সংক্ষিপ্ত
একমাস ধরে চলছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ (Ukraine-Russia Crisis), ভ্লাদিমির পুতিন কি ক্লান্ত? শান্তি চুক্তির খসড়া থেকে তাদের ৩টি বড় দাবিই সরিয়ে নিল মস্কো।
গত এক মাস ধরে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে 'বিশেষ সামরিক অভিযান' চালিয়ে কি ক্লান্ত হয়ে পড়ল পুতিনের রাশিয়া? মঙ্গলবার, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির চুক্তির খসড়ায় তাদের ৩টি প্রধান দাবিই বাদ দিল ক্রেমলিন। আর তারপরই বিশ্বজুড়ে সামরিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে দ্রুত আলচনা শুরু হয়ে গেল, তবে কি আর যুদ্ধ করতে চাইছেন না পুতিন, ইউক্রেনের তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়ে এখন দ্রুত যুদ্ধ শেষ করতে চাইছে মস্কো?
খসড়ায় নেই রাশিয়ার মূল দাবিগুলিই
ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, তুরস্কে দুই দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনার (Ukraine Russia Peace Talk) শুরুর আগে যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির খসড়া করা হয়েছে, তাতে রাশিয়ার তিনটি প্রধান দাবিরই উল্লেখ নেই। খসড়া চুক্তিতে রাশিয়া ইউক্রেনে নেতৃত্ব পরিবর্তনের কথা বলেনি। অর্থাৎ ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে রাখতে রাজি ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনকে 'অসামরিকীকরণ' করার দাবিও নেই খসড়ায়। অর্থাৎ, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী নিয়ে রাশিয়ার কোনও আপত্তি নেই। তৃতীয়ত, ইউক্রেনে রুশ ভাষার আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করারও কোনও উল্লেখ করা হয়নি।
রাশিয়ার নরম মনোভাব
অন্যদিকে, মঙ্গলবার ইস্তাম্বুলে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার পর, রাশিয়ার অনেকটাই সুর নরম করেছে। রাশিয়ার পক্ষে এই আলোচনায় অংশ নেওয়া মেডিনস্কি বলেন, ইউক্রেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের ইচ্ছার বিরুদ্ধে নয় রাশিয়া। তবে, সেনাবাহিনী দিয়ে জোরে করে ক্রিমিয়া ও ডনবাস এলাকা ছিনিয়ে নেওয়ার জেদ ছাড়তে হবে কিয়েভকে। তিনি আরও জানান, রাশিয়া ধীরে ধীরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও চেরনিগভ শহরে হামলা কমিয়ে দেবে। একই সময়ে, ইউক্রেনের কাছ থেকে তাদের নিরাপত্তা গ্যারান্টি দাবি করেছে রাশিয়া।
ক্লান্ত রুশ বাহিনী
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে একটি বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করেছিল রাশিয়া। প্রবল পরাক্রমী রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেন দাঁড়াতে পারবে না বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু, শহরের পর শহর ধ্বংস হলেও, ইউক্রেনিয়দের প্রতিরোধের সামনে রাশিয়াকেও কম অস্বস্তিতে পড়তে হয়নি। বিশেষ করে তাদের ট্যাঙ্ক বাহিনী এবং সাঁজোয়া গাড়ি বহরগুলির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্রেমলিনের পরিকল্পনামাফিক চলেনি এই যুদ্ধ। আর তাতেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছে রুশ বাহিনী এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
বিশ্বাস করছে না কিয়েভ
তবে, ইউক্রেনের কর্মকর্তারা রাশিয়ার যুদ্ধবিরির কথায় বিশেষ ভরসা করছেন না। তাঁরা বলছেন, রাশিয়া প্রতিদিনই তাদের কথা বদলাচ্ছে। কিয়েভের আশঙ্কা, শান্তি চুক্তির কথা বলে, রাশিয়া আসলে সময় কিনছে। এই ফাঁকে তারা যুদ্ধক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে পারে। তার জন্যই নানা কৌশলে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করা এড়িয়ে যাচ্ছে।