সংক্ষিপ্ত
২৪শে ডিসেম্বর পাকিস্তানি বিমান হামলায় আফগানিস্তানে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। পাকিস্তানের এই পদক্ষেপের পর তাদের কড়া সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল।
পাকিস্তান সম্প্রতি আফগানিস্তানের পাকতিয়া প্রদেশে তাদের বিমান হামলাকে সঠিক বলে দাবি করেছে। পাকিস্তান সরকার জানিয়েছে, প্রয়োজনে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি) ঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্য করে আরও হামলা চালানো হবে। রাজনৈতিক বিষয়ক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বিশেষ সহকারী রানা সানাউল্লাহ সোমবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “যদি আফগানিস্তানের ভূমি পাকিস্তানের উপর হামলা চালাতে ব্যবহার করা হয়, তাহলে আমাদের এই অভিযান চালিয়ে যাওয়ার আইনি অধিকার আছে।”
২৪শে ডিসেম্বর ৪৬ জনের মৃত্যু
২৪শে ডিসেম্বর আফগানিস্তানের ভেতরে পাকিস্তানি বিমান হামলায় বেশ কয়েকজন মহিলা ও শিশুসহ ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এরপর বিশ্বজুড়ে পাকিস্তানের সমালোচনা হয় এবং তালিবান শাসনের পক্ষ থেকে তাদের কড়া সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। পাকিস্তানের অভিযোগ, আফগান তালিবান টিটিপি বিদ্রোহীদের নিরাপদ আশ্রয় দিচ্ছে এবং তাদের সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডে সহায়তা করছে। কাবুল সবসময় এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
আফগানিস্তানের উপ-বিদেশমন্ত্রীর সতর্কবার্তা
পাকিস্তানের এই হামলার পর আফগানিস্তানের উপ-বিদেশমন্ত্রী শের মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানে অনেক যোদ্ধা আছে যারা পারমাণবিক বোমার মতো কাজ করতে পারে। কাবুলে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখে তিনি বলেন, "ইসলামাবাদকে তাদের পশ্চিম প্রতিবেশীর ধৈর্যের পরীক্ষা নেওয়া উচিত নয়। আমাদের কাছে পারমাণবিক বোমার সমান ক্ষমতা সম্পন্ন যোদ্ধা আছে।" আফগান বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকী বলেছেন, 'আফগানরা তাদের ভূখণ্ডে হামলা ভুলবে না।' তিনি বলেছেন, পাকিস্তানি শাসকদের একটি সুষম নীতি গ্রহণ করা উচিত।’
উল্লেখ্য, ২৫শে ডিসেম্বর রাতের দিকে আফগানিস্তানের পাকতিয়া প্রদেশের বারমাল জেলায় এই হামলা চালায় পাক বায়ুসেনা। এদিন ব্যাপক বোমাবর্ষণের জেরে, অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি একাধিক মানুষ আহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে। ফলে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে পাক সেনার এই অতর্কিত হামলার পাল্টা জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তালিবানরাও। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২৪ ডিসেম্বর রাতে বারমালের অন্তত সাতটি গ্রামে এই হামলা চালানো হয়েছে। হামলার জেরে মৃত ১৫ জনের মধ্যে রয়েছেন একই পরিবারের ৫ জন সদস্য। মৃতদের বেশিরভাগই মহিলা এবং শিশু।
পাকিস্তানের ফাইটার জেটই এই হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। যদিও পাকিস্তানের তরফ থেকে এই হামলার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। এই হামলার পর স্বভাবিকভাবেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এদিকে দেশের মাটিতে এই হামলার পর পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ খুলেছে আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।