সংক্ষিপ্ত
মণীষ দেব, সাথিয়া রেস্তোরাঁর মালিক। কিয়েভের ভারতীয় রেস্তোরাঁ হিসেবেই এতদিন পরিচিত ছিল এটি। কিন্তু যুদ্ধের কিয়েভে এটি আশ্রয়স্থল। বেঁচে থাকার ঠিকানা। এই সাত দিনে এই রেস্তোরাঁ প্রচুর মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে। ক্ষুধার্তকে এগিয়ে দিয়েছে খাবার আর জল।
সাত দিন আগেই ইউক্রেন (Ukraine) দখলের রণডঙ্কা বাজিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন (Vladimir Putin)। সেই থেকেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ( Russia-Ukraine War) অব্যাহত রয়েছে। এই অবস্থায় যুদ্ধ বিধ্বস্ত রাজধানী কিয়েভ। যুদ্ধের কিয়েভে মানবিকতার পরিচয় দিলেন এক ভারতীয়। তৈরি করেছেন এক অনন্য নজির। মণীষ দেবের (Manish Dev) সাথিয়া ( Saathiya) রেস্তোরাঁই এক কিয়েভে যুদ্ধ বিধ্বস্ত মানুষগুলির আশ্রয় পাওয়ার এক অন্যতম ঠিকানা।
মণীষ দেব, সাথিয়া রেস্তোরাঁর মালিক। কিয়েভের ভারতীয় রেস্তোরাঁ হিসেবেই এতদিন পরিচিত ছিল এটি। কিন্তু যুদ্ধের কিয়েভে এটি আশ্রয়স্থল। বেঁচে থাকার ঠিকানা। এই সাত দিনে এই রেস্তোরাঁ প্রচুর মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে। ক্ষুধার্তকে এগিয়ে দিয়েছে খাবার আর জল। মণীষ দেব জানিয়েছেন তিনি যতদিন পারবেন এভাবেই আশ্রয় আর খাবার সরবরাহ করবেন। রাশিয়ার বোমা ও গোলাগুলির হাত থেকে বাঁচার জন্য তাঁর রেস্তোরাঁর দরজা সর্বদা খোলা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মণীষ দেব জানিয়েছেন তাঁর রেস্তোরাঁতে গত কয়েক দিন কয়েক ডজন গর্ভাবতী মহিলা, সদ্যোজাত শিশু, ছাত্র, গৃহহীন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তিনি বয়স্ক ও অসুস্থদের থাকার ব্যবস্থা করেছেন। এখনও পর্যন্ত তিনি ১৩২ জন মানুষকে আশ্রয় ও খাবার দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন।
মণীষ দেব ২০২১ সালে গুজরাটের ভাদোদরা থেকে ইউক্রেনে আসেন। সেখানেই এই রেস্তোরাঁটি খোলেন। তাঁর ক্রেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিল কিয়েভের ভারতীয় শিক্ষার্থীরা। ইউক্রেনের ভারতীয় শিক্ষার্থীদের কাছেও পৌঁছে গিয়েছিল এই রেস্তোরাঁরা নাম। মাত্র এক বছরেই প্রবল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল সাথিয়া। ভারতীয় সংস্কৃতি ইউক্রেনে পৌঁছে দিতেই তার এই উদ্যোগ বলেও তিনি জানিয়েছেন।
কিয়েভের বোগোমেলেট ন্যাশানাল মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিরি আন্তর্জাতিক ছাত্রদের হোস্টেলের কাছেই মণীষের সাথিয়া রেস্তোরাঁটি রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন এতদিন সবকিছুই সুষ্ঠুভাবে চলছিল। কিন্তু রাশিয়ার আক্রমণ সবকিছু বিপর্যস্ত হয়ে গেছে।
রাশিয়ার সেনার হামলায় বিপর্যস্ত কিয়েভ। প্রচুর মানুষ প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয়ের সন্ধানে পথে নেমেছেন। তখনই তিনি তাদের জন্য রেস্তোরাঁর দরজা খুলে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। রেস্তোরাঁর বেসমেন্টে দরজাও তিনি খুলে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর মতে এমন অবস্থায় সাহায্য করা জরুরি বলেই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।
মণীষ দেবের আশ্রয়ে রয়েছে প্রচুর পড়ুয়া। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও জানিয়েছেন যাঁদের আশ্রয় আর খাবারের প্রয়োজন রয়েছে তারা যেন সাথিয়া-তে আসেন। ইউক্রেনের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন মণীষ দেব তাঁদের সাহায্য করছে। তাঁদের আশ্রয় দিয়েছে। খাবার ও জলও দিয়েছে। মণীষ ও তাঁর কর্মীরা অতিথিদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন এই যুদ্ধের আবহে তিনি প্রথম ভারতীয় মশলাদার খাবার খেলেন। তাঁর গর্ভাবতী বন্ধুর জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
মণীষ জানিয়েছেন ভারতে তাঁর পরিবারের সদস্যরা যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। কিন্তু এই অবস্থায় তিনি কিছুতেই ইউক্রেন ছেড়ে যেতে রাজি নন। এখনও ইউক্রেনেই থাকবেন বলেও জানিয়েছেন। পরিস্থিতি যদি আরও খারাপ হয় তাহলেই তিনি ইউক্রেন ছেড়ে চলে যাবেন। তবে যাওয়ার আগে রেস্তোরাঁর চাবি দিয়ে যাবেন স্থানীয় যুদ্ধ বিধ্বস্ত মানুষদের জন্য।
ইউক্রেনের আগ্রাসনের 'শাস্তি', পুতিনকে একঘরে করতে বড় ঘোষণা বাইডেনের
দিশা সালিয়ানের মৃত্যু নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য, মুম্বই পুলিশের সমন নারায়ণ রানে ও ছেলের বিরুদ্ধে
প্রবল যুদ্ধ ইউক্রেনের খারকিভে, খারেসনর দখল রুশ সেনার হাতে বলে দাবি রাশিয়ার