বালুচিস্তানে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। ৫১টি স্থানে ৭১টি আক্রমণের দাবি করেছে তারা। ভারত ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সমর্থন চেয়েছে বিএলএ।

পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদশে বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। তাদের দাবি যে তারা গত সপ্তাহে ৫১টি ভিন্ন স্থানে ৭১টি সুসংহত হামলা চালিয়েছে, যেখানে পাকিস্তানি সামরিক ও গোয়েন্দা ঘাঁটি, থানা, খনিজ পরিবহনকারী যানবাহন এবং প্রধান মহাসড়কের অবকাঠামোকে লক্ষ করা হয়েছে। এগুলো সবই অপারেশন হিরোফ-র অংশ জানানো হয়েছে।

হামলার নেপথ্য আছে বিশেষ উদ্দেশ্য। ১১ মে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন যে এই হামলাগুলো কেবল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্য নয়। ভবিষ্যতে সুসংগঠিত যুদ্ধের প্রস্তুতি জোরদার করার জন্যও। অন্যান্য সূত্রগুিলোও সাম্প্রতিক দিনগুলো বেলুচিস্তানে সহিংসতা বৃদ্ধির বিষয় নিশ্চিত করেছে। তবে ৭১টি হামলার সঠিক সংখ্যা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ এই দাবিগুলোর ওপর কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি জারি করেনি। কিছু প্রতিবেদনে এও উল্লেখ করা হয়েছে যে বিএলএল কালাত জেলার মাঙ্গোচার শহর দখল করেছে এবং খাজিনাই মহাসড়ক অবরোধ করেছে। যা এই অঞ্চলে উত্তেজনা তৈরি করেছে।

এদিকে আবার পাকিস্তানি সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির এই হামলাগুলো লঘু করে দেখা হচ্ছে। তাদের দাবি ১৫০০ জনের একটি ছোট গোষ্ঠার কারণে এমন সমস্যা হচ্ছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খাকান আব্বাসি বলেছেন, পাকিস্তানি সেনাবাহীনি প্রভাবিত অঞ্চলে স্যানিটাইজেশন অপারেশন শুরু করেছে তবে হামলার সম্পূর্ণ প্রভাবের মূল্যায়ন এখনও বাকি।

প্রসঙ্গত, বালোচ লিবারেশ আর্মি ২০০০-র দশকের শুরুতে আত্মপ্রকাশ করে এবং এটি বেলুচিস্তানকে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল। এরপর থেকে বালোচ সম্প্রদায়ে রাজনৈতিক প্রান্তিকতা, অর্থনৈতিক শোষণ ও সামরিক দমন-পীড়নের শিকার হয়েছে। বিএলএ-র বক্তব্য, তাদের লড়াই বলোচ জনগণের স্বাধীমতা ও তাদের সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণের জন্য। সংগঠনটি ভারত ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সমর্থন চেয়েছে। তাদের দাবি, পাকিস্তান একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র।

সে যাই হোক, বালুচিস্তানের এই পরিস্থিতি যে পাকিস্তানের জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

প্রসঙ্গ ৯ মে বিখ্যাত সাহিত্যিক মিল ইয়ার বালোচ সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘আমরা স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়েছি। ভারতের কাছে আবেদন, দিল্লিতে স্বাধীন বালোচিস্তানের দূতাবাস স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হোক। রাষ্ট্রসংঘের কাছেও আমার আর্জি জানাই, আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেব স্বীকৃতি দেওয়া হোক। সেই সঙ্গে শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠিয়ে পাক সেনাকে হঠানো হোক।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, দ্রুতই স্বাধীন বালোচিস্তানের সরকার গঠিত হবে। তার আগে প্রশাসন থেকে সরে যেতে হবে অ-বালোচদের।