সংক্ষিপ্ত
আরও এক বিপর্যয়ের খবর এল ২০২০ সালে
এবার রাশিয়ার অম্বরনায়া নদীর জলের রঙ হঠাৎ লাল হয়ে গেল
অবশ্য এর পিছনে রয়েছে একটি দুর্ঘটনা
সেই দুর্ঘটনা অবশ্য ঘটেছে বিশ্বউষ্ণায়নের জন্য, এমনটাই দাবি
২০২০ সালে সম্ভবত ভালো খবর আসার আর কোনও সম্ভাবনাই নেই, বরং খারাপ খবরের তাড়া জমছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া বেশ কিছু ছবিতে দেখা যাচ্ছে আর্টিক সার্কেলের মধ্যে থাকা একটি নদীর জলের রঙ নীল থেকে পাল্টে একেবারে লাল হয়ে গিয়েছে। যেন নদীতে জলের বদলে বয়ে যাচ্ছে রেড ওয়াইন। এই অবস্থায় দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
না কোনও প্রাকৃতিক বা অতিপ্রাকৃতিক কারণে ওই নদীর জলের রঙ পাল্টে যায়নি। আসলে ওই অঞ্চলে একটি রুশ তেল সংস্থার একটি ট্য়াঙ্কার ফেটে গিয়ে প্রায় ২০০০০ টন ডিজেল মিশে গিয়েছে ওই নদীর জলে। জানা গিয়েছে গত ২৯ মে সাইবেরিয়ার নরিল্স্ক শহররের কাছে একটি একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানী ট্যাঙ্ক ফেটে ওই ডিজেল ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নিকেল এবং প্যালাডিয়াম উৎপাদক সংস্থা নরিলস্ক নিকেল সংস্থা ওই পাওয়ার প্ল্যান্টটি চালায়।
চলছে শোধনের কাজ
সবচেয়ে আশ্চর্যের ঘটনা, ২৯ মে ঘটনাটি ঘটলেও সংস্থার রুশ সরকার তা জানতে পারে ঘটনার দু'দিন পর। এই নিয়ে গত বুধবার এক ভিডিও কনফারেন্সে পুতিন সংস্থার প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ওই পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রধান সের্গেই লিপিন-কে তিনি জিজ্ঞাসা করেন, সরকারি সংস্থাগুলিকে কেন ঘটনার দু'দিন পর এই সম্পর্কে জানানো হল? রেগে গিয়ে বলেন, 'আমদের কি সব খবর সোশ্যাল মিডিয়া থেকে জানতে হবে?'
এক বিবৃতিতে নরিল্স্ক নিকেল অবশ্য দাবি করেছে, ঘটনাটি 'যথা সময়ে এবং যথাযথ উপায়ে' জানানো হয়েছিল। তাদের দাবি এই দুর্ঘটনার কারণ বিশ্বউষ্ণায়ণ। তারা জানিয়েছে যে ওই বিদ্য়ুত কেন্দ্রটি একটি পারমাফ্রস্ট, অর্থাৎ দীর্ঘদিন ধরে জমাট থাকা বরফভূমির উপর নির্মিত। কিন্তু জলবায়ু উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার বরফ গলে যাচ্ছে। এই অবস্থায় ওই দিন জ্বালানী ট্যাঙ্ককে ধরে রাখা স্তম্ভগুলি ডুবে যায়, আর তাতেই ভেঙে পড়ে ট্যাঙ্কটি।
ওই অঞ্চলের গভর্নর আলেকজান্ডার উস প্রেসিডেন্ট পুতিনকে জানিয়েছেন, এই খণিজ তেল ছড়িয়ে পড়ে ইতিমধ্য়েই ৩৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকার জল দূষিত হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত অম্বরনায়া নদীর জল টকটকে লাল হয়ে গিয়েছে। ভ্লাদিমির পুতিন জরুরি অবস্থা জারি করে এই দুর্ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তারপরই ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের একজন ডিরেক্টরকে আটক করেছে রুশ পুলিশ।