিপ্ত
চরমপন্থীদের চাপে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল নির্মাণকাজ
ছয় মাস পর ফের অনুমতি দিল পাক সরকার
কৃষ্ণ মন্দির ঘিরে তৈরি হবে শ্মশানও
কেন হঠাৎ কৃষ্ণ-ভক্তি ইমরানের
চরমপন্থী ইসলামী গোষ্ঠীগুলির চাপ উপেক্ষা করেই ইসলামাবাদে হিন্দু মন্দির নির্মাণের অনুমতি দিল পাকিস্তান ইমরান খান সরকার। ছয় মাস আগে কট্টরপন্থীদের রক্তচক্ষুতে শ্রীকৃষ্ণের একটি মন্দির-এর নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সোমবার পাকিস্তানের রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। শুধু ওই মন্দিরই নয়, ওই মন্দিরটিকে কেন্দ্র করে থাকা শ্মশানের চারপাশে প্রাচীর নির্মাণের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। ওই প্রাচীরের উচ্চতা হতে হবে ৭ ফুট।
গত জুলাই মাসে ইসলামাবাদের কিছু কট্টরপন্থী আলেম মন্দির নির্মাণ বন্ধ করার জন্য রীতিমতো ইমরান খান সরকারকে হুমকি দিয়েছিল। সেইসময় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও আইনী জটিলতার দোহাই দিয়ে মন্দির ও শ্মশানের জন্য নির্ধারিত জমির চারদিকে প্রাচীর তৈরির কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে পাকিস্তানের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী পীর নূরুল হক কাদরী এই বিষয়ে পরামর্শের জন্য পাকিস্তানের রাষ্ট্র পরিচালিত আলেমদের কাউন্সিল - কাউন্সিল অব ইসলামিক ইডিওলজি বা সিআইআই-এর কাছে বিষয়টি পাঠিয়েছিলেন। এই কাউন্সিলই সরকারকে বিভিন্ন ধর্মীয় বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকে।
গত অক্টোবরে, সিআইআই জানিয়েছিল ইসলামাবাদ বা পাকিস্তানের অন্য কোথাওই মন্দির নির্মাণে কোনও সাংবিধানিক বা শরিয়তের বিধিনিষেধ নেই। পরিষদের ১৪ জন সদস্যই এই বিষয়ে একমত হয়েছিলেন। তাঁরা আরও জানিয়েছিলেন, দেশের অন্যান্য ধর্মীয় গোষ্ঠীর মতোই হিন্দুদেরও তাদের বিশ্বাস অনুসারে শেষকৃত্যের জন্য একটি বিশেষ স্থান পাওয়ার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। এই মন্দির ও শ্মশান নির্মাণের জন্য ইমরান সরকার-কে ১০০ কোটি টাকার তহবিল দেওয়ার বিষয়েও অনুমোদন দিয়েছে সিআইআই। পরিকল্পনা অনুসারে, ২০,০০০ বর্গফুট জমির উপর তৈরি হবে কৃষ্ণ মন্দিরটি। মন্দির কমপ্লেক্সে শ্মশান ছাড়াও আরও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের ব্যবস্থা ও পরিকাঠামো থাকবে।
এই মন্দিরের জন্য জমি বরাদ্দ করেছিলেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। ২০১৭ সালে হিন্দু পঞ্চায়েত-এর হাতে এই জমি তুলে দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি, ইমরান খান সরকারের বিরুদ্ধে নওয়াজ শরিফের নেতৃত্বে পাক বিরোধী দলগুলি আন্দোলন তীব্র করেছে। এই অবস্থায় কট্টরপন্থীদের কথা মেনে মন্দিরটির নির্মাণ বন্ধ করে দিলে বিরোধীদের হাতে আরও একটি অস্ত্র তুলে দেওয়া হতো। সেই ভাবনা থেকএই সম্ভবত শেষ পর্যন্ত মন্দির নির্মােণের অনুমতি দিল ইমরান খান প্রশাসন, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।