সংক্ষিপ্ত
বৃহস্পতিবার গজনি শহর এল তালিবানদের দখলে। কাবুল তথা আফগানিস্তানের পতন, সম্ভবত আর কয়েক দিনের অপেক্ষা।
মার্কিন গোয়েন্দাদের সাম্প্রতিক নিরাপত্তা মূল্য়ায়ন বলেছে, আফগানিস্তানে তালিবান বাহিনী যেভাবে এগিয়ে চলেছে, তাতে রাজধানী কাবুলের পতন হতে পরে আগামী ৩ মাসের মধ্য়েই। আগে তারা বলেছিল ৬ থেকে ১২ মাস লাগতে পারে। অবশ্য কার্যক্ষেত্রে তালিবানদের গতি দেখে অনেকেই মনে করছেন, মাস নয়, কাবুল তথা আফগানিস্তানের পতন, সম্ভবত আর কয়েক দিনের অপেক্ষা। বৃহস্পতিবার যেমন আফগানিস্তানের গজনি শহর দখল করল তারা। সেই গজনি, যেখান থেকে সুলতান মাহমুদ ১৭ বার ভারত আক্রমণ করেছিল। লুঠ করেছিল একের পর এক মন্দির। কাবুল, আর মাত্র ১৫০ কিলোমিটার দূরে।
এদিন, সোশ্যাল মিডিয়ায় এক তালিবান মুখপাত্র প্রথম গজনি দখলের দাবি করে। পরে, গজনির প্রাদেশিক পরিষদের প্রধান নাসির আহমদ ফকিরিও, সরকারি বাহিনীর পতন স্বীকার করে নিয়েছেন। সংবাদ সংস্থা এএফপিকে তিনি জানিয়েছেন, গভর্নরের কার্যালয়, পুলিশ সদর দফতর এবং কারাগারের মতো শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে তালিবানরা। তবে শহরের কিছু অংশে এখনও আফগান বাহিনী প্রতিরোধ বজায় রেখেছে, সেইসব এলাকায় যুদ্ধ চলছে। কিন্তু, প্রাদেশিক রাজধানীটি যে প্রধাণত তালিবানদেরই দখলে তা পরিষ্কার করে দিয়েছেন তিনি।
এই নিয়ে, গত এক সপ্তাহের মধ্যে তালিবান যোদ্ধাদের হাতে এল দশম প্রাদেশিক রাজধানী। শুধু তাই নয়, কৌশলগত কারণেও গজনি দখলের গুরুত্ব অপরিসীম। এই শহরটির ঠিক পাশ দিয়ে গিয়েছে মহাগুরুত্বপূর্ণ কাবুল-কান্দাহার মহাসড়ক। এই রাস্তাটিই রাজধানী কাবুলের সঙ্গে দক্ষিণে আফগান সরকারি বাহিনীর শক্ত ঘাঁটিগুলির সংযোগপথ। কাজেই, এই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারলেই, দক্ষিণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে কাবুল। কাজেই, তালিবানরা কাবুলে হামলা করলে, দক্ষিণ থেকে সামরিক বা অন্য কোনওরকম সহায়তা পাবে না সরকারি বাহিনী।
আরও পড়ুন - Afghanistan - মাথা কাটা থেকে জোর করে বিয়ে, আফগানিস্তান জুড়ে এখন ভয়ঙ্কর তালিবানি কাহিনি
আরও পড়ুন - কোথা থেকে পায় এত যোদ্ধা, তালিবানদের কে দেয় টাকা - কীভাবে ২০ বছর ধরে যুদ্ধ করে গেল তারা
আরও পড়ুন - যৌনদাসী চেয়ে তালিবানি ফতোয়া - আফগান মহিলাদের জীবনে ফিরল অন্ধকার দিন, দেখুন ছবিতে ছবিতে
অন্যদিকে, উত্তরে কান্দাহার এবং পশ্চিমে হেরাতের পাশাপাশি দক্ষিণে একসময়ের তালেবানি শক্ত ঘাঁটি লস্কর গার-এও দুই পক্ষে তীব্র লড়াই চলছে। বুধবার রাতে তালিবানরা কান্দাহারের উচ্চ-সুরক্ষিত কারাগারটি দখল করার দাবি জানিয়েছে। এক বিবৃতি দিয়ে তারা বলেছে, 'দীর্ঘ অবরোধের পরে সম্পূর্ণ জয় এসেছে এবং শত শত বন্দিকে মুক্তি দিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে'। আসলে, কোনও শহরে তালিবানদের হামলার প্রথম নিশানাই থাকে কারাগারগুলি। বন্দি যোদ্ধাদের মুক্তি দিয়ে তাদের দল আরও ভারি করছে তারা। কাজেই, সত্যিই লস্কর গার-এর কারাগারের দখল তারা নিয়ে থাকলে, তা শহরটির জন্য অশুভ লক্ষণ, এমনটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।