সংক্ষিপ্ত
জাফর এক্সপ্রেস হাইজ্যাক: বালোচ লিবারেশন আর্মির মজিদ ব্রিগেড জাফর এক্সপ্রেসকে হাইজ্যাক করেছে। এই আত্মঘাতী দল বালোচিস্তানকে পাকিস্তান থেকে মুক্ত করতে চায়। এই সংগঠন ও তাদের হামলা সম্পর্কে জানুন।
মজিদ ব্রিগেড কারা: ১১ মার্চ পাকিস্তান বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি হাইজ্যাক করে। কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী এই ট্রেনে প্রায় ৪৫০ জন যাত্রী ছিল, যাদের মধ্যে ২০০ জনের বেশি মানুষকে বন্দি করা হয়েছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানি সেনা ১৫০ জনের বেশি বন্দিদের উদ্ধার করেছে এবং অপারেশন এখনও চলছে। তবে এই ব্রিগেডকে সামলাতে গিয়ে পাকিস্তানি আর্মিরও হাত-পা ফুলছে। জানেন কি, এই পুরো ট্রেন অপহরণ করার পেছনে কোন ব্রিগেড রয়েছে, যারা বালোচ লিবারেশন আর্মির অধীনে কাজ করে?
পাক সেনাকে চ্যালেঞ্জ করা মজিদ ব্রিগেড আসলে কী?
মজিদ ব্রিগেড হল বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মির একটি বিশেষ আত্মঘাতী দল, যারা মরতে ভয় পায় না। এই দলের সদস্যরা আত্মঘাতী বোমার মতো কফিন পরে ঘোরে। মজিদ ব্রিগেডের মূল উদ্দেশ্য হল যে কোনও মূল্যে বালোচিস্তানকে পাকিস্তান থেকে মুক্ত করা। এক প্রকার তারা নিজেদের স্বাধীনতার জন্য লড়ছে। এই সংগঠন ২০১১ সালে তৈরি হয় এবং আব্দুল মজিদ বালোচের নামেই এর নাম 'মজিদ ব্রিগেড' রাখা হয়। এই মজিদ ব্রিগেডই পাকিস্তানে ট্রেন হাইজ্যাক করেছে।
আব্দুল মজিদ বালোচ কে?
মজিদ ব্রিগেডের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল মজিদ বালোচ ১৯৭৪ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলি ভুট্টোকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন। মজিদ ব্রিগেডের বিশেষত্ব হল, প্রথমে তারা গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ করত, কিন্তু এখন তারা আত্মঘাতী বোমা ব্যবহার করে।
মজিদ ব্রিগেডের চিনা অফিসারদের উপর আত্মঘাতী হামলা
আগস্ট, ২০১৮ সালে মজিদ ব্রিগেড ফের চর্চায় আসে, যখন বিএলএ কমান্ডার আসলাম বালোচের ছেলে রেহান বালোচ বালোচিস্তানে চিনা ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে যাওয়া বাসে হামলা চালায়। এই হামলার মাধ্যমে বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি পাকিস্তান-চিন জোটকে স্পষ্ট বার্তা দেয় যে তারা বালোচিস্তানে চিন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডরকে সফল হতে দেবে না।
মজিদ ব্রিগেডের কয়েকটি বড় হামলা
১- মজিদ ব্রিগেড এর আগে যে বড় হামলাগুলো করেছে, তার মধ্যে ২৯ জুন, ২০২০ সালে পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জে হামলা অন্যতম। গ্রেনেড ও অটোমেটিক বন্দুক নিয়ে ৪ জন যোদ্ধা এক্সচেঞ্জে আচমকা হামলা চালায়।
২- ২৭ এপ্রিল, ২০২২ সালে মজিদ ব্রিগেড করাচি ইউনিভার্সিটিতে হামলা চালায়। এই সময় এক মহিলা আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী চিনা নাগরিকদের নিয়ে যাওয়া একটি ভ্যানে হামলা চালায়, যেখানে ৩ জন চিনা নাগরিক সহ ৪ জনের প্রাণ যায়।
৩- ৯ নভেম্বর, ২০২৪ সালে মজিদ ব্রিগেড কোয়েটার রেলওয়ে স্টেশনে একটি আত্মঘাতী হামলা চালায়, যেখানে ৩২ জনের মৃত্যু হয় এবং ৬২ জন আহত হয়।
পুরো ঘটনাটি কী?
১১ মার্চ পাকিস্তান বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা করে সেটি অপহরণ করে। এই ট্রেনে পুলিশ ও সেনার জওয়ানরাও ছিল। বিএলএ ২১৪ জনকে বন্দি করে, যাদের মধ্যে ১৫০ জনের বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি, বিএলএ ৩০ জনের বেশি পাকিস্তানি জওয়ানকে খতম করেছে। বিএলএ পাকিস্তান সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা দিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে - বন্দিদের তখনই ছাড়া হবে যখন পাক সরকার তাদের বদলে পাকিস্তানের জেলে বন্দি বালোচ কর্মী ও যোদ্ধাদের নিঃশর্তভাবে মুক্তি দেবে।